স্বামীকে আটকে ধর্ষণ: আটক ৩ জনের স্বীকারোক্তি

টাঙ্গাইল শহরে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে দলবেঁধে কয়েক দফায় ধর্ষণের অভিযোগে পুলিশ ছয়জনকে আটক করেছে। এদের মধ্যে তিনজন আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছে।

টাঙ্গাইল প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 April 2019, 06:12 PM
Updated : 13 April 2019, 06:12 PM

এদিকে, পরীক্ষায় ধর্ষণের আলামত পাওয়ার কথা জানিয়েছেন চিকিৎসক।

জেলা শহরের নতুন বাস টার্মিনাল এলাকায় শুক্রবার রাতে স্বামীকে আটকে রেখে এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে।

গ্রেপ্তাররা হলেন টাঙ্গাইল সদরের কোদালিয়ার আলম মিয়ার ছেলে ইউসুফ রানা (২৫), আব্দুল রশীদের ছেলে রবিন (২৫), রবিকুল ইসলামের ছেলে তানজীরুল ইসলাম তাছিন (২২), ৮ তলা মোড় এলাকার মৃত মজনু মিয়ার ছেলে মফিজ (২১), আল বিরুনীর ছেলে ইব্রাহিম (২০) ও দেওলা গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে জাহিদুল ইসলাম (২১)।

এছাড়া পলাতক রয়েছেন দেওলা এলাকার হাসান সিকদার (২২) ও প্রাইভেটকার চালক উজ্জ্বল (২৫)।

মামলার বরাত দিয়ে সায়েদুর রহমান বলেন, শুক্রবার সকালে এক ব্যক্তি তার স্ত্রীকে নিয়ে টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার আউলিয়াবাদ বেড়াতে যান। রাতেই তারা কালিহাতী থেকে সিএনজি চালিত অটোরিকশাযোগে এলেঙ্গা এবং সেখান থেকে বাসযোগে নুতন বাসস্ট্যান্ড নাভানা পেট্রোল পাম্পের সামনে রাত সাড়ে ১০টায় নামেন।

সেখান থেকে স্বামী-স্ত্রীর কর্মস্থল মির্জাপুরের গোড়াই যাওয়ার জন্য যানবাহন খুঁজছিলেন। এ সময় আটজন বখাটে স্বামীকে পাম্পের পিছনে নিয়ে মারপিট করে মোবাইল ও টাকা পয়সা নিয়ে নেয় বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়।

ওসি বলেন, স্বামীকে মারপিট করতে দেখে স্ত্রী এগিয়ে গেলে আসামি ইউসুফ রানা নাভানা পেট্রোল পাম্পের পিছনে এবং ডিসি লেকের পাশে রবিন ধর্ষণ করে। পরে ইউসুফ আবার ধর্ষণ করে।

“পরবর্তীতে রবিন মোটরসাইকেলে জোরপূর্বক মেয়েটির স্বামীকে উঠিয়ে দেওলা নার্সারির সামনে নামিয়ে দিয়ে চলে যায় বল মামলায় বলা হয়।”

ওসি বলেন, এরপর রবিন ওই নারীকে মোটরসাইকেলে তুলে সাবালিয়া এলাকার চোরজানা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়ে যায়। সেখানে আবার কয়েকজনে ধর্ষণ করে।

“পরে ওই নারীর স্বামী হাসপাতাল গেটে টহলরত পুলিশকে জানালে পুলিশ অভিযান চালিয়ে চোরজানা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বারান্দা থেকে গৃহবধূকে উদ্ধার ও রবিনকে গ্রেপ্তার করে।”

ওসি বলেন, পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতি বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে এ ঘটনায় জড়িত অপর পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ওসি সায়েদুর রহমান আরও জানান, এ ঘটনায় গৃহবধূর স্বামী বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। রাতেই দেওলা পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর মোশারফ হোসেনের নেতৃত্বে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

“গ্রেপ্তাররা ধর্ষণের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। ধর্ষিতা গৃহবধূকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতলে ভর্তি করে ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়েছে।”

বাকি দুই আসামিকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে ওসি জানান।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন বলেন, নির্যাতিতা ২২ ধারায় বিচারিক হাকিম সুমন কুমার সরকারের কাছে জবানবন্দি দিয়েছেন।

“এছাড়া মামলার তিন আসামি মো. ইউসুফ রানা, রবিন ও জাহিদুল ইসলাম ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় ধর্ষণের কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।”

টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের গাইনি বিভাগের কনসালটেন্ট জাকিয়া সুলতানা প্রাথমিকভাবে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন।

টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় এক প্রেস ব্রিফিং-এ বলেন, গ্রেপ্তারদের আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড চাওয়া হবে। জড়িত অন্য দুই আসামি হাসান সিকদার ও উজ্জ্বলকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হচ্ছে।