পেটের ছুরি বের করতে কলেজছাত্রীকে ঢাকায় প্রেরণ

চাঁদপুরে কথিত প্রেমিকের ছুরিকাঘাতে এক কলেজছাত্রী গুরুতর আহত হয়েছেন। তাকে স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।  

চাঁদপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 March 2020, 04:06 PM
Updated : 2 March 2020, 04:17 PM

চাঁদপুর মডেল থানার ওসি মো. নাসিম উদ্দিন বলেন, সোমবার সদর উপজেলার আশিকাটিতে ফাইভ স্টার পার্কে এ ঘটনা ঘটে।

ঘটনার পর দীপু মজুমদার নামের ওই যুবককে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে স্থানীয়রা।

মেয়েটির পেটে ঢুকে যাওয়া ছুরিটি চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে বের করা সম্ভব না হওয়ায় সেটিসহ তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার পশ্চিম চরকৃষ্ণপুর গ্রামের বাসিন্দা ও চাঁদপুর সরকারি কলেজের স্নতকের (সম্মান) ছাত্রী।

চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালের বেডে শুয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর উপজেলার ক্যাম্পেরহাটে তার মামার বাড়ির পাশের যুবক দীপু মজুমদারের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কয়েকদিন আগে পারিবারিকভাবে তার অন্যত্র বিয়ে ঠিক হয়।

“এ খবর পেয়ে সোমবার দুপুরে দীপু মজুমদার আমাকে নিয়ে চাঁদপুরের ফাইভ স্টার পার্কে ঘুরতে আসে। এক পর্যায়ে আমার বিয়ে ঠিক হওয়া নিয়ে কথাকাটাকাটি হয় এবং আমাকে ছুরি দিয়ে এলোপাথাড়ি আঘাত করতে থাকে।”

প্রত্যক্ষদর্শী যুবক সাগর সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনার সময় তারা কয়েকজন বন্ধু মিলে পার্কে বসেছিলেন। হঠাৎ চিৎকারের শব্দ শুনে দেখেন একটি মেয়েকে তার সঙ্গের এক যুবক ছুরি দিয়ে কোপাচ্ছে।

“পরে আমরা এগিয়ে গিয়ে মেয়েটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাই। এ সময় তার সারা দেহ রক্তে ভেসে যাচ্ছিল।”

চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালের সহকারী রেজিস্ট্রার রফিকুল হাসান ফয়সাল বলেন, ছুরির আঘাতে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারাত্মক জখম হয়েছে; যার কারণে প্রচণ্ড রক্তক্ষরণ হয়েছে।

“মেয়েটির পেটের ডান পাশে একটি ছোট্ট ছুরি বিঁধে আছে। ব্রাদাররা তা খুলতে না পারায় তাৎক্ষণিকভাবে তাকে হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়; কিন্তু ছুরিটি তার ফুসফুসের কাছে হওয়ায় প্রায় দেড় ঘণ্টা চেষ্টা করেও ছুরিটি বের করতে সক্ষম হননি চিকিৎসকরা। অনেক রক্তক্ষরণ হওয়ায় আমরা তাৎক্ষণিকভাবে এক ব্যাগ রক্ত দিয়েছি।

“তার পেটে ঢোকা ছুরিটি বের করতে গেলে আরও রক্তক্ষরণ হওয়ার আশঙ্কা ছিল, যা আমাদের এখানে বন্ধ করা সম্ভব হতো না। তাই তার শরীরের অন্যান্য ক্ষতস্থানে সেলাই করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।”

ওসি নাসিম উদ্দিন আরও জানান, “এই ঘটনায় জড়িত যুবককে স্থানীয়রা আটক করে থানায় সোপর্দ করেছে। আমরা হাসপাতালে গিয়ে মেয়েটির সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছি।”

এ ব্যাপারে তদন্ত শেষে আইনআনুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।