সূর্যমুখী চাষে সফলতার আশা

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে প্রথমবারের মত সূর্যমুখীর চাষ করে লাভবান হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন কৃষক মিলন মিয়া।

টাঙ্গাইল প্রতিনিধিএম এ রাজ্জাক, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 March 2020, 05:57 AM
Updated : 6 March 2020, 06:14 AM

উপজেলার লতিফপুর ইউনিয়নের ত্রিমোহন এলাকায় কৃষি বিভাগের প্রণোদনায় বাণিজ্যিকভাবে পাঁচ বিঘা জমিতে সূর্যমুখীর আবাদ করেন মিলন।

তিনি জানালেন, ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময় থেকেই পুরো বাগানে ফুল ফুটতে শুরু করেছে।

টাঙ্গাইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আব্দুর রাজ্জাক বলছেন, সেখানে সূর্যমুখী চাষের ‘ব্যাপক সম্প্রসারণ’ সম্ভব।

এছাড়া ‘কম খরচে বেশি লাভের সুযোগ’ থাকায় ওই এলাকার আরও অনেকেই সূর্যমুখী চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।

মিলন মিয়ার বাগান ঘুরে দেখা গেল, এক একটি ফুল যেন হাসিমুখে সূর্যের আলো ছড়াচ্ছে; যতদূর চোখ যায় শুধু সূর্যমুখী। দেখে মনে হয় বিশাল আয়তনের হলুদ এক গালিচা।

মিলন বলেন, এখন সকলের নজর তার সূর্যমুখী বাগানে। প্রতিদিন আশপাশের এলাকা থেকে মানুষ দেখতে আসে, ছবি তোলে।  

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, চলতি বছর টাঙ্গাইলের ১২টি উপজেলায় ৩০ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখীর চাষ হয়েছে।

উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১২ মেট্রিকটন। এর মধ্যে এ মৌসুমে শুধু মির্জাপুর উপজেলা থেকেই ২.৫ মেট্রিক টন সূর্যমুখীর বীজ পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় মির্জাপুর উপজেলার লতিফপুর ইউনিয়নে পাঁচজন কৃষককে সরকারিভাবে প্রতি বিঘা জমিতে চাষের জন্য ১.৫ কেজি বীজ, ২০ কেজি ডিএপি সার, ১০ কেজি এমওটি সার বিনামূল্যে সরবরাহ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

এদিকে সূর্যমুখী চাষীদের সব ধরনের সহযোগিতা ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে বলে জানালেন মির্জাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ মশিউর রহমান।

লতিফপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও সূর্যমুখী চাষী মো. জাকির হোসেন বলেন, “সূর্যমুখী মির্জাপুর উপজেলার কৃষকদের জন্য সুখবর বয়ে আনতে যাচ্ছে। খুব অল্প টাকায় বেশি মুনাফা সম্ভব এই চাষে। এর বীজ থেকে আমরা যে তেল পাব তাতে ক্ষতিকর কলেস্টেরল নেই।”

তিনি জানান, বাজারে সরিষা ভাঙানোর মেশিনের মাধ্যমেই সূর্যমুখীর বীজ ভাঙিয়ে তেল পাওয়া যায়।

“পরীক্ষামূলক ৫ বিঘা জমিতে সূর্যমুখী চাষে আমরা ১৫০০-১৬০০ কেজি বীজ আশা করছি। সেখান থেকে আমরা তেল উৎপাদন করতে পারব।”

মির্জাপুর উপজেলা কৃষি অফিসার মোহাম্মদ মশিউর রহমান বলেন, এ উপজেলায় এবারই প্রথম সূর্যমুখী চাষে সরকারি প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে।

“সূর্যমুখীর বীজ থেকে উৎপাদিত তেলে লিনোলিক এসিড থাকে যা হার্টের জন্য ভালো। সূর্যমুখী তেলের উৎপাদন বাড়লে মানুষ স্বাস্থ্যসম্মত তেল পাবে, চাষিরাও লাভবান হবেন।”