করোনাভাইরাসের রোগী সন্দেহে ‘হাসপাতালে যেতে বাধা দেওয়ায়’ যুবকের মৃত্যু

নারায়ণগঞ্জে সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় এক যুবককে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে করোনাভাইরাসের রোগী সন্দেহে এলাকাবাসীর বাধার মুখে পড়ে প্রাণ হারাতে হয়েছে বলে পরিবারের ভাষ্য।

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 April 2020, 02:54 PM
Updated : 7 April 2020, 02:54 PM

৩০ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি শহরের দেওভোগ এলাকায় নিজ বাড়িতে সোমবার রাত দেড়টার দিকে মারা যান।

নারায়ণগঞ্জ সিটি প্যানেল মেয়র আফরোজা হাসান বিভা বলেন, ওই ব্যক্তির চর্মরোগের সমস্যা ছিল। সে নিয়মিত ওষুধও খেত। গত ২৬ মার্চ থেকে তার খুব জ্বর ও শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু তার শারীরিক অবস্থার কোনো পরিবর্তন না হয়নি।

“সোমবার রাত ১১টার দিকে তার জ্বর ও প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। তাকে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্সে আনা হয়। কিন্তু অ্যাম্বলেন্সে তোলার আগেই তার মৃত্যু হয়। তার করোনাভাইরাসে মৃত্যু হয়েছে সন্দেহে ওই ব্যক্তির লাশ হাসপাতালে নিতে বাধা দেয় এলাকাবাসী।
“পরিস্থিতির কারণে ওই ব্যক্তির লাশ তার পরিবারের লোকজন লাশ ঘরেও নিয়ে যেতে পারেনি। তাই দীর্ঘসময় বাড়ির সামনে মেঝেতে ওই ব্যক্তির লাশ পড়ে থাকে । পরে পুলিশ গেলে তার লাশ দাফনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ”

তিনি বলেন, ওই ব্যক্তির বাড়িতে মা, স্ত্রী ও দুই মাসের এক সন্তান রয়েছে। এক ভাই ঢাকায় থাকে। ঘটনার সময় বাড়িতে আর কেউ ছিল না। 

ওই ব্যক্তির বড় ভাই বলেন, তার ভাইকে সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় অ্যাম্বেুলেন্সে করে ঢাকায় নিয়ে যেতে চাইলে করোনাভাইরাসের আক্রান্ত সন্দেহে এলাকার লোকজন তাকে নিতে দেননি। প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া অ্যাম্বুলেন্স বের হতে পারবে না ‘অজুহাতে’ এক ঘণ্টা তাদের আটকে রাখা হয়। পরে অনুমতি নিতে নিতেই তার ভাইয়ের মৃত্যু হয়। তার ভাইয়ের লাশ ১০ ঘণ্টা বাড়ির সামনে মেঝেতে পড়ে থাকলেও কেউ এগিয়ে আসেনি এবং দাফন করতে আসেনি।

এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার ওসি আসলাম হোসেন  জানান, নিহতের লাশ শহরের পাইকপাড়া কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।