১৯৭১ সালের এই দিনে মুক্তিযুদ্ধের ১১ নম্বর সেক্টরের অধীন এই রণাঙ্গনে পাকিস্তানি বাহিনীর ১৬২ জন সৈন্য আত্মসমর্পণ করেন।
১১ নম্বর সেক্টরের মুক্তিযোদ্ধা কোম্পানি কমান্ডার বীর প্রতীক সদরুজ্জামান হেলাল জানান, মুক্তিযুদ্ধে ১১ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার ছিলেন বীর উত্তম কর্নেল আবু তাহের। এই সেক্টরের সদর দপ্তর ছিল ভারতের মহেন্দ্রগঞ্জে। এই সেক্টর সদর দপ্তরের অদূরেই ছিল ধানুয়া কামালপুরে পাকসেনাদের শক্তিশালী ঘাঁটি।
এই সেক্টরে নিয়মিত বাহিনীর ৩ হাজার ও গণবাহিনীর ১৯ হাজারসহ মোট ২২ হাজার মুক্তিযোদ্ধা ছিল বলে হেলাল জানান।
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের ১২ জুন থেকে ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকিস্তানি সেনাদের ১০ বার সম্মুখযুদ্ধ হয়েছে। এসব যুদ্ধে ক্যাপ্টেন সালাহ উদ্দিনসহ মোট ১৯৪ জন মুক্তিযোদ্ধা এবং ৪৯৭ জন পাকিস্তানি সেনা ননিহত হন।
কমান্ডার হেলাল বলেন, ১৩ নভেম্বর কর্নেল তাহেরের নেতৃত্বে ও ভারতীয় বাহিনীর সহায়তায় কামালপুর পাকসেনা ক্যাম্পে আক্রমণ করা হয়। সম্মুখযুদ্ধে কামালপুরে শত্রুপক্ষের একজন মেজরসহ দুই কোম্পানি পাকসেনা নিহত হয়।
“১৪ নভেম্বর পাকসেনাদের একটি মর্টার সেলের আঘাতে সেক্টর কমান্ডার কর্নেল আবু তাহের গুরুতর আহত হন।”
হেলাল বলেন, পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ২৪ নভেম্বর থেকে কামালপুর পাকসেনা ক্যাম্প অবরোধ করে রাখেন মুক্তিযোদ্ধারা।
“৪ ডিসেম্বর গ্যারিসন অফিসার আহসান মালিকসহ বেলুচ, পাঠান ও পাঞ্জাবি সৈন্যর ১৬২ জনের একটি দল আনুষ্ঠানিকভাবে যৌথবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণের সাধ্যমে ধানুয়া কামালপুর শত্রুমুক্ত হয়।”
সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম জামালপুর জেলা শাখার সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার আব্দুর রশীদ বলেন, ১১ নম্বর সেক্টরের ধানুয়া কামালপুরে হানাদার বাহিনীর বর্বর হত্যাকাণ্ডের চিহ্ন অনেক গণকবর আর বধ্যভূমি এখন নিশ্চিহ্নের পথে। ব্যক্তি উদ্যোগে কিছু স্মৃতিচিহ্ন সংরক্ষণ করা হলেও বেশিরভাগ গণকবর আর বধ্যভূমি এখনও অরক্ষিত।
সদরুজ্জামান হেলাল বলেন, কামালপুর মুক্ত দিবস সরকারিভাবে পালন করা হয় না; মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্যোগে পালন করা হয়।
দিনটি তিনি সরকারিভাবে পালনের দাবি জানান। দাবি জানান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্নগুলো সরকারিভাবে সংরক্ষণের।