লকডাউনের মধ্যে খুলল দেশীয় কাপড়ের বৃহত্তম বাজার

করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে লকডাউনের মধ্যেও ঈদের আগে শর্ত সাপেক্ষে খুলে দেওয়া হল দেশীয় কাপড়ের সবচেয়ে বড় বাজার নরসিংদীর বাবুরহাট।

নরসিংদী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 May 2020, 12:08 PM
Updated : 3 May 2020, 12:14 PM

গত ৯ এপ্রিল থেকে নরসিংদী জেলা অবরুদ্ধ ঘোষণার পর বাবুরহাটের বাজারও বন্ধ হয়ে যায়। তৈরি পোশাক কারখানা খোলার পর এবার বাবুরহাট কাপড়ের বাজারও খুলল।

ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে শিলমান্দী ইউনিয়নে অবস্থিত বাবুরহাট মূলত পাইকারি কাপড়ের বাজার। এ বাজার থেকে সারা দেশেই গামছা, লুঙ্গী, থান কাপড় যায়। দেশের বাইরে রপ্তানিও করা হয়।

এই বাজারকে কেন্দ্র করে জীবিকা নির্বাহ করছে শত শত কাপড় ব্যবসায়ী ও হাজার হাজার শ্রমিক। ঈদের মৌসুমে প্রতিদিন এ হাটে প্রায় হাজার কোটি টাকার লেনদেন হয়ে থাকে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

এবার বাজার বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে শ্রমিকরা হয়ে পড়েছে বেকার। অন্যদিকে পাইকারি ব্যবসায়ীরা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে সঙ্কটে পড়ার কথা জানাচ্ছিলেন।

এর পরিপ্রেক্ষিতে তাদের আবেদনে বাজারটি শর্ত সাপেক্ষে খোলার অনুমতি দেওয়া হল বলে রোববার জানিয়েছেন নরসিংদীর কোভিড-১৯ সংক্রমণ প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক সৈয়দা ফারহানা কাউনাইন।

তিনি বলেন, “শর্ত সাপেক্ষে খুলে দেওয়া হয়েছে। শর্ত ভঙ্গ করলে সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক বাবুরহাট বাজার পুনরায় বন্ধ করে দেওয়া হবে।”

শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ও অনলাইনের মাধ্যমে বেচাকেনা করতে পারবেন ব্যবসায়ীরা। তিনজনের বেশি ক্রেতা-বিক্রেতা কোনো দোকানে থাকতে পারবে না।

শর্ত মানা হচ্ছে কি না, তার তদারকিতে একজন নির্বাহী হাকিমের নেতৃত্বে সেনাসদস্য ও পুলিশ সদস্যরা নিয়োজিত থাকবে।

নরসিংদী চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি আলী হোসেন শিশির বলেন, “আমাদের এই অঞ্চল সারা বাংলাদেশের ইকোনমিক লাইফ লাইন। বিশেষ করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্য স্থানীয় কাপড়ের।

“সারা বছর যে বেচাকেনা হয়, তার বেশিরভাগই হয় ঈদের একমাস আগে থেকে ১৫ রোজা পর্যন্ত। এবার লকডাউনের কারণে আমাদের ওই সময়টা পার হয়ে গেছে।”

এই পরিস্থিতিতে বাবুরহাট বণিক সমিতির পাশাপাশি নরসিংদী চেম্বারও বাবুরহাট ‍খুলে দেওয়ার আবেদন করেছিল।

চেম্বার সভাপতি আলী হোসেন বলেন, “জেলা প্রশাসকের নির্দেশনা মোতাবেক শর্ত সাপেক্ষে হাট খোলা থাকবে, অন্যথায় পুনরায় বন্ধ করে দেওয়া হবে।”

এদিকে অনলাইনে পণ্য বেচা-কেনা করতে বলা হলেও তাতে এই দোকানের সব ব্যবসায়ী পারদর্শী নন।

ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, যারা পাইকারি অর্থাৎ বড় ব্যবসায়ী, তারা অনলাইন প্রক্রিয়া চালু করে ফেলেছেন। কিন্তু ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা তা চালু করতে না পারায় তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।