রাজশাহীতে আইসোলেশনে কিশোর, চিকিৎসকদের মোবাইল নম্বর প্রকাশ

রাজশাহীতে করোনাভাইরাস আক্রান্ত সন্দেহে এক কিশোরকে আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে।

রাজশাহী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 March 2020, 03:27 PM
Updated : 30 March 2020, 03:55 PM

সোমবার সকালে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ও করোনাভাইরাস চিকিৎসা সমন্বয় কমিটির আহ্বায়ক আজিজুল হক আজাদ।

এছাড়া এই ব্রিফিং এর করোনাভাইরাস সংক্রান্ত চিকিৎসায় নিয়োজিত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মোবাইল নম্বর দিয়ে জানানো হয়েছে-২৪ ঘণ্টা তাদের কাছে পরামর্শ চাওয়া যাবে।

আজিজুল হক আজাদ ওই কিশোরের এ চিকিৎসার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ব্রিফিং করেন।

এর আগে রোববার রাত ১২টার দিকে রাজশাহী পবা উপজেলার ১৭ বছর বয়সী ওই কিশোরকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

আজিজুল হক আজাদ বলেন, করোনাভাইরাসের উপসর্গ থাকায় এক কিশোরকে রাজশাহীতে সংক্রমক ব্যাধি হাসপাতালে স্থাপিত আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে।

“রোববার রাত ১২টার দিকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন তিনি। জরুরি বিভাগ থেকে সরাসরি তাকে আইসোলেশন ওয়ার্ডে পাঠানো হয়।”

তিনি জানান, ওই কিশোরের সর্দি ও শুকনো কাশি আছে। তাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। তবে এখনো তারা নিশ্চিত নন।

“বিদেশ বা ঢাকা থেকে আসা কারো সংস্পর্শে যাওয়ার তার কোনো ইতিহাস পাওয়া যায়নি।”

পহেলা এপ্রিল রাজশাহীতে করোনাভাইরাস পরীক্ষার ল্যাব চালু হলে ওই কিশোরের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হবে বলে জানান তিনি।

ব্রিফিংকালে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে রামেক হাসপাতালের মিডিসিন বিভাগের প্রধান খলিলুর রহমান বলেন, রাজশাহী হাসপাতাল থেকে বিনা চিকিৎসায় কোনো রোগী ফেরত যাবে না।

করোনাভাইরাস নির্ণয় ও চিকিৎসা প্রদানের জন্য মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. আজিজুল হক আজাদকে আহ্বায়ক করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নিয়ে ১৫ সদস্যের মেডিকেল টিম গঠন করা কয়েছে বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, “এই কমিটির চিকিৎসকদের সরাসরি কল করে ২৪ ঘণ্টা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পরামর্শ নেওয়া যাবে। এ জন্য ১৫টি নাম্বার প্রস্তুত করা হয়েছে। মঙ্গলবার থেকে সেগুলো চালু হবে।”

এছাড়াও করোনাভাইরাস নিয়ে তথ্য আদান প্রদান ও প্রাপ্ত তথ্যাদি রেজিস্ট্রারভুক্ত করার জন্য হটলাইন নম্বর চালু হচ্ছে সোমবার থেকে বলেও জানান তিনি।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের নাম ও মোবাইল নম্বর দিয়েছেন তারা।

ডা. আজিজুল হক আজাদ (০১৭১৫৩৬৭৮৪৪), ডা. জহুরুল হক (০১৭১২০০০৯১৮), ডা. সৈয়দ মাহাবুব আলম (০১৭১১০৭৪২৬৬), ডা. হারুন অর রশীদ (০১৭১১৯০৪৭৭৮), ডা. মাহাবুবুর রহমান (০১৭৬৩২৪৮৪৪৮), ডা. প্রবীর মোহন বসাক (০১৭১২৪১৬৮৬২), ডা. আখতারুল ইসলাম (০১৭১২৬২২৭১৬), ডা. আমজাদ হোসেন (০১৭১২৬৮৫৩৫০), ডা. মোহাইমেনুল হক (০১৭১৩৩২৬১৯৭৫), ডা. রেজাউল ইসলাম (০১৭১১৫৭৭৫৬৩), ডা. নাজনীন পারভীন (০১৭১১১৮০২৩৮), ডা. সেলিম খান (০১৭১৩২২৮৩৮৩), ডা. আমজাদ হোসেন প্রাং (০১৭১৮১৬৭৮১৯), ডা. রকিবুল ইসলাম (০১৯১৪৯৫৭৬৪৭) ও ডা. সিদ্দিকুর রহমান (০১৭১৬০৩৪৮১৪)।

এছাড়া রামেক হাসপাতালের হটলাইন নম্বর- শনিবার ০১৭১৫৫৪৫৫৭২, ০১৭৩৪১৯৫৯৯৯ রোববার ০১৭৪৪৫৯৫৮৪২, ০১৭১৬৫৩৬৬৫৬, সোমবার ০১৭৪৪৫৯৫৮৪২, ০১৭১৫৮৪১২৬৬ মঙ্গলবার ০১৭৬৫৭০৯৪৪০, ০১৭৮২৯১৬৮৯১, বুধবার ০১৭৩৪১৯৫৯৯৯, ০১৯১৯৯৮১৯৪০, বৃহস্পতিবার ০১৭১১৯৮১৯৪১, ০১৭৪৪৫৯৫৮৪২ এবং শুক্রবার ০১৭৪৪৫৯৫৮৪২, ০১৭১২৫৫৯৬৭৩।

এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজশাহীতে আরও ৫১ জনকে হোম কোয়ারেন্টিনে নেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে রয়েছে ৫১৯ জন বলে জানিয়ে রাজশাহী সিভিল সার্জনের দপ্তর।

রাজশাহীর সিভিল সার্জন ডা. এনামুল হক বলেন, “গত ১০ জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ৯৪০ জন বিদেশ ফেরত ব্যক্তিকে হোম কোয়ারেন্টিনের আওতায় আনা হয়। এদের মধ্যে ১৪ দিন অতিবাহিত হওয়ায় পর ৪২১ জনকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। আর বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে রয়েছে ৫১৯ জন।

এর মধ্যে রাজশাহী নগরে ১৮৭ জন, বাঘায় ২৮ জন, চারঘাটে ৪৭ জন, পুঠিয়ায় ৪৮ জন, দুর্গাপুরে ১৫ জন, বাগমারায় ৪৬ জন, মোহনপুরে ৫২ জন, তানোরে ২৯ জন, পবায় ২৯ জন ও গোদাগাড়ীতে রয়েছেন ৩৮ জন।

অপরদিকে, রাজশাহী বিভাগে গত ২৪ ঘণ্টায় হোম কোয়ারেন্টিনের আওতায় আসা ব্যক্তির সংখ্যা কমেছে। রোববার সকাল ৮টা থেকে সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত এ বিভাগের আট জেলায় নতুন করে হোম কোয়ারেন্টিনে এসেছে ১৩১ জন। তবে বগুড়া ও জয়পুরহাটে আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন রয়েছে সাতজন রোগী।

রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক কার্যালয় থেকে ই-মেইলে পাঠানো তথ্যে জানানো হয়, গত ১০ মার্চ থেকে এ পর্যন্ত হোম কোয়ারেন্টিনের আওতায় আসেছে ছয় হাজার ৮৪০ জন। তবে হোম কোয়ারে›টিন থেকে ছাড়াপত্র পেয়েছেন তিন হাজার ৩০৯ জন। বর্তমানে হোম কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন দুই হাজার ৬২৫ জন।