পাবনায় ওসির বিরুদ্ধে ৪ ইউপি চেয়ারম্যানের কললিস্ট ফাঁসের অভিযোগ

পাবনার আমিনপুর থানার ওসি মাইনুদ্দিনের বিরুদ্ধে চারজন ইউপি চেয়ারম্যান রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তাদের মোবাইলফোনের কললিস্ট ফাঁসের অভিযোগ এনেছেন।

পাবনা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 June 2020, 03:50 PM
Updated : 2 June 2020, 03:50 PM

মঙ্গলবার দুপুরে এ বিষয়ে ঐ চার ইউপি চেয়ারম্যান স্বরাষ্ট্র সচিব, বাংলাদেশ পুলিশের আইজিপি, ডিআইজি রাজশাহী রেঞ্জ ও পাবনা জেলা প্রশাসকের কাছে এ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন।

অভিযোগ তদন্তে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাসসকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটিও করেছে জেলা পুলিশ।

পাবনার পুলিশ সুপার শেখ রফিকুল ইসলাম বলেন, “আমরা অভিযোগ পেয়েছি। গঠিত তদন্ত কমিটিকে সাত দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

“সত্যতা পাওয়া গেলে ওসির বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

এ অভিযোগ করেন, পাবনার বেড়া উপজেলার জাতসাখিনী ইউপি চেয়ারম্যান রেজাউল হক বাবু, মাসুমদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মিরোজ হোসেন, নতুন ভারেঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান এম এ রফিকুল্লাহ এবং রূপপুর ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হাশেম উজ্জ্বল।

লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, কোনো ফৌজদারি মামলা কিংবা আদালতের আদেশ ছাড়াই গত ২৯ মে মোবাইল সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এ চারজন ইউপি চেয়ারম্যানের মোবাইল ফোনের তিন মাসের কললিস্ট সংগ্রহ করেন আমিনপুর থানার ওসি মাইনুদ্দিন।

পরে তা পাবনা-২ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য আহমেদ ফিরোজ কবির, বেড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের অব্যহতিপ্রাপ্ত সভাপতি ও পৌর মেয়র আব্দুল বাতেনের কাছে তুলে দেন বলে তাদের অভিযোগ।

‘এই কললিস্ট’ পরে ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।

চেয়ারম্যানরা লিখিত অভিযোগে আরো বলেন, তারা চারজনই তাদের ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সভাপতি অথবা সম্পাদক। ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক যোগাযোগের স্পর্শকাতর গোপন তথ্য এভাবে সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ করায়, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা বিষয়টি নিয়ে নোংরামি করছে। সামাজিকভাবেও তাদের হেয় প্রতিপন্ন হতে হচ্ছে।

আদালতের আদেশ কিংবা কোনো ধরণের অনুমতি ছাড়া ওসি মাইনুদ্দিন ডিজিটাল নিরপত্তা আইনে ফৌজদারি অপরাধ করেছেন উল্লেখ করে তাকে প্রত্যাহার ও বিচারের আওতায় আনারও দাবি জানিয়েছেন এই  ইউপি চেয়ারম্যানরা।

মাসুমদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মিরোজ হোসেন বলেন, গত ১৩ এপ্রিল পাশ্ববর্তী ঢালারচর ইউপি চেয়ারম্যান কোরবান আলী সর্দার আমার ইউনিয়নের বাধের হাট এলাকায় ব্যক্তিগত কার্যালয়ের গুদাম থেকে ২২৯ বস্তা ত্রাণের চালসহ র‌্যাবের হাতে আটক হন। এ কারণে তাকে ১৪ এপ্রিল দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। পরে তাকে চেয়ারম্যান পদ থেকেও সাময়িক বহিষ্কার করে স্থানীয় সরকার বিভাগ।

“পাবনা-২ আসনের সংসদ সদস্য আহমেদ ফিরোজ কবীর এসব ঘটনায় আমাদের সম্পৃক্ততার অভিযোগ তুলে মিথ্যা প্রচারণা চালাতে থাকেন। সর্বশেষ, এমপি মহোদয় প্রভাব খাটিয়ে ওসিকে দিয়ে কললিস্ট তুলে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছেন।”

জাতসাখিনী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রেজাউল হক বাবু বলেন, “ত্রাণ চুরির ঘটনায় এমপি মহোদয়-এর নির্দেশে প্রথম থেকেই আমিনপুর থানার ওসি র‌্যাবের অভিযানের পেছনে আমরা দায়ী প্রমাণ করতে মরিয়া হয়ে ওঠেন।”

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আমিনপুর থানার ওসি এস এম মঈনুদ্দিন বলেন, এ ধরনের কোনো ঘটনার সাথে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নাই। চাইলেই কারো কল রেকর্ড লিস্ট সংগ্রহ করা যায় না।

এ কললিস্ট সংগ্রহের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করেছেন সংসদ সদস্য আহম্মেদ ফিরোজ কবিরও।