ভেঙে ফেলা হলো শেরপুরের কাকলি সিনেমা হল

বছরের পর বছর লোকসানে দেশের অনেক ঐতিহ্যবাহী প্রেক্ষাগৃহের মত একই ভাগ্য হলো শেরপুরের কাকলি সিনেমা হলের।

শেরপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 July 2018, 06:25 AM
Updated : 22 July 2018, 06:25 AM

শহরের কেন্দ্রস্থল মুন্সীবাজার এলাকায় প্রায় অর্ধশত বছরের পুরনো সিনেমা হলটি ভেঙে সেখানে সাততলা বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করেছে মালিকপক্ষ।    

কাকলি সিনেমা হলের মালিক গোলাম মোহাম্মদ কিবরিয়া লিটন জানান, ১৯৬৯ সালে পরশমণি সিনেমা দিয়ে এ প্রেক্ষাগৃহের যাত্র শুরু হয়েছিল।

আর চলতি বছরের জুন মাসে এ সিনেমা হলের শেষ প্রদশর্নীর সময় চলছিল পোড়ামন-২।

লিটন বলেন, “এই সিনেমা হলে নায়করাজ রাজ্জাক ও নায়িকা ববিতাসহ অনেক বড় বড় অভিনেতা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করে গেছেন। ১৯৭০ সালে এই হলে ছাত্রলীগের সভায় বক্তব্য রেখেছিলেন নূরে আলম সিদ্দিকী।”  

ইতিহাসের নানা ঘটনার সাক্ষী এই হলটি ভেঙে ফেলার কারণ জানতে চাইলে লিটন কলেন, “সিনেমা ব্যবসায় এখন লাভ তো দূরের কথা, আমরা আমাদের খরচও তুলতে পারি না। “

কাকলি সিনেমা হলের জায়গায় সাততলা যে বাণিজ্যিক কমপ্লেক্স গড়ে তোলা হবে, তার পঞ্চম তলায় ছোট একটি সিনেপ্লেক্স রাখার পরিকল্পনা করেছে মালিক পক্ষ। আর নতুন ভবনের চতুর্থ তলা পর্যন্ত থাকবে মার্কেট। ষষ্ঠ ও সপ্তম তলায় হবে গেস্ট হাউজ।

লিটন বলেন, এক সময় শেরপুর শহরে ছয়টি সিনেমা হল ছিল। ঢাকার সঙ্গে তাল মিলিয়ে নতুন ছবি মুক্তি দেওয়ার প্রতিযোগিতা ছিল হলগুলোর মধ্যে; ব্যবসাও ছিল জমজমাট।

কিন্তু বাংলাদেশে সিনেমার মান পড়ে যাওয়ায় এবং ঘরে বসে বিনোদনের অনেক সুযোগ সুবিধা আসায় দর্শক এখন আর হলে আসে না।

ব্যবসায় ধস নামায় নো-হাটা এলাকার ১৪০০ আসনের ‘লিখন’ আর বটতলা গোপালবাড়ী এলাকার ‘মেঘনা’ সিনেমা হল বন্ধ হয়ে গেছে আগেই। কাকলি মার্কেটের চারতলায় পদ্মা সিনেমা হল আগুনে পুড়ে যাওয়ার পর সেটিও আর খোলোনি।

কাকলি ভেঙে ফেলার পর শেরপুরে শহরে এখন চালু আছে কেবল ‘রূপকথা’ আর ‘সত্যবতী’। তবে দর্শক না থাকায় এই শেষ দুটো হলের অবস্থাও ভালো নয়।