নারী চিকিৎসককে হুমকি: গ্রেপ্তারের দুই ঘণ্টার মাথায় ছাত্রলীগ নেতা মুক্ত

সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক নারী ইন্টার্ন চিকিৎসককে ‘ছুরি দেখিয়ে হত্যার’ হুমকি দেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়ার দুই ঘণ্টার মাথায় জামিনের কাগজ দেখিয়ে বেরিয়ে গেছেন ছাত্রলীগ নেতা সারোয়ার হোসেন।

সিলেট প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 May 2019, 10:55 AM
Updated : 14 May 2019, 02:57 PM

পাঁচ দিন আগে এক রোগীকে নিয়ে উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে তুলকালাম বাধানো এই সারোয়ার হোসেন সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি।

ওই ঘটনায় সোমবার রাতে সারোয়ারের নামে মামলা হওয়ার পর মঙ্গলবার বেলা ১টার দিকে তাকে গ্রেপ্তার করার কথা জানান সিলেট কোতোয়ালি থানার ওসি সেলিম মিয়া।

কিন্তু বেলা ৩টার দিকে থানায় গিয়ে সারোয়ারের জামিনের কাগজ দেখিয়ে তাকে মুক্ত করে নিয়ে যান তার আইনজীবী।

ওসি সেলিম মিয়া বলেন, “কাল রাতে মামলা হওয়ার পর সারোয়ার আজ আদালতে গিয়ে আত্মসমর্পণ করে জামিন পান। কিন্তু বিষয়টি আমাদের জানা ছিল না। আদালত থেকে ফেরার সময় আমরা তাকে গ্রেপ্তার করি।

“সারোয়ার সে সময় জামিনের কথা বললেও কাগজ দেখাতে না পারায় তাকে থানায় নিয়ে আসা হয়। পরে তার আইনজীবী জামিনের কাগজ নিয়ে এলে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।”

গত বৃহস্পতিবার বিকালে ছাত্রলীগের ১০-১৫ জন নেতাকর্মী তাদের এক সহযোগীকে নিয়ে চিকিৎসার জন্য সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান। কর্তব্যরত ইন্টার্ন চিকিৎসক রোগীর সঙ্গে একজন থেকে বাকিদের বাইরে যেতে বললে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন সারোয়ার।

কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ছাত্রলীগ নেতা সারোয়ার ছুরি দেখিয়ে হত্যার হুমকি দেন বলে ওই চিকিৎসকের অভিযোগ।

ওই চিকিৎসক ঘটনার বিবরণ তুলে ধরে ফেইসবুকে পোস্ট দিলে তুমুল আলোচনা শুরু হয়। চিৎকার করে সারোয়ারের গালিগালাজ ও হুমকি-ধামকি এবং তার মারমুখী আচরণের একটি ভিডিও ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।   

ওই ঘটনার পর থেকেই সারোয়ারকে গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন ও কর্মবিরতির মত কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।

মঙ্গলবার দুপুরে সিলেট জেলা ও দায়রা জজ আদালত এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছেন কোতোয়ালি থানার ওসি সেলিম মিয়া।

এর মধ্যে গত ১১ মে বিকালে উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক (প্রশাসন)  ফেরদৌস হাসান কোতোয়ালি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।

পরে সোমবার রাতে তিনি সারোয়ারের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৮/১০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।

এরপর মঙ্গলবার সকালে সারোয়ার আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইলে অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মোসতাইন বিল্লাহ জামিন মঞ্জুর করেন বলে জানান ওসি।