সিটি নির্বাচন: প্রতীক পেয়ে প্রচারে প্রার্থীরা

সিলেট, রাজশাহী ও বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটের লড়াইয়ে প্রচারে নেমেছেন প্রতিদ্বন্দ্বী মেয়র প্রার্থীরা।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 July 2018, 11:12 AM
Updated : 10 July 2018, 11:35 AM

মঙ্গলবার প্রতীক পেয়ে গণসংযোগের মাধ্যমে প্রচার শুরু করেন তারা।

তিন সিটি করপোরেশনে আগামী ৩০ জুলাই একসঙ্গে ভোটগ্রহণের কথা রয়েছে।

বরিশাল

 

বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা মুজিবুর রহমান।

সিটি করপোরেশনটিতে মেয়র পদে ছয়জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৯৪ জন এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৩৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

দলীয় পদে মেয়র নির্বাচন হওয়ায় আওয়ামী লীগ প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ নৌকা, বিএনপি প্রার্থী মজিবর রহমান সরোয়ার ধানের শীষ, জাতীয় পার্টির ইকবাল হোসেন তাপস লাঙ্গল, ইসলামী আন্দোলনের ওবাইদুর রহমান মাহবুব হাতপাখা, বাসদের প্রার্থী মনীষা চক্রবর্তী মই এবং সিপিবির প্রার্থী একে আজাদ নির্ধারিত কাস্তে প্রতীকই পেয়েছেন।

প্রতীক বরাদ্দের পরপরই নগরীর সদর রোডে আনুষ্ঠানিক গণসংযোগ করেন বিএনপি প্রার্থী মজিবর রহমান সরোয়ার।

তবে আওয়ামী লীগ প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ আনুষ্ঠানিক গণসংযোগ শুরু না করলেও দুপুরে এক ব্যক্তির জানাজায় যোগ দেন।

এসময় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীর মধ্যে কুশল বিনিময় হয়।

এছাড়া সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে মতবিনিময় সভা করার কথা রয়েছে বিএনপি প্রার্থীর। তার বাসভবনে এ সভা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জিয়াউদ্দিন সিকদার।

মহানগর আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক গোলাম সরোয়ার রাজিব বলেন, সন্ধ্যা ৭টায় এক যোগে নগরীর ৩০ ওয়ার্ডে মিছিলের মধ্যে দিয়ে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রচার শুরু হবে।

রাজশাহী

 

মঙ্গলবার সকাল ৯টায় থেকে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ করা হয়। প্রতীক নিয়ে ভোটের মাঠে নেমে পড়েন তারা।

প্রতীক পাওয়ার পর নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করে ভোটের প্রচার শুরু করেন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন।

আর শাহমখদুম (রঃ) মাজার জিয়ারত করে প্রচার শুরু করেন বিএনপির প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল।

রিটার্নিং অফিসার আমিরুল ইসলাম জানান, প্রথমে সংরক্ষিত আসনের নারী প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক দেওয়া হয়। এরপর মেয়র পদে এবং সব শেষে সাধারণ কাউন্সিলর পদের প্রার্থীদের প্রতীক দেওয়া হয়।

যারা একই প্রতীক চেয়েছেন তাদের মধ্যে লটারির মাধ্যমে প্রতীক দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে আওয়ামী লীগ প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন নৌকা, বিএনপির মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল ধানের শীষ, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (মতিন) হাবিবুর রহমান হাবিবকে কাঁঠাল, ইসলামী আন্দোলনের সরিফুল ইসলাম হাতপাখা, স্বতন্ত্র মুরাদ মোর্শেদকে হাতি প্রতীক দেওয়া হয়েছে।

রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ২১৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে মেয়র পদে পাঁচজন, সাধারণ কাউন্সিলরে ১৬০ জন ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ৫২ জন।

প্রতীক বরাদ্দের পর দলীয় প্রার্থীরা পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুন টাঙ্গানোসহ মাইকে প্রচার শুরু করেন।

প্রতীক পেয়ে দুপুরে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন । ১৪ দফার ইশতেহারে রাজশাহীতে এক লাখ লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থার অঙ্গীকারসহ শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবাকে গুরুত্ব দিয়ে মেগা সিটি গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।

এসময় উপস্থিত ছিলেন ভাষাসৈনিক মোশাররফ হোসেন আখুঞ্জি, আবুল হোসেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি সাইদুর রহমান খান ও আবদুল খালেক, শিক্ষক সাব্বির সাত্তার তপু, নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকারসহ ১৪ দলের নেতৃবৃন্দ।

আর দুপুরে শাহমখদুম (রঃ) মাজার জিয়ারত করে নির্বাচনী প্রচারে নামেন বিএনপির প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল।

এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, অরজকতা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে নগরবাসী শান্তির প্রতীক ধানের শীষে ভোট দিবে এবং বিপুল ভোটে তাকে বিজয়ী করবেন।

এ সময় তার সঙ্গে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু, নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক মিলন, নগর যুবদলের সভাপতি আবুল কালাম আজদ সুইট, সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান রিটন, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম সমাপ্ত নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

সিলেট

 

নির্বাচন কমিশন মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টায় সব মেয়র প্রার্থীকে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়ার পর তারা প্রচারে নামেন।

রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আলিমুজ্জামান বলেন, দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হওয়ায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের নৌকা, বিএনপির আরিফুল হক চৌধুরীর প্রতীক ধানের শীষ, বাসদের আবু জাফরের মই, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনে মোয়াজ্জেম হোসেনের প্রতীক হাতপাখা পূর্বনির্ধারিত।

স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সিলেট মহানগর জামায়াতের আমির এহসানুল মাহবুব জুবায়ের হাতঘড়ি, বিএনপির বিদ্রোহী বদরুজ্জামান সেলিম বাস ও এহসানুল হক তাহের নামে এক প্রার্থী হরিণ প্রতীক বরাদ্দ পেয়েছেন।

মেয়র প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেওয়ার পর কাউন্সিলর পদে ১২৭ জন ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৬২ প্রার্থীকে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে বলে জানান নির্বাচন কর্মকর্তা আলিমুজ্জামান।

আওয়ামী লীগের কামরান ও বিএনপির আরিফুল হযরত শাহজালালের (রহ.) মাজার জিয়ারত করে সেখান থেকেই আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরু করেন।

নগরীর উন্নয়নে তারা তাদের পরিকল্পনা ও প্রতিশ্রুতির কথা জানানোর পাশাপাশি ভোটও চান।

কামরান তার পরিকল্পনার বিষয়ে বলেন, “সিলেটকে একটি পরিকল্পিত ও আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।”

এর আগে তিনি দুইবার মেয়র ছিলেন।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিনসহ দলের নেতাকর্মীরা কামরানের সঙ্গে ছিলেন।

বিএনপির আরিফুলও হযরত শাহজালালের (রহ.) মাজার জিয়ারত করে সেখান থেকেই আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরু করেন।

তিনি বলেন, “নির্বাচন নিয়ে ক্ষমতাসীন দল অনেক ষড়যন্ত্র করছে। তবে নগরবাসী সব ষড়যন্ত্র উড়িয়ে দিয়ে ৩০ জুলাইয়ের নির্বাচনে ব্যালটের মাধ্যমে রায় দেবে।”

জেলা বিএনপির সভাপতি আবুল কাহের শামীম, সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ ও মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইনসহ দলের নেতাকর্মীরা তার সঙ্গে ছিলেন।