রোববার সিরাজগঞ্জ ও পাবনায় এ দুটি দুর্ঘটনা ঘটে।
আহত জিসান (৪) ও জুঁথিকে (১৪) রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। দুজনেরই মাথায় গুরুতর আঘাত লেগেছে বলে চিকিৎসক জানিয়েছেন।
এদিকে, দুস্কৃতিকারীদের খুঁজে বের করে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়ে আহত শিশুদের চিকিৎসার দায়িত্ব নেওয়ার কথা জানিয়েছেন পশ্চিমাঞ্চল রেলের মহাব্যবস্থাপক খোন্দকার শহিদুল ইসলাম।
জিসানের বাবা আবদুস সালাম বলেন, রোববার বিকাল ৪টায় পরিবারের সঙ্গে পদ্মা এক্সপ্রেসে রাজশাহী থেকে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করে জিসান। সন্ধ্যার দিকে জামতৈল স্টেশন পার হওয়ার পরপরই চলন্ত ট্রেনের জানালা দিয়ে একটি পাথর সরাসরি এসে লাগে জিসানের মাথায়।
“সঙ্গে সঙ্গে প্রচণ্ড রক্তপাত শুরু হয়। প্রথমে সিজানকে নেওয়া হয় সিরাজগঞ্জ হাসপাতালে। সেখানে অবস্থার উন্নতি না হলে পাঠানো হয় রাজশাহী মেডিকেলে।”
আবদুস সালাম আরও জানান, জিসানকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে। রোববার রাতে তার মাথায় অস্ত্রোপচার করা হয়।
তাকেও মাথার আঘাত নিয়ে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী রেজিস্ট্রার সাইদুজ্জামান বলেন, আহত দুই শিশুর অবস্থাই আশঙ্কাজনক। তাদের ৭২ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। এরপর তাদের অবস্থা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে।
সোমবার দুপুরে আহত শিশুদের দেখতে হাসপাতালে যান পশ্চিমাঞ্চল রেলের মাহব্যবস্থাপক খোন্দকার শহিদুল ইসলাম। এসময় তিনি আহত শিশুদের চিকিৎসার দায়িত্ব নেওয়ার পাশাপাশি দুষ্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানান।
তিনি জানান, গত এক বছরে চলন্ত ট্রেনে ৩০টির মতো পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত হয় ১৭ জন। যাদের মধ্যে গত বছর নিহত হন এক রেল কর্মকর্তা।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের এই জিএম আরও বলেন, রাজশাহী-ঢাকা-রাজশাহী পথে পাথর নিক্ষেপের ঘটনা বেড়ে গেছে। ফলে ট্রেন চলাকালীন জানালা বাধ্যতামূলকভাবে বন্ধ রাখার নির্দেশ জারি করা হয়েছে দায়িত্বরতদের। পাশাপাশি পাথর নিক্ষেপের মাধ্যমে জানমাল ও রাষ্ট্রীয় সম্পদের অনিষ্টকারী দুর্বৃত্তদের শিগগিরই চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি পদক্ষেপের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে রেলওয়ের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়েছে।
রাজশাহী-ঢাকা-রাজশাহী রেলযাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়ে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেছেন, এ পথে ট্রেনের সংখ্যা বাড়ার পাশাপাশি রেলের যাত্রীও বেড়েছে। তবে ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের ঘটনা চলতে থাকলে যাত্রীরা ট্রেনবিমুখ হয়ে পড়বে। এতে বরং সরকারই প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তিনি দ্রুত পাথর নিক্ষেপকারীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার জন্য রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।