ঈদ জামাত শেষে কোলাকুলি-হাত মেলানোর যে রীতি মানুষে মানুষে সম্প্রতির নজির হয়ে আছে বহুযুগ ধরে, তা এবার ফিকে হয়েছে সংক্রমণের আতঙ্কে।
ভাইরাস থেকে বাঁচতে, অন্যকে বাঁচাতে দূরত্ব ছিল; তবু মানুষ এক কাতারে ঈদ জামাতে দাঁড়িয়ে হাত তুলে সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রাথর্না করেছেন মহামারী থেকে মুক্তির জন্য।
প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:
বিশ্ব মহামারী করোনাভাইরাস থেকে মুক্তির জন্য প্রার্থনা করা হয় বরিশালের ঈদ জামাতে।
নামাজ শুরুর আগে মুসল্লিদের সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কাতারে দাড়ানোর নির্দেশনা দেন মসজিদের খতিব নূরুর রহমান বেগ। মুসল্লিরা নির্দেশনা মেনে ঈদের নামাজ আদায় করেন। তাদের মুখে ছিল মাস্ক।
করোনাভাইরাসের সংক্রামণ এড়াতে দিনাজপুরের গোর-এ-শহীদ ময়দানে এবার ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়নি। সামাজির দূরত্ব বজায় রেখে জেলার মসজিদগুলো ঈদের নামাজ আদায় করেছেন মুসল্লিরা।
বাগেরহাট:
বাগেরহাটে ষাটগম্বুজ মসজিদে সোমবার সকাল সাড়ে ৭টায় ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেন মুসল্লিরা।
নামাজ শেষে সারিবদ্ধভাবে মসজিদ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় মুসল্লিরা একে অপরের সঙ্গে মুখে কুশল বিনিময় করেন। তবে করোভাইরাস সংক্রমণ এড়াতে কোলাকুলি কেউ করেন নি।
ষাটগম্বুজ মসজিদে বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশিদ, প্রশাসনের কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিরাও ঈদের নামাজ আদায় করেন।
মুসল্লিরা বলেন, এবারের ঈদে মনে আনন্দ নেই। নামাজ পড়তে হবে তাই পড়া, দেশে যেভাবে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে তা থেকে যেন সবাই মুক্তি পেতে পারে সেই দোয়াই করেছেন আল্লাহর কাছে।
নামাজ আদায় শেষে বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশিদ সাংবাদিকদের বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে যেন সবাই নামাজ আদায় করতে পারেন সেই ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল। মুসল্লিরাও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেছেন।
ময়মনসিংহে এবার প্রায় ১১ হাজার মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্যে ময়মনসিংহ নগরীর আঞ্জুমানে ঈদগাহ ময়দানে সকাল ৮টায় ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মধ্যেই সকালে মুসল্লিরা ঈদ জামাতে অংশ নিতে মসজিদে যান। করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে সংক্রমণ রোধে সবার মখে ছিল মাস্ক। মুসল্লিরা করোনাভাইরাসের মহামারী থেকে রক্ষায় মোনাজাত করেছেন।
রাজশাহী:
সরকারি নির্দেশনা মেনে রাজশাহীতে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল ৮ টায় নগরীর হযরত শাহ মখদুম (রহ.) দরগাহ মসজিদে। এছাড়া নগরীর সাহেববাজার বড় মসজিদে ও রাণীবাজার জামে মসজিদে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।
রাজশাহী সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ও রাজশাহী সদর আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা নিজ বাড়িতে নামাজ আদায় করেছেন। এছাড়াও রাজশাহীর অনেক ভবনের ছাদে ঈদ জামাতের আয়োজন করা হয়।
নেত্রকোণা:
নেত্রকোণায় সকাল থেকেই বৈরি আবহাওয়া উপেক্ষা করে মুসল্লিরা ঈদের জামাতে অংশ নিতে শহরের মোক্তারপাড়া জামে মসজিদে যান।
সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সকাল সাড়ে ৮টায় মসজিদে ঈদুল ফিতরের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এতে সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু, নেত্রকোণা পৌরসভার মেয়র নজরুল ইসলাম খান অংশ নেন।
নামাজ শেষে করোনাভাইরাস থেকে মুক্তি কামনায় মোনাজাত করা হয়।
শেরপুরে সকাল সাড়ে ৮টায় ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয় কালেক্টরেট জামে মসজিদে। জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাসহ সর্বস্তরের মানুষ সামাজিক দূরত্ব মেনে সেখানে নামাজ আদায় করেন।
এছাড়া সকাল সাড়ে ৮টা থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত শেরপুর টাউনের মাইসাহেবা জামে মসজিদ,এসআর জামে মসজিদ, খরমপুর জামে মসজিদ, শেরপুর সদর তহসিল অফিস জামে মসজিদ, তেরা বাজার জামে মসজিদসহ জেলার সব মসজিদে ঈদুল ফিতরের একাধিক জামাত অনুষ্ঠিত হয়।