মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৪টায় রাজধানীর সিটি হাসপাতালে তিনি শেষ নিশ্বাঃস ত্যাগ করেন। তার স্ত্রী, দুই ছেলে, দুই মেয়ে রয়েছে।
বিকাল ৫টায় শেরপুর পৌর ঈদগাহ মাঠে জানাজা শেষে জেলা শহরের মধ্যশেরি মহল্লার পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
মঙ্গলবার বাদ আসর শেরপুর পৌর ঈদগাহ মাঠে জানাজা শেষে ভাষা সৈনিক সৈয়দ আব্দুল হান্নানের মরদেহ শহরের মধ্যশেরি মহল্লার পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।
এর আগে জেলা প্রশাসন ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে তার কফিনে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
পরিবারের সদস্য ও স্থানীয়দের কাছে জানা যায়, সৈয়দ আব্দুল হান্নান শেরপুরের একজন সর্বজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব। শেরপুরে তিনি ‘হান্নান স্যার’হিসেবে পরিচিত। আব্দুল হান্নান ১৯৩২ সালে ২৫ ডিসেম্বর শেরপুরে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা সৈয়দ আব্দুল হালিম ও মা রাবেয়া খাতুন।
১৯৫২ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ছাত্র থাকা অবস্থায় ভাষা আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। তার বড় ভাই ছাত্রনেতা সৈয়দ আব্দুস সাত্তারও ভাষা সংগ্রামী ছিলেন।
১৯৫২ সালে বগুড়ার আজিজুল হক কলেজ থেকে তিনি আইএসসি পাস করে ওই বছরই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি ১৯৫৬ সালে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ে মাস্টার্স এবং ১৯৬৪ সালে এলএলবি পাস করেন।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা করার কারণে তিনি শেরপুরে তিন বার গ্রেপ্তার হয়ে কারাভোগ করেন এবং সেই সময়ে আলবদর বাহিনীর হাতে নির্যাতনের শিকার হন। তাকে চুন কালি মাখিয়ে অর্ধউলঙ্গ অবস্থায় শেরপুর শহরের রাস্তায় ঘোরানো হয়।
অন্যান্য অপরাধে মৃত্যুদণ্ড ছাড়াও সৈয়দ আব্দুল হান্নানকে নির্যাতন ও নিগৃহীত করার অপরাধে যুদ্ধাপরাধী কামারুজ্জামানকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডও দেয়।
এই ভাষাসৈনিকের মৃত্যুতে সংসদ সদস্য আতিউর রহমান আতিক, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবীর রুমান, পৌর মেয়র গোলাম মোহাম্মদ কিবরিয়া লিটন, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ছানুয়ার হোসেন ছানু, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক চন্দন কুমার পাল, জেলা সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের সাধারণ সম্পাদক আখতারুজ্জামানসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।