গাইবান্ধায় জলমহাল ইজারা: ‘অনিয়মের’ প্রতিবাদে মানববন্ধন

গাইবান্ধায় ‘প্রকৃত মৎস্যজীবীদের’ সর্বোচ্চ দামে খাস পুকুর ও সরকারি জলমহাল ইজারা না দিয়ে নামমাত্র মূল্যে ‘অমৎস্যজীবীদের’ ইজারা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

গাইবান্ধা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 May 2020, 01:01 PM
Updated : 7 May 2020, 01:01 PM

বৃহস্পতিবার সকালে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সামনের সড়কে এর প্রতিবাদে মানববন্ধন করে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মৎস্যজীবী সমবায় সমিতিগুলো।

এ সময় বক্তারা অভিযোগ তোলেন, কামদিয়া ইউনিয়নের গোংরাগাড়ী গ্রামের ‘দুখু পুকুর’ প্রকৃত মৎস্যজীবীদের ১৩ লাখ টাকায় না দিয়ে মাত্র ২ লাখ টাকায় এবং একই গ্রামের ‘সুখু পুকুর’ ১৩ লাখ ৭০ হাজার টাকায়  না দিয়ে মাত্র ১ লাখ ৬০ হাজার টাকায় অমৎস্যজীবী সমিতিকে গোপনে ইজারা দেওয়া হয়েছে।

এ রকম আরও বেশি কিছু পুকুরের ক্ষেত্রে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ তুলে বক্তারা বলেন, এতে এক দিকে সরকার প্রচুর রাজস্ব বঞ্চিত হয়েছে এবং অন্যদিকে ‘প্রকৃত মৎস্যজীবীরা’ বঞ্চিত হয়েছে।

বক্তারা জানান, তিন বছরের জন্য ৭৫টি সরকারি পুকুরের ইজারা দিতে গত ১০ মার্চ ইজারা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এতে ১২ মার্চ থেকে ২৩ মার্চ আবেদনপত্র বিক্রি, ২৪ মার্চ আবেদনপত্র জমা ও একই দিন তা (আবেদনপত্র) খোলা ও ঘোষণা করা হবে বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। কিন্তু ২৪ মার্চ ইজারা ঘোষণা না করে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার ২৩টি প্রকৃত মৎস্যজীবী সমিতিকে বঞ্চিত করে গত ৫ এপ্রিল ‘গোপনে’ ১৮টি অমৎস্যজীবী সমিতিকে ৬০টি পুকুর ইজারা দেওয়া হয়।

এ ইজারা বাতিল করে পুনরায় প্রকৃত মৎস্যজীবীদের সর্বোচ্চ দামে পুকুর ইজারা দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন এই মৎস্যচাষিরা।

এ মানববন্ধন কর্মসূচিতে একাত্মতা প্রকাশ করে বক্তব্য দেন গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মুকিতুর রহমান রাফি, উপজেলার শাখাহার ইউনিয়নের রগাঁও মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি ছানোয়ার হোসেন, সাপমারা মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি আব্দুল লতিফ, কামদিয়া মৎস্যজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক উত্তম কুমার ও রাজাহার ইউনিয়ন মৎস্যজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুস ছাত্তার প্রমুখ।

তবে সরকারি নিয়মে সর্বোচ্চ দরদাতাকে নয় বরং পুকুরের সবচেয়ে কাছের সমিতিকে ইজারা দেওয়ার বিধান রয়েছে বলছেন উপজেলা জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রামকৃষ্ণ বর্মন।

তিনি বলেন, ৭৫টি পুকুরের মধ্যে ৬০টি পুকুরের জন্য ১৩৬টি আবেদন জমা পড়ে। একটি পুকুরের জন্য ১৫টি আবেদন জমা পড়েছে। বিধায় তাদেরকে (ওই ১৫টি সমিতিকে) ১৫টি পুকুর ইজারা দেওয়া হয়।

“বাকি ৪৫টি পুকুরের বিষয়ে জলমহাল নীতিমালায় যে সমিতি তীরবর্তী হবে তাকেই দিতে হবে। তাই এ নীতিমালার আলোকে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দিলে প্রকৃত মৎস্যজীবীদেরই জলমহাল ইজারা দেওয়া হয়।”

তিনি জানান, ইজারাদানের নীতিমালার ৪-এর-ছ অনুচ্ছেদে রয়েছে-সমিতি পুকুর থেকে প্রথম নিকটবর্তী বা তীরবর্তী হবে তাকেই দিতে হবে। জলমহালের নীতিমালায় ইজারায় সর্বোচ্চ দরদাতাকে ইজারা দেওয়ার সুযোগ নাই।

এছাড়া সমিতির বৈধতার প্রসঙ্গে তিনি জানান, সমাজসেবা ও মৎস্য অফিস থেকে যেসব সমিতি নিবন্ধিত তারাই বৈধ। তাই তাদেরকেই পুকুর ইজারা দেওয়া হয়েছে।

“যারা মানববন্ধন করেছেন তারা অনৈতিক দাবি করছেন।”