এ বছর বর্ষার শেষে গোপালগঞ্জের কৃষকেরা ৬৭৭ হেক্টর জমিতে লাউ, টমেটো, উচ্ছে, লাল শাক ও কুমড়াসহ আগাম শীতের সবজি আবাদ করে; ঘূর্ণিঝড়ের কারণে যার ৫২০ হেক্টর জমির সবজি নষ্ট হয়ে গেছে বলে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভাষ্য।
এছাড়া ৪২৩ হেক্টর ক্ষেতের ধান, ৩১ একর ক্ষেতের কলা, ১০ হেক্টর জমির পেঁপে ও ১৭ হেক্টর জমির পান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
তবে কৃষকদের এ বিপদ থেকে উদ্ধারে ‘প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে’ বলেন গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক রমেশ চন্দ্র ব্রহ্ম জানিয়েছেন।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “ক্ষেতে পানিতে তলিয়ে যাওয়া সবজি মরে যাবে। এগুলো পরিচর্যা করে লাভ নেই।
এছাড়া এ মুহূর্তে ক্ষয়ক্ষতি থেকে উদ্ধার পেতে লাল, পালং, ঘি-কাঞ্চলের মত স্বল্পকালীন শাক-সবজি আবাদ করতে কৃষকদের বলা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এগুলো ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে ফল দেয়।”
কৃষকদের ক্ষয়ক্ষতির তালিকা ঢাকায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের পুর্ণবাসনের জন্য টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেলে তার ভিত্তিতে কার্যক্রম হাতে নেওয়া হবে।
আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে শীতের এসব সবজির বাম্পার ফলন পান বলে জানালেন গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের কৃষক নারায়ণ বিশাস।
তিনি জানান, এবার হেমন্তের শুরুতেই তারা লাউ, উচ্ছে, লাল শাক বিক্রি করে কাঁচা পয়সা ঘরে তুলতে শুরু করেন।
“ক্ষেতে পাকতে শুরু করে টমেটো।
ঝড়ে মাচা ভেঙে বৃষ্টির পানিতে লাউ ও কুমড়া গাছ তলিয়ে গেছে। এতে মরে যাচ্ছে ফলন্ত লাউ ও কুমড়ার গাছ বলে জানালেন তিনি।
“ঝড়ে টমেটো ও উচ্ছের গাছ ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে। লাল শাক মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। টমেটো ও উচ্ছের ক্ষেত টিকিয়ে রাখতে তারা শেষ চেষ্টা করছেন।
“এরই মধ্যে এসব সবজি ক্ষেতেও মড়ক ধরেছে।”
আগাম টমেটোতে প্রতিবছর প্রচুর লাভ করেন উল্লেখ করে তিনি জানান, এ বছর ঝড়ে তাদের টমেটো সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
“ঝড়ে আমাদের কোমর ভেঙে গেছে।”
কণা রায় ও শিশির রায় জানান, টমেটোর ক্ষেত নষ্ট হয়ে যাওয়ায় তারা চোখে মুখে অন্ধকার দেখছেন।
“এসব হারিয়ে আমরা দিশেহারা।”
তবে কৃষকেরা দ্রুত এ ক্ষতি কাটিয়ে উঠে ঘুরে দাঁড়াবে আশা প্রকাশ করে রমেশ চন্দ্র বলেন, “কৃষকদের পাশে থেকে তাদের সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হবে।”