বাজারে ইলিশের দেখা মিলছে, দাম ‘চড়া’

ইলিশ অভয়াশ্রম সৃষ্টিতে দুই মাস মাছ ধরা বন্ধ থাকার পর চাঁদপুরের বাজারে ইলিশ আসতে শুরু করেছে। তবে দাম বেশি বলে ক্রেতারা জানান।

আল ইমরান শোভন চাঁদপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 May 2018, 03:34 PM
Updated : 2 May 2018, 03:34 PM

অন্যদিকে, মেঘনায় মাছ ধরা শুরু করলেও কাঙ্ক্ষিত পরিমাণে ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে না বলে জেলেদের ভাষ্য।

চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আসাদুল বাকী জানান, ইলিশ অভয়াশ্রম কর্মসূচির আওতায় জাটকা রক্ষাকল্পে চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীর ৬০ কিলোমিটার এলাকায় মার্চ-এপ্রিল দুই মাস ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরা বন্ধ রাখা হয়।

“মঙ্গলবার (১ মে) থেকে জেলেরা মাছ ধরতে পুনরায় নদীতে নেমেছে। তারা ভালো মাছ ধরতে পারবে বলে আমরা আশাবাদী।”

চাঁদপুর কান্ট্রি ফিশিং বোট মালিক সমিতির সভাপতি শাহ আলম মল্লিক বলেন, নিষেধাজ্ঞার সময়ে জেলেদের পরিবার-পরিজন নিয়ে কষ্টে দিনাতিপাত করতে হচ্ছে। এ সময় জেলেদের ৪০ কেজি করে চাল দেওয়া হয়।

“শুধুমাত্র চাল দিয়ে তো সংসার চলে না, জেলেদের আর্থিক সহায়তাও দেওয়া দরকার।”

চাঁদপুর শহরের বড় স্টেশন মাছঘাটের ইলিশ ব্যবসায়ী জাকির হোসেন বলেন, “গত দুই দিন ধরে যেই পরিমাণ ইলিশ আমদানি হচ্ছে তার বেশিরভাগই বরিশাল-ভোলা এলাকার। এখানে চাঁদপুরের ইলিশের পরিমাণ কম।”

জাকির হোসেন জানান, বর্তমানে চাঁদপুর মাছঘাটে প্রতিদিন একশ থেকে দেড়শ মণ ইলিশ আমদানি হচ্ছে। এসব ইলিশ সাইজ অনুযায়ী কেজিপ্রতি ৭শ থেকে এক হাজার টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে।

ইলিশের জন্য খ্যাত চাঁদপুর শহরের পালবাজারে ক্রেতা ফারুক হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন ইলিশ ধরা বন্ধ থাকার পর গত দুই দিন ধরে বাজারে ইলিশের দেখা মিলছে। ইলিশের আমদানি মোটামুটি হলেও দাম কমছে না। চাঁদপুরের মেঘনায় আহরণ করা ইলিশ কেজিপ্রতি ৮শ থেকে ১২শ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে।

জেলা আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগ সভাপতি আব্দুল মালেক বলেন, ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতিবছরই জেলে সংগঠনের পক্ষ থেকে যথাযথ ভূমিকা পালন করা হয়। জেলা টাস্কফোর্সের সঙ্গে যৌথভাবে তারা জাটকা সংরক্ষণ অভিযানে সহযোগিতা করেন।

তবে কিছু অসাধু জেলে বিভিন্ন এলাকা থেকে এসে জাটকা নিধনের চেষ্টা করেন। তারা চাঁদপুর সদর অঞ্চলের কার্ডধারী জেলে নন বলে দাবি মালেকের।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আসাদুল বাকী জানান, মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা চলাকালে দুই মাসে পদ্মা-মেঘনা নদীতে ৩৪৯টি অভিযান পরিচালনা করা হয়। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জাটকা নিধনের অপরাধে এসব অভিযানে ১১৫ জন জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

জেলা মৎস্য বিভাগ জেলেদের সচেতন করার জন্য কাজ করছে বলে জানান তিনি।

তিনি আরও জানান, গত বছর দেশে ২২ হাজার ৭শ মেট্রিক টন ইলিশ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে ৩৫ হাজার ৪২৭ মেট্রিক টন উৎপাদিত হয়েছে।

চলতি বছরের ইলিশ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা সম্পর্কে জানাতে পারেননি এই কর্মকর্তা।

মৎস্য অফিস জানিয়েছে, চাঁদপুরে পদ্মা-মেঘনা নদীতে মাছ ধরার কাজে নিয়োজিত রয়েছে ৪৫ হাজার ৯৭৮ জন জেলে। এসব জেলের মধ্যে ৪১ হাজার ১৮৯ জন জেলেকে নিষিদ্ধ সময়ে ৪০ কেজি করে ৪ মাস চাল দেওয়া হয়েছে।