‘হত্যা মামলার সাক্ষী হওয়ায়’ খুন হন আ. লীগ নেতা কামাল

চাচাত ভাইয়ের খুনের মামলায় সাক্ষী হওয়াসহ মামলা পরিচালনা করার কারণে হবিগঞ্জের আওয়ামী লীগ নেতা কামাল মিয়া খুন হয়েছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।

হবিগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 August 2020, 02:43 PM
Updated : 5 August 2020, 02:43 PM

বুধবার হবিগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্লাহ নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান।

নিহত কামাল মিয়া বানিয়াচং উপজেলার হলদারপুর গ্রামের মৃত মন্নাফ মিয়ার ছেলে। তিনি বড়ইউরি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।

গত ২২ জুলাই সন্ধ্যায় শিবগঞ্জ বাজার এলাকায় কামার মিয়াকে কুপিয়ে জখম করা হয়। পরে সিলেট এমএজি ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।

এই ঘটনায় দায়ের করা মামলায় বড়ইউরি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমানসহ ১৫ আসামিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।

মঙ্গলবার ও বুধবার তারা আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। এর আগে পুলিশের কাছেও তারা প্রাথমিকভাবে জবানবন্দি দিয়েছেন।     

জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার বলেন, ২০১৭ সালে কামাল মিয়ার চাচাত ভাই ইসলাম উদ্দিন খুন হন। এ খুনের মামলায় হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে হত্যাকাণ্ডটি হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়। নিহত কামাল মিয়া ওই মামলার একজন সাক্ষী এবং তিনি মামলাটি পরিচালনা করছিলেন।

“এ কারণে কামাল মিয়ার সঙ্গে ইউপি চেয়ারমম্যান হাবিবুর রহমানের বিরোধ সৃষ্টি হয়।”

এসপি মোহাম্মদ উল্লাহ বলেন, এর পরিপ্রেক্ষিতে ইউপি চেয়ারম্যমান তার সহযোগীদের নিয়ে শিবগঞ্জ বাজারে নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বসে কামাল মিয়াকে খুনের নকশা আঁকেন। কে হত্যাকাণ্ডে অংশ নেবে আর কে পাহারা দেবে সে দিকনির্দেশনাও চেয়ারম্যান নিজেই দেন।

হত্যার দিনের বিবরণে তিনি বলেন, ২২ জুলাই সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটে শিবগঞ্জ বাজারের পাশে হাবিবুর রহমানের নির্দেশে রফিক, ফরিদ, জুনেদ, রুমেল, এবাদুর, সাইফুল বিভিন্ন অস্ত্র নিয়ে কামালের পথরোধ করেন এবং তাকে কুপিয়ে জখম করেন। এ সময় পাহারাদারের দায়িত্ব পালন করেন ফরিদ, মধু মিয়া, পাভেল, আবিদ মিয়াসহ কয়েকজন।

তিনি বলেন, কামাল মিয়াকে কুপিয়ে পালিয়ে যায় দূর্বৃত্বরা। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সিলেট এমএজি ওসমানি মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

পুলিশ সুপার আরও জানান, কামাল মিয়া হত্যার ঘটনায় তার স্ত্রী রাজনা আক্তার বাদী হয়ে গত ২৫ জুলাই ২৮ জনের নাম উল্লেখ করে নবীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেছেন। চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমানসহ ১৫ আসামি কারাগারে রয়েছেন। এরা সবাই আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।

সংবাদ ব্রিফিংয়ে বানিয়াচং-আজমিরীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শেখ সেলিমসহ পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।