বগুড়ায় শাহীন হত্যা ‘ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বে’

বগুড়া সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলম শাহীন খুনের ঘটনায় দলটি পাঁচ দিনের কর্মসূচি দিলেও নিহতের ভাই এটিকে অরাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড বলে দাবি করছেন।

বগুড়া প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 April 2019, 03:02 PM
Updated : 15 April 2019, 03:53 PM

রোববার রাতে বগুড়া শহরের নিশিন্দারা এলাকায় ছুরিকাঘাতে নিহত হন মাহবুব আলম শাহীন।

সোমবার নিজ এলাকা ধরমপুর খেলার মাঠ ও জেলা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে নামাজে জানাজার পর পারিবারিক গোরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

শাহীনের বড়ো ভাই হাজী ফেরদৌস বলেন, জেলা মোটর মালিক গ্রুপের দ্বন্দ্ব নিয়ে তার ছোটোভাই শাহীন খুন হয়েছেন। পারিবারিক সিদ্ধান্তের পর মামলা দায়ের করা হবে।

মাহবুব আলম শাহীন

তিনি বলেন, “জেলা মোটর মালিক গ্রুপের দুটিপক্ষ। একপক্ষে ছিল আমার ভাই শাহীন। তার সাথে একই গ্রুপে ছিল নুনগোলার চেয়ারম্যান আলিমুদ্দিন। দুজন একসাথে উপশহরে প্রতিদিন আড্ডা দেয়। খুনের সময় একই সাথে তারা ছিল। শাহীনকে হাসপাতাল পর্যন্ত নিয়ে গেলেও বাসায় ফোন দেয়নি। এমনকি লাশ বাড়িতে নিয়ে আসলেও তিনি লাশ দেখতে আসেনি।”

বগুড়া সদর থানার ওসি এসএম বদিউজ্জামান বলেন, “পরিবারের পক্ষ থেকে আজ রাতে মামলা করা হবে বলে জেনেছি। মামলা না হলেও আসামি গ্রেপ্তার ও শনাক্তের জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি।”

জেলা বিএনপির সভাপতি ভিপি সাইফুল ইসলাম বলেন, সারাদেশে বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার ও হত্যা করা হচ্ছে। মাহবুব আলম শাহীনের হত্যার প্রতিবাদে জেলা বিএনপি কালো ব্যাচ ধারণ ও দলীয় অফিসে কালো পতাকা উত্তোলন, দলীয় পতাকা অর্ধনমিক রাখা, ১৬ এপ্রিল সকাল ১০টায় শোক র‌্যালি,  ১৭ এপ্রিল প্রতিবাদ সমাবেশ, ১৮ এপ্রিল মানববন্ধন, ২০ এপ্রিল স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিল করবে।

এদিকে, অ্যাডভোকেট শাহীন খুনের ঘটনায় জড়িতদের আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবিতে জেলা আইনজীবী সমিতি শহরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে। পরে জজ আদালতের সামনের রাস্তায় এক প্রতিবাদ সভা করে।

সভায় বক্তারা অবিলম্বে শাহীনের হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি করেন।

ছেলেকে সান্ত্বনা দিচ্ছেন সহপাঠীরা

নরেশ চন্দ্র সরকারের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সদস্য রেজাউল করিম মন্টু, বগুড়া বারের সভাপতি আতাউর রহমান, সাধারণ সম্পাদক একেএম সাইফুল ইসলাম, পাবলিকক প্রসিকিউটর (পিপি) আব্দুল মতিন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-০১ এর স্পেশাল পিপি নরেশ মুখার্জ্জী, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বাছেত প্রমুখ।

শাহীন হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সোমবার বগুড়ার আদালতে সকল কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়। আইনজীবী সমিতি মঙ্গলবার কালো ব্যাজ ধারণ ও বুধবার মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।

উপশহর এলাকার চাউলের দোকানদার আবু তাহের বলেন, রোববার রাত সাড়ে ১১টার দিকে বগুড়া শহরের নিশিন্দারায় হাউজিং এস্টেট এলাকার উপশহর কাঁচাবাজারে মাহবুব আলম শাহীন ও আলিমুদ্দিন আসেন।

“শাহীন দোকান থেকে চাউল কিনে গাড়িতে ওঠান। এমন সময় একটি ফোন আসে। শাহীন ফোনটি ধরে একটু ফাঁকে চলে যান। ওই সময়ই ৫/৬ জন সন্ত্রাসী শাহীনকে বুকে ও পেটে এলোপাতাড়ি ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে পালিয়ে যায়।”

এ ব্যাপারে আলিমুদ্দিনের মোবাইলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম থেকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, “ফোনে এত কথা বলা যাবে না। সামনাসামনি আসেন, বলব।”

তখন কোথায় যেতে হবে জিজ্ঞেস করলে তিনি সময় নেই বলে ফোন কেটে দেন।