ক্রাইস্টচার্চে নিহত মোজাম্মেলের লাশ চাঁদপুরে দাফন

নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত মোজাম্মেল হক সেলিমের লাশ চাঁদপুরে তার গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়েছে।

চাঁদপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 March 2019, 10:07 AM
Updated : 28 March 2019, 10:07 AM

বৃহস্পতিবার বাদ যোহর মতলব দক্ষিণ উপজেলার খাঁদেরগাও ইউনিয়নে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

এর আগে বুধবার রাতে নিউজিল্যান্ড থেকে মোজাম্মেলের লাশ নিয়ে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান তার ভাই শাহাদাত হোসেন।

বৃহস্পতিবার সকাল ৭টায় লাশ হুরমহিষা মিয়াজী বাড়িতে পৌঁছালে আত্মীয় স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীদের কান্নায় পরিবেশ ভারি হয়ে ওঠে।

গত ১৮ মার্চ শুক্রবার জুমার নামাজের সময় ক্রাইস্টচার্চের আল নূর ও লিনউড মসজিদে ঢুকে সেমি অটোমেটিক রাইফেল দিয়ে গুলি চালিয়ে ৫০ জনকে হত্যা করে বর্ণবাদী এক অস্ট্রেলীয় যুবক।

হামলার ঘটনার সময় একটি মসজিদে জুমার নামাজ পড়তে যাচ্ছিলেন নিউ জিল্যান্ড সফরে থাকা বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের কয়েকজন সদস্য। অল্পের জন্য তারা প্রাণে বেঁচে যান।

ওই হামলায় নিহতদের মধ্যে পাঁচজন বাংলাদেশির থাকার খবর পরে নিশ্চিত করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমিন।

মতলব দক্ষিণ উপজেলার নারায়ণপুর পপুলার উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশের পর ঢাকায় চলে যান মোজাম্মেল।সেখানে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে রাজধানীর মিরপুরের একটি বেসরকারি একটি মেডিকেল কলেজ থেকে ডেন্টাল পাস করেন।উচ্চতর ডিগ্রি নিতে সাড়ে তিনবছর আগে নিউজিল্যান্ডে পাড়ি জানান তিনি।

তিন ভাই, দুই বোনের মধ্যে মোজাম্মেল ছিলেন সবার ছোট।সংসারে রয়েছে মা জামেলা বেগম; বাবা হাবিবউল্লাহ মিজি মারা গেছেন অনেক আগে।

মোজাম্মেলের আগামী দুই তিন মাসের মধ্যে দেশে আসার কথা ছিল।মোজাম্মেলেন ফিরলেন ঠিকই; কিন্তু লাশ হয়ে।ছেলেকে প্রাণহীন দেখে বৃদ্ধ জামেলা বেগম বাকরুদ্ধ।

মোজাম্মেলের বড়ভাই আব্দুল মালেক বলেন,“অনেক কষ্ট করে এই ভাইকে মানুষ করেছিলাম। কিন্তু আদরের ছোট ভাইয়ের এমন মৃত্যুতে আমাদের সব স্বপ্ন চুরমার হয়ে গেছে।”

বড় বোন জ্যোৎস্না বেগম বলেন, “প্রায় ২০ লাখ টাকা ঋণ করে মোজাম্মেলকে নিউজিল্যান্ডে পাঠানো হয়। কিন্তু তার এমন মৃত্যুতে পরিবারের সদস্যরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে।”

ক্রাইস্টচার্চের আল-নুর মসজিদে জুম্মার নামাজ পড়তে গিয়ে বন্দুকধারীর গুলিতে আহত হন মোজাম্মেল।পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।