দুধ বিক্রি করতে না পেরে রাস্তায় ঢেলে প্রতিবাদ

উচ্চ আদালতের নির্দেশ মোতাবেক দুধ বেচতে না পেরে পাবনার খামারিরা রাস্তায় ঢেলে প্রতিবাদ করেছেন।

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিপাবনা ওবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 July 2019, 11:35 AM
Updated : 29 July 2019, 11:41 AM

কয়েক দিন বিক্রি বন্ধ থাকলে এ অঞ্চলের দুগ্ধ শিল্প ধ্বংস হয়ে যাবে বলে সতর্ক করেছেন ভাঙ্গুড়ার পৌরমেয়র গোলাম হাসনায়েন রাসেল।

দুধে ক্ষতিকারক উপাদান থাকায় ১৪ প্রতিষ্ঠানের ওপর দুধ সংগ্রহ, প্রক্রিয়াকরণ ও বিপণনে উচ্চ আদালত রোববার পাঁচ সপ্তাহের নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় দুধ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন খামামিরা।

সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়িঘাট দুগ্ধ সমিতির ব্যবস্থাপক অমিয় কুমার মণ্ডল বলেন, পাবনা ও সিরাজগঞ্জ মিলে শুধুধ মিল্কভিটায় প্রায় সাড়ে ৫০০ সমিতির ২৫ হাজার খামারি দুধ সরবরাহ করেন। সোমবার সকাল থেকে মিল্কভিটা দুধ না নেওয়ায় খামারিরা বিপাকে পড়েছেন।

মিল্কভিটা সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার প্রায় পাঁচ হাজার খামার থেকে প্রতিদিন প্রায় এক লাখ লিটার দুধ সংগ্রহ করে বলে জানিয়েছে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা কায়সার হোসেন।

তাছাড়া প্রাণ, আকিজ, আফতাবসহ প্রায় সব পাস্তুরিত দুধ কোম্পানি পাবনা ও সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা থেকে দুধ সংগ্রহ করে।

বাঘাবাড়ি মিল্কভিটার উপ-মহাব্যবস্থাপক এএফএম ইদ্রিস আলী বলেন, “উচ্চ আদালতের আদেশে দুধ সংগ্রহ বন্ধ রাখা হয়েছে। আবার আদালতের নির্দেশ পেলে দুধ সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু করা হবে।”

পাবনার ভাঙ্গুড়ার পৌরমেয়র ও দুগ্ধ খামারি গোলাম হাসনায়েন রাসেল বলেন, “ভাঙ্গুড়া ও আশপাশের এলাকা থেকে মিল্কভিটা ছাড়াও প্রাণ, আকিজ ও ব্র্যাক ডেইরি অর্ধশতাধিক কেন্দ্রের মাধ্যমে দুধ সংগ্রহ করে।

“প্রতিদিন কেবল ভাঙ্গুড়াতেই প্রায় ৬০ হাজার লিটার দুধ উৎপাদিত হয়। মিষ্টির দোকান, বেকারিসহ খুচরা বাজারে ১০ টাকা লিটার দরেও দুধ বিক্রি করা যাচ্ছে না। এই অবস্থা কয়েক দিন চললেই এ অঞ্চলের দুগ্ধ শিল্প ধ্বংস হয়ে যাবে।”

ভাঙ্গুড়া উপজেলার পাথরঘাটা গ্রামের গোখামারী হারুন অর রশিদ বলেন, ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে তিনি আটটি গরু কিনে খামার করেছেন। গত দুই মাস ধরে ক্রমাগত লোকসানে দুটি গরু বিক্রি করে দিতে বাধ্য হয়েছেন। সোমবার সকাল থেকে প্রায় ৩০ লিটার দুধ নিয়ে বিভিন্ন স্থানে ধর্ণা দিয়েও বিক্রি করতে পারেননি। ক্ষোভে দুঃখে দুপুরে ভাঙ্গুড়া বাজারে সব দুধ রাস্তায় ঢেলে দিয়েছেন।

পাবনার জেলা প্রশাসক কবির মাহমুদ বলেন, “খামারিদের আকস্মিক সংকটের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। সরকার তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল। প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তাদের নিয়ে এ সংকট মোকাবিলায় দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”