গোপালগঞ্জে অভিযোগ তুলে আরেক সহকারী প্রক্টরের পদত্যাগ

গোপালগঞ্জে ভিসির অপসারণের দাবিতে ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে আরও একজন সহকারী প্রক্টর পদত্যাগ করেছেন।

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Sept 2019, 09:41 AM
Updated : 26 Sept 2019, 10:18 AM

বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ড. মো. তরিকুল ইসলাম কর্তৃপক্ষকে পদত্যাগপত্র প্রদান করেন। তিনি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক।

এ নিয়ে তিনজন সহকারী প্রক্টর পদত্যাগ করলেন। গত বুধবার রাতে কৃষি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মো. নাজমুল হক শাহিন এবং ২১ সেপ্টেম্বর সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. হুমায়ূন কবির নিরীহ পদত্যাগ করেন।

এর আগে মো. হুমায়ুন কবীর ও ড. মো. নাজমুল হক শাহিন পদত্যাগ করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃংখলা রক্ষায় শিক্ষকরাই প্রক্টর পদে দায়িত্ব পালন করে থাকেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. নূরউদ্দিন আহমেদ বলেন, “পদত্যাগপত্রটি আমি গ্রহণ করেছি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে।”

পদত্যাগের বিষয়ে  ড. মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, যে প্রশাসন আমার শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে পারে না, সেই প্রশাসনে আমি থাকতে চাই না। এ কারণেই পদত্যাগ করেছি।

প্রক্টরাল বডিতে ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা কমিটিতে তার দায়িত্ব পালনের কথা উল্লেখ করে তরিকুল তার পদত্যাগপত্রে লিখেছেন, “শিক্ষার্থীদের উপর বহিরাগত সন্ত্রাসীদের হামলায় ২০ জনেরও বেশি ছাত্র আহত হয়। এরমধ্যে আমার বিভাগের দু’জন শিক্ষার্থী রয়েছে।… বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষ কোন প্রকার কার্যকারী পদক্ষেপ নেয়নি।

“বরং ছাত্রদের ওপর বহিরাগত সন্ত্রাসীদের লেলিয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।”

গত ১১ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাতেমা-তুজ-জিনিয়াকে সময়িক বহিষ্কার করার পর সমালোচনার মুখে ১৮ সেপ্টেম্বর সেই আদেশ প্রত্যাহার করে নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এরপর ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে ভিসি প্রফেসর খোন্দকার নাসিরউদ্দিনের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে শিক্ষার্থীরা।

এ আন্দোলন ঠেকাতে গত শনিবার বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করেন উপাচার্য। এর প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে নামলে একদল বহিরাগত হামলা চালায় শিক্ষার্থীদের উপর। এ হামলার প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. হুমায়ুন কবীর সহকারী প্রক্টরের পদ থেকে পদত্যাগ করেন।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন গঠিন তদন্ত দলের আহ্বায়ক মো. আলমগীরের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্য বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বুধবার পৌঁছান। ছাত্র-শিক্ষক সবার সঙ্গে কথা বলে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করবেন বলে মো. আলমগীর জানিয়েছেন।

এজন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার ভালো পরিবেশ প্রত্যাশী যে কেউ গোপালগঞ্জ সার্কিট হাউজে তাদের সাথে কথা বলতে পারবেন জানিয়ে তিনি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, আন্দোলন, সহিংসতা, দুর্নীতির কোনো তথ্য, ভিডিও চিত্র, ছবি তাদের কাছে জমা দেওয়ার আহ্বানও জানিয়েছেন।

আন্দোলনের অষ্টম দিন বৃহস্পতিবারে মুখে কালো কাপড় বেঁধে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে শিক্ষার্থীরা। সন্ধ্যায় মোমবাতি প্রজ্জ্বলন কর্মসূচি রয়েছে বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।