ফেনীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম জাকির হোসাইন বুধবার এ আদেশ দেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পুলিশ বুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআইয়ের পরিদর্শক শাহ আলম জানান, দুপুরে সিরাজ-উদ-দৌলাকে আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের হেফাজতে (রিমান্ড) নেওয়ার আবেদন করা হয়। আদালতে দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।
এ সময় আদালতে সিরাজ-উদ-দৌলার পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। পরে শুনানি শেষে তাকে কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয় বলে শাহ আলম জানান।
মামলার বরাত দিয়ে শাহ আলম বলেন, গত ২৭ মার্চ সকালে মাদ্রাসার সে সময়ের অধ্যক্ষ সিরাজ আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে তার কক্ষে ডেকে নিয়ে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন।
“এ ঘটনায় নুসরাতের মা সোনাগাজী মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন। পুলিশ ওই দিনই মাদ্রাসার অধ্যক্ষকে গ্রেপ্তার করে আদালতে হাজির করলে তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়।”
এরপর ৬ এপ্রিল নুসরাত আলিমের আরবি প্রথম পত্র পরীক্ষা দিতে মাদ্রাসায় গেলে কয়েকজন সহপাঠী শিক্ষার্থী তাকে কৌশলে ডেকে মাদ্রাসার সাইক্লোন সেন্টারের ছাদে নিয়ে যায়।
পরে তাকে বোরকা পরা একদল লোক তাকে সিরাজ-উদ-দৌলার বিরুদ্ধে শ্লীলতহানির মামলা তুলে নিতে চাপ দেয়। নুসরাত এতে রাজি না হলে তারা তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ১০ এপ্রিল রাতে নুসরাতের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় সারাদেশে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়।
এ ঘটনায় সিরাজকে প্রধান আসামি করে আটজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত পরিচয় আরও ৪/৫ জনকে আসামি করে নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান ৮ এপ্রিল সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।
ওই মামলায় এজহারভুক্ত আটজনসহ ২১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
এদের মধ্যে সিরাজ-উদ-দৌলাসহ ১২ জন হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। সিরাজকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
নুসরাতের মায়ের দায়ের করা শ্লীলতাহানির মামলা ও নুসরাতের ভাইয়ের দায়ের করা হত্যা মামলা ফেনীর পিবিআই তদন্ত করছে।