গত ৬ অগাস্ট থেকে এই বর্ধিত ভাড়ায় গাইবান্ধার কাউন্টারগুলোতে বাসের টিকিট বিক্রি হচ্ছে।
কিন্তু এ ব্যাপারে প্রশাসনের কোনো তৎপড়তা চোখে পড়ছে না।
এদিকে ঢাকাগামী কোনো ট্রেনের টিকিট পাওয়া যাচ্ছে না গাইবান্ধা রেল স্টেশনে। তবে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে কেউ কেউ কিনেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
গাইবান্ধা থেকে চেয়ারকোচগুলোতে ঢাকা যেতে সাধারণত ভাড়া ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। কিন্তু এখন ১৫০০ টাকার নিচে চেয়ারকোচগুলোর কোনো টিকিট পাওয়া যাচ্ছে না।
এসি বাসের টিকিটের দাম ৮৫০ টাকা। এখন সেই ভাড়া ১৭৫০ টাকায় নির্ধারণ করে বিক্রি হচ্ছে কাউন্টারে।
এছাড়া ঢাকাগামী লোকাল বাসগুলোর তিনশত/সাড়ে তিনশত টাকার টিকিট এখন বিক্রি হচ্ছে ১০০০ টাকায়।
গাইবান্ধা থেকে ঢাকাগামী রংপুর ও লালমনি এক্সপ্রেস ট্রেনের সুলভ শ্রেণীর টিকিটের মূল্য ৪৫০ টাকা ও প্রথম শ্রেণির টিকিট বিক্রি হয় ৮৫০ টাকাং। কিন্তু এখন সেই টিকিট এক শ্রেণির দালাল থেকে কিনতে হচ্ছে সুলভ শ্রেণি ১০০০ টাকা ও প্রথম শ্রেণি ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকায়।
ঢাকামুখী যাত্রী গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরের এনামুল হক লিকসন বলেন, ঢাকা থেকে গত ৮ অগাস্ট বাড়ি এসেছেন। তারপর থেকেই বেশ কয়েকদিন ঢাকা যাওয়ার জন্য গাইবান্ধার একাধিক পরিবহনের কাউন্টারে ঘুরে কোনো টিকিট পাননি।
“অবশেষে অরিন পরিবহনের এসি কোচ সার্ভিসের ৮৫০ টাকার টিকিট ১৭৫০ টাকায় কিনে গত শনিবার (১৭ অগাস্ট) রাত ১০টার বাসে ঢাকা ফিরলাম।”
ঢাকামুখী যাত্রী মাহমুদা বেগম বলেন, “সাধারণত চেয়ার কোচে আমরা ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা ভাড়া দিয়ে গাইবান্ধা থেকে ঢাকা যাই। কিন্তু ঈদ উপলক্ষে সেই টিকিট আলহামরা পরিবহনের কাউন্টার থেকে ১০৫০ টাকায় ক্রয় করতে হলো।”
ঢাকাগামী আর এক যাত্রী গাইবান্ধা সদরের তালুক মন্দুয়ারের শরিফুল ইসলাম ঢাকায় পোশাক শিল্পে কাজ করেন।
তিনি বলেন, “আমরা নিম্ন আয়ের মানুষ, গ্রাম থেকে ঢাকায় যাই লোকাল বাসে করে মাত্র ৩০০ থেকে সাড়ে ৩০০ টাকা ভাড়ায়। কিন্তু ঈদ উপলক্ষে সেই ভাড়া এখন ১০০০ টাকা নির্ধারণ করেছে বাস মালিকরা। বাধ্য হয়ে গত শনিবার সন্ধ্যায় ১০০০ টাকায় টিকিট কিনে ঢাকা যাত্রা করি।”
রোববার দুপুরে অরিন পরিবহনের গাইবান্ধা কাউন্টারের ম্যানেজার পলাশ মিয়া বলেন, এসি কোচগুলোর টিকিটের দাম ১৭৫০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু চেয়ারকোচগুলোর টিকিট ৫৫০ টাকাই রয়েছে। তবে ঢাকাগামী কোনো বাসের টিকিট নাই।
আলহামরা পরিবহনের গাইবান্ধা কাউন্টারের ম্যানেজার মোহাম্মদ পলাশ বলেন, “আপাতত আগামী এক সপ্তাহের ঢাকাগামী কোনো টিকিট তাদের নেই। সব বিক্রি হয়ে গেছে।”
রোববার গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরের লোকাল বাস কাউন্টারের ম্যানেজার মোস্তা মিয়া বলেন, “বাসের মালিক ভাড়া বাড়িয়ে দিয়েছে। আমাদের কিছু করার নাই। আমরা টিকিট বিক্রির টাকার কমিশন পাই মাত্র।”
অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়ে গাইবান্ধা বিআরটিএ-এর উপ-পরিচালক ময়নুল হোসেন বলেন, এ নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে বিষয়টি দেখা হবে।
“এসি বাসের ভাড়া এখন পর্যন্ত বিআরটিএ কর্তৃক নির্ধারণ করা হয় নাই। তাই এক্ষেত্রে আমাদের কিছু করার নাই।”
ঢাকাগামী যাত্রী মাহমুদুল হক বলেন, “এমনিতেই সাধারণত ঢাকা যাওয়ার ট্রেনের টিকিট গাইবান্ধা স্টেশনে পাওয়া যায় না। আর ঈদ উপলক্ষে তো কথাই নাই। কিছু দালাল রয়েছে স্টেশনে। তাদেরকে কিছু বাড়তি টাকা দিলেই মেলে যেকোনো দিনের ট্রেনের টিকিট।”
গাইবান্ধা রেল স্টেশন মাস্টার আবুল কাশেম বলেন, “আগামী ২৭ অগাস্ট পর্যন্ত ঢাকাগামী কোনো ট্রেনের টিকিট স্টেশনে নাই।”