রাবির আগের প্রশাসনের দুর্নীতির বিচার চান ভিসিপন্থিরা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে শিক্ষকদের একাংশের আন্দোলনের মধ্যে এবার আগের উপাচার্যের দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন বর্তমান উপাচার্যপন্থি শিক্ষকেরা।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Jan 2020, 12:47 PM
Updated : 26 Jan 2020, 12:47 PM

তারা আগের উপাচার্যের দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তার বিচার চেয়ে রোববার মানববন্ধন করেছেন ক্যাম্পাসে।

এর আগে একই দাবিতে তারা গত ২৩ জানুয়ারি সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন।

রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ’ এ মানববন্ধনের আয়োজন করে।

ক্যাম্পাসে এ অংশটি বর্তমান উপাচার্য আব্দুস সোহবানপন্থি শিক্ষক এবং আন্দোলনকারী অপর অংশটি সাবেক উপাচার্য মিজানউদ্দিনপন্থি শিক্ষক হিসেবে পরিচিত।

আর শিক্ষকদের এ দুটি গ্রুপই বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের সদস্য।

মানববন্ধনে সংগঠনটির আহ্বায়ক অধ্যাপক এম মজিবুর রহমান বলেন, “গত প্রশাসনের সময়কালে ঢাকায় অতিথি ভবন ক্রয় প্রক্রিয়া নিয়ে দুর্নীতির কথা আমরা জানি। সেখানে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি করা হয়েছে। যার তদন্ত এখনও প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।”

অতিথি ভবন না থাকায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগেণকে ঢাকায় থাকতে হয় এবং এতে তাদের নানা অসুবিধার সম্মুখীন হন বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, এছাড়াও গত প্রশাসনের সময়ে বুদ্ধিজীবী স্মৃতিস্তম্ভে দুর্নীতি হয়েছে। স্মৃতিস্তম্ভে বঙ্গবন্ধুর প্রতিচ্ছবি বিকৃত করা হয়েছে; যা অত্যন্ত অপমানজনক।

“এসব দুর্নীতির তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্তদের বিচার চাই।”

ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক চিত্তরঞ্জন মিশ্র বলেন, “গত প্রশাসনের যারা দুর্নীতি করেছে, এখন তারা নিজেদের দুর্নীতিকে আড়াল করার জন্য আন্দোলনে নামছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একটি গ্রুপ প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের নাম ব্যবহার করে সারাদেশে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। অথচ তাদের বিরুদ্ধেই অসংখ্য দুর্নীতির অভিযোগ। সকল দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান অটল থাকবে।”

পপুলেশন সায়েন্স এন্ড হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল গণির সঞ্চালনায় মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক আরিফুর রহমান, সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক রবিউল ইসলাম, আইন বিভাগের অধ্যাপক হাসিবুল আলম প্রধান, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক তারেক নূর, কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কাজী জাহিদুর রহমান, বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সুমাইয়া খানম।

এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মো. লুৎফর রহমান, জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক প্রভাষ কুমার কর্মকারসহ বিভিন্ন বিভাগের দুই শতাধিক শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে গত অক্টোবর মাস থেকে ‘দুর্নীতি বিরোধী শিক্ষক সমাজের’ ব্যানারে আন্দোলনকারী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের একাংশ বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে অপসারণের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে।

তারা চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুস সোবহানের বিরুদ্ধে ১৭টি অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ও দুর্নীতি দমন কমিশনে ৩০০ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র দাখিল করেছেন। সেগুলো নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে কয়েকটি দপ্তর।