ইটনার মৃগা ইউনিয়নের জয়সিদ্ধি হাটি গ্রামে গত বুধবার [২০ মে] এই ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় গ্রেপ্তার এক চাচা আদালতে ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন; আরেক চাচা পলাতক।
আদালতে পাঠানোর আগে মোহন মিয়া পুলিশের কাছে দেওয়া জবানবন্দিতে ঘটনার বিবরণ দেন বলে পরিদর্শক আহসান হাবীব জানান।
ঘটনার বিবরণে আহসান হাবীব বলেন, দুই বছর বয়সী নিহত এই শিশুর বাবা ও চাচারা চার ভাই। জয়সিদ্ধি হাটি গ্রামের মর্তুজ আলীর চার ছেলে হলেন নান্নু মিয়া, দুলাল মিয়া, জালাল মিয়া ও মোহন মিয়া। তাদের সঙ্গে বাড়ির রাস্তা নিয়ে প্রতিবেশী আব্দুর রহিমের পরিবারের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল।
আহসান হাবীব বলেন, সম্প্রতি জালাল মিয়া তার পুরনো বসতঘর ভেঙে নতুন করে একটি ঘর নির্মাণ করার উদ্যোগ নেন। ঘরের কাজ শুরুর পর গত বুধবার আব্দুর রহিম ও তার পক্ষের লোকজন এতে বাধা দেন। এ নিয়ে দুপক্ষের বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতি হয়।
পরিদর্শক হবীব বলেন, এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুলাল মিয়া ও মোহন মিয়া বাড়ির কোনো শিশুকে হত্যা করে আব্দুর রহিমদের উপর চাপানোর পরিকল্পনা করেন।
“পরিকল্পনা অনুযায়ী বুধবার [২০ মে] সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে একটি ঘরে ঘুমিয়ে থাকা জালাল মিয়ার ওই মেয়েকে (২) মোহন মিয়া তুলে এনে মাটিতে সজোরে আছড়ে ফেলেন। শিশুটি আর্তচিৎকার দিয়ে ওঠলে চাচা দুলাল মিয়া (৪০) ইট দিয়ে শিশুটির মাথায় জোরে আঘাত করেন। এরপর মৃত্যু নিশ্চিত করতে মোহন মিয়া শিশুটির বুকের ডান পাশ দিয়ে টেঁটাবিদ্ধ করেন।”
পরিদর্শক হাবীব আরও বলেন, এরপর দুলাল ও মোহন চিৎকার ও শোরগোল শুরু করেন এবং এক পর্যায়ে প্রতিপক্ষের উপর চড়াও হন।
খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে; পরদিন ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায় বলে হাবীব জানান।
পরিদর্শক হাবীব আরও জানান, পুলিশের তদন্তে এই দুই ভাইয়ের সংশ্লিষ্টতা বেরিয়ে আসে। পরে শুক্রবার রাত ১২টার দিকে মৃগা ইউনিয়নের লাইমপাশা বাজারে অভিযান চালিয়ে মোহন মিয়াকে আটক করে পুলিশ। শনিবার তাকে আদালতে হাজির করা হয়।
ইটনা থানার ওসি মোহাম্মদ মুর্শেদ জামান জানান, পূর্ব বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে এমন অমানবিক নৃশংস ঘটনাটি ঘটেছে। এ ঘটনায় নিহত শিশুর মা বাদী হয়ে শুক্রবার দুলাল মিয়া ও মোহন মিয়াকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। পলাতক আসামি দুলাল মিয়াকে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের অভিযান চলছে।