কুমিল্লার ইটভাটায় ট্রাক উল্টে ১৩ শ্রমিকের মৃত্যু

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে একটি ইটভাটায় কয়লাবাহী ট্রাক উল্টে শ্রমিকদের থাকার ঘরের ওপর পড়ে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে, আহত অবস্থায় আরও দুইজনকে পাঠানো হয়েছে হাসপাতালে।

কুমিল্লা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Jan 2019, 03:24 AM
Updated : 25 Jan 2019, 12:49 PM

শুক্রবার ভোর সোয়া ৫টার দিকে উপজেলার ঘোলপাশা ইউনিয়নের নারায়ণপুর এলাকায় কাজী অ্যান্ড কোং নামের একটি ইটভাটার এ ঘটনা ঘটে বলে চৌদ্দগ্রাম থানার ওসি আবদুল্লাহ আল মাহফুজ জানান।

নিহতরা সবাই পুরুষ, নীলফামারী জেলার জলঢাকা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম থেকে এসে ওই ইটভাটায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করছিলেন তারা। 

এরা হলেন- নীলফামারী জেলার জলঢাকা উপজেলার নিজপাড়া গ্রামের রঞ্জিত চন্দ্র রায় (৩০), তপন চন্দ্র রায় (২৫), মো. সেলিম (২৮), বিপ্লব (১৯), শংকর চন্দ্র রায় (২২), দীপু চন্দ্র রায় (১৯), অমিত চন্দ্র রায় (২০), পাঠানপাড়া গ্রামের মোরসালিন (১৮), মো. মাসুম (১৮), শিমুলবাড়ি গ্রামের মনোরঞ্জন চন্দ্র রায় (১৯), মৃণাল চন্দ্র রায়(২১), রাজবাড়ি গ্রামের বিকাশ চন্দ্র রায় (২৮) ও কলেক চন্দ্র রায় (৩৫)। 

কুমিল্লা ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা নাজির আহমেদ ঘটনাস্থল থেকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ওই ট্রাকে করে ভাটার জন্য কয়লা নিয়ে আসা হয়েছিল। কয়লার স্তূপের পাশেই একটি টিনশেড ঘরে শ্রমিকদের থাকার ব্যবস্থা করেছিল ভাটার মালিকপক্ষ। ঘটনা যখন ঘটে তখন ১৫ জন শ্রমিক ভেতরে ঘুমাচ্ছিলেন।

“ট্রাকের চালক কয়লা নামানোর জন্য ব্যাক গিয়ারে স্তূপের দিকে যাওয়ার সময় নিয়ন্ত্রণ হারান। ট্রাকটি তখন উল্টে ওই ঘরের ওপর পড়ে।”

এতে ঘটনাস্থলেই ১২ শ্রমিকের মৃত্যু হয়। চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পথে মারা যান আরেক শ্রমিক।

আহত দুজনকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা নাজির আহমেদ জানান। 

দুর্ঘটনার খবর পেয়ে কুমিল্লার জেলা প্রশাসক আবুল ফজল মীর, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মো. শহিদুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল মামুন, উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুস সোবহান ভূঁইয়া হাসান, ঘোলপাশা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী জাফরসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে আসেন।

জেলা প্রশাসক আবুল ফজল মীর নিহতদের সৎকারের জন্য প্রত্যেকের পরিবারকে ২০ হাজার টাকা করে দেয়ার ঘোষণা দেন।

চৌদ্দগ্রাম থানার ওসি আবদুল্লাহ আল মাহফুজ বলেন, নিহতদের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ট্রাকের চালক ও হেলপার পলাতক রয়েছে।

তবে ভাটার ব্যবস্থাপক কামরুর ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে বলে তিনি জানান।