ঠাকুরগাঁও থেকে ৮৭ শ্রমিক গেল নওগাঁ ও কুমিল্লায়

করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঝুঁকিতে অবরুদ্ধ ঠাকুরগাঁও থেকে প্রথমবারের মতো ৮৭ ধানকাটা শ্রমিক পাঠানো হয়েছে নওগাঁ ও কুমিল্লায়।

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিমো. শাকিল আহমেদ, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 April 2020, 12:52 PM
Updated : 28 April 2020, 12:52 PM

মঙ্গলবার বিকালে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা প্রশাসনের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ইউএনও কার্যালয়ের সামনে থেকে বাসযোগে তাদের যাত্রা করানো হয়।

এ সময় ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন, রাজাগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোশারুল ইসলামসহ স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, নওগাঁ যাত্রার আগে শ্রমিকদের সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে জীবাণুনাশক ছিঁটিয়ে বাসে ওঠানো হয়। পাশাপাশি করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে সতর্ক থাকার বিভিন্ন নির্দেশনা দেওয়া হয়। থার্মাল স্ক্যানার দিয়ে প্রত্যেক শ্রমিকের তাপমাত্রা মাপার পাশাপাশি মাস্ক ও শুকনো খাবারের প্যাকেট দেওয়া হয়। এছাড়া শ্রমিকদেরকে একটি প্রত্যায়নপত্র দেওয়া হয়েছে যাতে তাদের কোথাও কোনো ধরনের হয়রানির শিকার হতে না হয়।

সইদুল ইসলাম, তাহের আলী, উখিল মিয়াসহ বেশ কয়েকজন শ্রমিক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, প্রতি বছরের এই সময়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজে ব্যস্ত থাকেন তারা। কাজের বদলে ভালো মজুরি পাওয়া যায়। কিন্তু লকডাউনের কারণে যেতে পারছিলেন না। উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় যেতে পারায় তারা বেশ খুশি।

সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, করোনায় সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়ে এই প্রথম সরকারিভাবে তালিকা তৈরির মাধ্যমে ঠাকুরগাঁও জেলা থেকে নওগাঁ ও কুমিল্লায় জেলায় ৮৭ জন শ্রমিককে পাঠানো হলো। তারা ওই এলাকায় ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ করবেন। এতে তারা আর্থিকভাবে লাভবান হবেন।

“শ্রমিকরা কোথায় থাকবে, কী খাবে, কোন যানবাহনে যাবে সার্বিক বিষয়গুলো আমরা এখান থেকেই নির্ধারণ করছি ওই এলাকার প্রশাসনের সাথে কথা বলে। শ্রমিকরা ঠাকুরগাঁও থেকে যাওয়া ও কর্মস্থল থেকে ফেরৎ আসা পর্যন্ত তারা আমাদের নজরদারিতেই থাকবে। যাতে তাদের কোনো সমস্যা না হয়, সেদিকে আমাদের লক্ষ থাকবে।”             

ইউএনও জানান, ঠাকুরগাঁও সদরের রাজাগাঁও ইউনিয়ন থেকে ৪০ জন ও বড়গাঁও ইউনিয়ন থেকে ২৫ জন শ্রমিককে পাঠানো হয় নওগাঁ জেলার রাণীনগর উপজেলায়। অপরদিকে সদরের জামালপুর ইউনিয়ন থেকে ২২ জনকে পাঠানো হয় কুমিল্লার নাঙ্গলকোট এলাকায়। 

পর্যাক্রমে ঠাকুরগাঁওয়ের বিভিন্ন এলাকা থেকে ইচ্ছুক আরও শ্রমিক বিভিন্ন জায়গায় ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজে পাঠানো হবে বলে জানান ইউএনও।  

রাজাগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোশারুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “প্রত্যেক বছর এসময়ে আমার ইউনিয়নের অসংখ্য শ্রমিক অন্য জেলায় গিয়ে কাজ করত। করোনায় এবার তারা যেতে পারছিল না। পরে ইউএনওর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সরকারিভাবে শ্রমিকদের তালিকা তৈরি করে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।”