ভাঙছে নদী, ভাঙছে বাড়ি

সাম্প্রতিক বন্যায় পানি বেড়ে ধলইসহ বিভিন্ন নদী ভেঙে মৌলভীবাজারের অন্তত ২৬ জায়গায় ভাঙন দেখা দিয়েছে।

বিকুল চক্রবর্তী মৌলভীবাজার প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 July 2018, 08:35 AM
Updated : 5 July 2018, 10:28 AM

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রণেন্দ্র শংকর চক্রবর্তী বলেন, সাম্প্রতিক বন্যায় ধলই ও মনু নদের পানিবৃদ্ধি অতীতের সব রেডর্ক ছাড়িয়ে যায়।

“প্রচণ্ড স্রোতে এ জেলায় দুই নদীর ২৬ জায়গায় বিশাল ভাঙন দেখা দেয়। বিভিন্ন জায়গায় ভেঙেছে নদীর পাড়। নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে বাড়িঘর।”

কমলগঞ্জ উপজেলার চৈতন্যগঞ্জ গ্রামে মুক্তিযোদ্ধা নিরঞ্জন দাশের বাড়ি

তিনি ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘরের সংখ্যা বলতে পারেননি। জেলা প্রশাসনও এখনও পরিসংখ্যান তৈরির কাজ শেষ করতে পারেনি বলে জেলা প্রশাসক মো. তোফায়েল ইসলাম জানিয়েছেন।

তবে শুধু কমলগঞ্জ উপজেলায়ই প্রায় দুই হাজার বাড়িঘরের ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহবুবুল হক।

উপজেলার চৈতন্যগঞ্জ গিয়ে দেখা গেছে, ধলই নদীর বুকে ঝুলে আছে মুক্তিযোদ্ধা নিরঞ্জন দাশের বাড়িটি।

সত্তরোর্ধ্ব নিরঞ্জন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সাম্প্রতিক বন্যায় ও ধলই নদীর ভাঙ্গনে ঝুঁকির মধ্যে পড়েছি। মুক্তিযুদ্ধে জয় পেলেও প্রকৃতির সঙ্গে য্দ্ধু করে আজ পরাজিত।

কমলগঞ্জ উপজেলার চৈতন্যগঞ্জ গ্রামে মুক্তিযোদ্ধা নিরঞ্জন দাশের বাড়ি

“কয়েক বছর ধরে ধলই নদীর ভাঙ্গন আর সাম্প্রতিক বন্যায় বসতবাড়ির ৮০ শতাংশ বিলীন হয়ে গেছে। এখন ঝুলে আছে অবশিষ্ট দুটি কক্ষ। এখানেই চলছে পরিবার-পরিজন নিয়ে জীবনযাপন।”

এ অবস্থায় যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় কোনো দুর্ঘটনা। কিন্তু নিরঞ্জনের পরিবার নিরুপায়। নতুন বাড়ি তৈরি করার সামর্থ্য নেই তাদের।

নিরঞ্জনের স্ত্রী খেলারানি দাশ বলেন, “তিন দেওর, জা, ছেলেমেয়েসহ ১৬ জনের সংসার। কয়েক বছর আগে অনেক কষ্ট করে পাকা বাড়ি তৈরি করেছিলেন স্বামী ও দেওর। চোখের সামনেই সে বাড়ির অর্ধেক নদীতে বিলীন হয়ে গেল। এখন ঝুলে থাকা ঘরেই সন্তানাদি নিয়ে বাস করছি।”

নদীভাঙন সমস্যার স্থায়ী সমাধানে কর্মপরিকল্পনা তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রকৌশলী শংকর চক্রবর্তী।