চকরিয়ায় বৃদ্ধকে বিবস্ত্র করে মারধর, বহিষ্কৃত যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

কক্সবাজারের চকরিয়ায় এক বৃদ্ধকে বিবস্ত্র করে মারধরের মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন স্থানীয় এক যুবলীগ নেতা, যাকে এ ঘটনার পর সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়।

কক্সবাজার প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 June 2020, 02:56 PM
Updated : 10 June 2020, 02:56 PM

বুধবার মহেশখালী উপজেলার শাপলাপুর ইউনিয়নের সাইটমারা থেকে ওই যুবককে গ্রেপ্তার করা হয় বলে চকরিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হাবিবুর রহমান জানান।

গ্রেপ্তার আনছুর আলম (৩৫) চকরিয়া উপজেলার ঢেমুশিয়া ইউনিয়নের ছয়কুড়িটিক্কা পাড়ার মৃত মনির উল্লাহর ছেলে। তিনি ঢেমুশিয়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি, যে পদ থেকে তাকে সম্প্রতি বহিষ্কার করা হয়েছে।

তার বিরুদ্ধে এলাকায় ডাকাতি, চাঁদাবাজি ও জবরদখলসহ নানা অভিযোগে চকরিয়া থানায় এক ডজন মামলা রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

নির্যাতনের শিকার বৃদ্ধ (৭২) ঢেমুশিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা।

এর আগে গত ৩ জুন চকরিয়ার বিভিন্ন এলাকা থেকে এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে মোহাম্মদ বেলাল, কায়ছার উদ্দিন ও মোহাম্মদ ফারুক নামের তিন জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

মামলার নথি থেকে জানা যায়, গত ২৪ মে ঢেমুশিয়া স্টেশন থেকে ঈদের কেনাকাটা শেষে ইজিবাইক (টমটম) যোগে বাড়ি ফেরার পথে গাড়ি থেকে নামিয়ে নির্জন স্থানে নিয়ে ওই বৃদ্ধকে বিবস্ত্র করে মারধর করেন ওয়ার্ড যুবলীগ সভাপতি আনছুর আলম। মারধরের সময় বৃদ্ধের পরনের লুঙ্গি ও গেঞ্জি টেনে ছিঁড়ে ফেলার পাশাপাশি অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়।

এ সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা কয়েকজন যুবক মারধরের দৃশ্যটি মোবাইলে ধারণ করেন। ঘটনাটি আশপাশে থাকা বেশকিছু যুবক প্রত্যক্ষ করলেও কেউ বৃদ্ধকে রক্ষায় এগিয়ে যায়নি।

এ ঘটনার ভিডিও চিত্র মঙ্গলবার (২ জুন) ফেইসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর নানা মহলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।

ঘটনার পর গত ৩১ মে রাতে নির্যাতনের শিকার বৃদ্ধের ছেলে বাদী হয়ে যুবলীগ নেতা আনছুর আলমসহ আটজনকে আসামি করে চকরিয়া থানায় মামলা করেন।

চকরিয়া থানার ওসি হাবিবুর বলেন, বুধবার ভোর রাতে মহেশখালীর শাপলাপুর ইউনিয়নের সাইটমারা এলাকায় একটি বাড়িতে আনছুর আলম আত্মগোপনে থাকার খবরে চকরিয়া থানা পুলিশের একটি দল অভিযান চালায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে আনছুর পালানোর চেষ্টা করে। পরে ধাওয়া দিয়ে পুলিশ গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।

"গ্রেপ্তার আনছুর আলম চকরিয়ার ঢেমুশিয়া ইউনিয়নের ছয়কুটিক্কা পাড়ারেএক বৃদ্ধকে বিবস্ত্র করে মারধর করার ঘটনার হোতা। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় তিনি এহাজারভুক্ত ২ নম্বর আসামি।”

ওসি বলেন, ওই বৃদ্ধকে নির্যাতনের ঘটনায় গত ৩১ মে তার ছেলে বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন। এতে ৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতেআরও ৪/৫ জনকে আসামি করা হয়।

"তদন্তের পর গত ৩ জুন মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ এর আগে আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে।”

এছাড়া মামলার এজাহারভুক্ত আসামিদের পাশাপাশি ভিডিও ফুটেজ দেখে ঘটনায় জড়িত অন্যদেরও গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে, বলেন হাবিবুর।

ওসি বলেন, “আনছুর আলম একজন চিহ্নিত ডাকাত ও সন্ত্রাসী। ডাকাতি, চাঁদাবাজি ও জবরদখলসহ নানা অভিযোগে তার বিরুদ্ধে ১ টি মামলা রয়েছে।”

চকরিয়া উপজেলা যুবলীগ সভাপতি কাউছার উদ্দিন কছির বলেন, আনছুর আলম একজন সুযোগ সন্ধানী এবং সংগঠনে অনুপ্রবেশকার। তার বিরুদ্ধে সম্প্রতি চাঁদাবাজি ও ডাকাতিসহ নানা অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। সংগঠনের দায়িত্বশীলরা তার অপকর্ম সম্পর্কে আগে অবহিত ছিলেন না।

“ঘটনাটি শোনার পরপরই আনছুরকে প্রাথমিক সদস্য পদসহ সংগঠন থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।”