ভারতীয় গরু কমলেও জমজমাট যশোরের পশুর হাট

সীমান্তে কড়াকড়িতে ভারতীয় গরু আসা একেবারেই কমে গেলেও কোরবানির ঈদ সামনে রেখে দেশীয় পশুতে জমজমাট হয়ে উঠেছে যশোরের বাগআচড়া ‘সাতমাইল পশুহাট’।

আসাদুজ্জামান আসাদ, বেনাপোল প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 August 2018, 06:19 AM
Updated : 15 August 2018, 06:19 AM

দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সবচেয়ে বড় এই হাটের সেক্রেটারি আবু তালেব বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ভারতীয় পশু বেচাবিক্রির জন্য এই হাটটি নামকরা। গত তিন বছর ধরে ভারতীয় গরু কম আসায় খামারিদের দেশি গরুতে বাজার সয়লাব হয়ে যাচ্ছে।

“ঈদের প্রতিহাটে অন্তত দুই হাজার গরু বেচাবিক্রি হচ্ছে।”

গরুর ব্যবসার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বেনাপোল থেকে রুদ্রপুর পর্যন্ত সীমান্তের ইছামতি নদীর অংশটুকু বাদে বেশিরভাগ জায়গায় কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে বিজিবি-বিএসএফের যৌথ নজরদারির ফলে সীমান্ত দিয়ে গরু নিয়ে আসা কঠিন।

অবৈধপথে গরু আনার পর শার্শা উপজেলার বেনাপোলের পুটখালী, অগ্রভূলোট, দৌলতপুর ও গোগার চার খাটালে গরুগুলো রাখা হয়, যেগুলো থেকে ভ্যাট আদায় করে ‘নাভারন পশুশুল্ক করিডোর’।

নাভারন পশুশুল্ক করিডোরের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা আঞ্জুমান আরা বেগম জানান, চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই পর্যন্ত) ভারত থেকে বাংলাদেশে আসা পশুর সংখ্যা সাত হাজার ৫২৬টি, যেখানে গত বছর একই সময়ে এই সংখ্যা ছিল ৩৫ হাজার ৬৭৮টি।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “গত বছর প্রতিদিন গড়ে ১৭০টির মত গরু বাংলাদেশে আসে। আর এবার সে সংখ্যা ৩৫টিতে নেমেছে। ঈদকে সামনে রেখে তা আরো কমে এখন দিনে ২০-২২টি গরু আসছে।”

গরু আনতে কোনো বাংলাদেশি রাখালকে ভারতে যেতে দেওয়া হচ্ছে না বলে খুলনা ২১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক মেজর সৈয়দ সোহেল আহমেদ জানিয়েছেন।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশি গরুর রাখালরা যাতে অবৈধভাবে ভারতে গরু আনতে না যায় সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়ে জনসচেতনতামূলক মতবিনিময় সভা করা হচ্ছে।”

গত বৃহস্পতিবারও পুটখালী সীমান্তের এমনি একটি সভায় বক্তব্য রাখেন বিজিবি দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. খালেদ-আল-মামুন ও খুলনার সেক্টর কমান্ডার কর্ণেল মো. তৌহিদুল ইসলাম।

নাম না প্রকাশ করার শর্তে কয়েকজন গরুর রাখাল বলেন, দুই দেশের শূন্যরেখায় যেখানে কাঁটাতারের বেড়া নেই, সেখান দিয়ে কিছু গরু এলেও তা খুবই নগন্য। ভারতীয় রাখালরাই সীমান্তের শূন্যরেখায় এসে গরুগুলো দিয়ে যায়।

তবে ভারতীয় গরু-ছাগল না এলেও কোরবানির পশুহাটে এর কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না বলে যশোরের প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ভবতোষ কান্তি সরকার জানিয়েছেন।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, ২৭ হাজার গরু ও ২০ হাজার ছাগলের চাহিদার বিপরীতে যশোরের প্রায় ১১ হাজার খামারে কোরবানির জন্য ৩৬ হাজার গরু ও ৩২ হাজার ছাগল ও ভেড়া প্রস্তুত করা হয়েছে।