বৃহস্পতিবার রাতে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সায়েমুল হুদা এ কথা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোরকে জানিয়েছেন।
ডা. সায়েমুল এ উপজেলার ‘করোনা প্রতিরোধ কমিটি’র সদস্য সচিবের দায়িত্বেও রয়েছেন।
তিনি জানান, সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পারভেজুর রহমান বরাবর বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে লিখিত আবেদন করেছেন।
তাতে সাভারে উপজেলায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে গার্মেন্টস কারখানাগুলো বন্ধ করার পাশাপাশি এ উপজেলার সব প্রবেশও বন্ধের সুপারিশ করেন তিনি।
ডা. সায়েমুল হুদা জানান, সাভার একটি জনবহুল ও শিল্প অধ্যুষিত এলাকা। এ উপজেলা প্রায় ৫০ লাখ লোকের বাস, যাদের অধিকাংশই পোশাক শ্রমিক। ‘হাজার হাজার শ্রমিক’ কাজের সময় পাশাপাশি অবস্থান করায় তারা সংক্রমিত হচ্ছে এবং তাদের মাধ্যমে সমাজের অন্যরাও আক্রান্ত হচ্ছে-এই প্রেক্ষিতে তিনি চিঠি পাঠান।
পোশাক কারখানা বন্ধ থাকা অবস্থায় সাভারে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব খুব কম ছিল জানিয়ে তিনি আরো বলেন, “কারখানা খোলার পর থেকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা লাগামহীন ভাবে বেড়েই চলছে।”
তাই সাভার উপজেলায় করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে সাভার অঞ্চলের পোশাক কারখানাসহ উপজেলার প্রবেশ পথগুলো বন্ধ রাখা জরুরি হয়ে পড়েছে। নয়তো এ উপজেলায় কোভিড-১৯ ভয়াবহ রূপ নিতে পারে বলে মনে করেন তিনি।
মার্চের শেষ সপ্তাহে সরকার ‘সাধারণ ছুটি’ ঘোষণার পর গার্মেন্টস কারখানাগুলো প্রথমে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ রাখে মালিকদের সংগঠনগুলো। এরমধ্যে শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করতে গার্মেন্টস মালিকদের জন্য পাঁচ হাজার কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করে সরকার।
তবে এপ্রিলের শুরুতে এক দফা পোশাককর্মীদের গ্রাম থেকে ডেকে আনা হয়। দেশে গণপরিবহন বন্ধের মধ্যে সে সময় একশ কিলোমিটারের বেশি হেঁটে বিভিন্ন জেলা থেকেও চাকরি বাঁচাতে ছুটে আসেন শ্রমিকরা।
তবে পোশাক কারখানা চালু রাখা হয়নি। পরে ২৭ এপ্রিল থেকে স্বল্প সংখ্যক শ্রমিক নিয়ে দেশের গার্মেন্টস কারখানা কাজ শুরু করে।
এ পরিস্থিতে বৃহস্পতিবার প্রশাসনের কাছে এমন এক চিঠি দিলেন সাভারের এই স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।
ডা. সায়েমুল জানান, দেশে করোনাভাইরাস শনাক্তের পর থেকে ২২ এপ্রিল পর্যন্ত সাভারে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল নয় জন।
কারখানা খোলার পর গেল সাত দিনে আাক্রান্ত হয়েছে আরও ১৪ জন। বৃহস্পতিবার আরো দুইজন আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানান তিনি।
এ রোগে সরকারিভাবে শনাক্তের সংখ্যা ২৫ জন হওয়ার দিন বৃহস্পতিবার রাতে তার উপজেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সচিব ডা. সায়েমুল হুদা ফেইসবুক আইডি থেকে এক স্টেটাসে লেখেন, “আশুলিয়া এলাকার একই পরিবারের বাবা-ছেলের করোনা পজেটিভ হওয়ায় তাদের মাতৃসদনে ভর্তি করা হয়েছে।
“কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সাথে জানাতে চাই ওই পরিবারের উপর প্রতিবেশীরা হামলা করেছে। প্রশাসনকে জানানো হয়েছে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”