এক কিশোরী পুরুষ রূপে ফিরল মাদারীপুরে

মাদারীপুরের এক গ্রামে হেনা নামের যে কিশোরী হাসত খেলত, সে-ই ১৫ বছর পর পুরুষে রূপান্তরিত হয়ে গ্রামে ফিরেছে স্ত্রী ও সন্তান সঙ্গে নিয়ে।

মাদারীপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 March 2020, 04:02 PM
Updated : 14 March 2020, 05:30 AM

ঘটনাটি ঘটেছে জেলার শিবচর উপজেলার নিলখী ইউনিয়নের চর কামার কান্দি গ্রামে। প্রায় এক সপ্তাহ আগে স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে গ্রামের বাড়িতে আসেন তিনি। তাকে দেখতে প্রতিবেশীসহ আশপাশের গ্রামের শত শত মানুষ ভিড় করছেন।

এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে শিবচর উপজেলার নিলখী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ওয়াসিম মাতুব্বর বলেন, সেকান্দার খানের মেয়ে হেনা ১৫ বছর পর এলাকায় ছেলেতে রূপান্তরিত হয়ে এসেছে। সে সঙ্গে করে দুই স্ত্রী ও এক সন্তান নিয়ে এসেছে।

“খবরটি ছড়িয়ে পড়ায় প্রচুর মানুষ দেখতে আসছে।”

এক কালের সেরেলা আক্তার হেনা পুরুষ হয়ে ওঠার পর নিজের নাম বদলে রাখেন সেলিম রেজা।

সেলিম রেজা বলেন, “আমি মেয়ে হয়েই জন্মেছিলাম। যখন থেকে একটু বুঝতে শিখি তখন লক্ষ্য করতাম অন্য মেয়েদের মত আমার মেয়েলি পরিবর্তন হচ্ছে না।

“প্রায় আট বছর আগে আমার মধ্যে ব্যাপক পরিবর্তন শুরু হলে চিকিৎসকের কাছে যাই। তারা বলেন, ‘এটা হরমোনজনিত সমস্যা।’ হরমোনজনিত হোক বা যেকোনো রোগের জন্যই হোক সৃষ্টিকর্তা আমাকে মেয়ে থেকে সম্পূর্ণ পুরুষে রূপান্তরিত করে দিয়েছেন।

“আমি বিয়ে করেছি। আমার একটি ছেলেও রয়েছে। একজন পুরুষ যেভাবে চলাফেরা করে আমিও সেভাবেই চলাফেরা করছি।”

তার পারিবারের লোকজন জানায়, প্রায় ১৫ বছর আগে সেরেলা আক্তার হেনা বাবা-মায়ের সাথে গ্রাম ছেড়ে ঢাকা শহরে বসবাস শুরু করেন। ঢাকায় থাকাকালীন তিনি পল্লী চিকিৎসক কোর্স সম্পন্ন করেন।

প্রায় আট বছর আগে সেরেলা আক্তার হেনা তার নিজের শারীরিক পরিবর্তন লক্ষ্য করেন। তার মধ্যে পুরুষালী পরিবর্তন দেখে চিকিৎসকের কাছে যান। ওষুধ খেলেও ধীরে ধীরে পুরষে রূপান্তরিত হয়ে যান তিনি।

তারা জানান, এ অবস্থায় প্রায় পাঁচ বছর আগে সেলিম রেজা নাম নিয়ে এক মেয়েকে বিয়ে করেন। বর্তমানে তার বয়স ৩০ বছর। তার একটি ছেলে রয়েছে। সেলিমকে এক নজর দেখতে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন গ্রাম থেকে উৎসুক মানুষ তাদের বাড়িতে ভিড় করছেন।

প্রতিবেশী আসমা বেগম বলেন, সেলিম আগে মেয়ে ছিল। নাম ছিল হেনা। আমাকে নানি বলত। আমার কাছে অনেক থাকত। ঢাকা যাওয়ার পর সেখানেই ওর শারীরিক পরিবর্তন হয়। ও বিয়ে করে স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে কয়েক দিন হলো গ্রামে এসেছে।

প্রতিবেশী আলম খান বলেন, ওরা ঢাকা থাকা অবস্থায় আমার সাথে ফোনে যোগাযোগ করত। ও মেয়ে থেকে পুরুষে রুপান্তরিত হওয়ার খবর আমাকে জানিয়ে বলেছিল ‘চাচা আল্লাহ যেহেতু আমাকে মেয়ে থেকে পুরুষ বানিয়ে দিয়েছেন তাহলে আর ঢাকা থাকব না। গ্রামে এসে প্রয়োজনে দিন মজুরি করে বাবা মায়ের ভরণপোষণ করব।

পাশের গ্রামের আতাউর রহমান বলেন, একটি মেয়ে ছেলে হয়ে গেছে শুনে তাকে দেখতে এসেছি। তার কণ্ঠ শুধু মেয়ের মত, চলাফেরা পুরুষের মতই। আবার তার স্ত্রী ও সন্তান দেখলাম।

“সত্যিই এটা অবাক করা ব্যাপার, আমার মত অনেক মানুষ তাকে দেখতে আসছে।”