খণ্ডিত ইতিহাস জাতিকে দিক নির্দেশনা দিতে পারে না: রাষ্ট্রপতি

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, খণ্ডিত ইতিহাস কোনো জাতিকে সঠিক দিক নির্দেশনা দিতে পারে না।

গাজীপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 March 2018, 03:02 PM
Updated : 19 March 2018, 03:25 PM

সোমবার গাজীপুরে শহীদ বরকত স্টেডিয়ামে স্বাধীনতার প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ সংগ্রামে অংশগ্রহণকারী বীর ও শহীদদের স্মরণে এক নাগরিক সংবর্ধনা ও আলোচনা অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, “মুক্তিযুদ্ধে কার কী অবদান তা আমাদের পরিপূর্ণভাবে জানতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে এবং গণতান্ত্রিক চিন্তা চেতনার বিকাশ ঘটাতে হবে।নতুন ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়ে তোলা আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য।”

রাষ্ট্রপতি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে একাত্তরের ২৬ মার্চ পর্যন্ত প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামই ওতপ্রোতভাবে জড়িত।

“মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী প্রজন্মকে মুক্তি সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের বিকৃত ইতিহাস শিক্ষা দেওয়ার অপচেষ্টা হয়েছে এবং যারা ইতিহাস বিকৃত করেছে তারা সবকিছুই জেনে শুনেই করেছে।”

তারা বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে ভয় পায় বলেই এসব করেছে এবং করছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী শক্তি এখনও একাত্তরে তাদের পরাজয়ের গ্লানি ভুলতে পারেনি উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাই এসব অপশক্তি সুযোগ পেলেই মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে চায়। এরা দেশের স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও উন্নয়নের শত্রু। দেশ ও জাতির স্বার্থে তাদের যেকোনো ষড়যন্ত্র ও অপচেষ্টার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।

“আর এজন্য মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে এবং গণতান্ত্রিক চিন্তা চেতনার বিকাশ ঘটাতে হবে।”

বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণকে বাঙালির মুক্তির সনদ উল্লেখ রাষ্ট্রপতি বলেন, বঙ্গবন্ধু তার ভাষণে দেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের রূপরেখা পরিষ্কারভাবে তুলে ধরেছেন। এই ভাষণের প্রতিটি কথাই যেন ছিল এ দেশের মানুষের মনের কথা, তাদের অব্যক্ত আকুতিরই বহিঃপ্রকাশ।

“এমনকি তার অবর্তমানে করণীয় সম্পর্কেও তিনি পরিষ্কার দিক নির্দেশনা দিয়ে গেছেন। তাই ৭ই মার্চের ভাষণ হচ্ছে বাঙালির মুক্তি সনদ।”

রাষ্ট্রপতি বলেন, আমরা স্বাধীন দেশের গর্বিত নাগরিক। ১৯৭১ সালে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে যে দেশটির জন্ম সে দেশ আজ সগৌরবে উন্নতি ও অগ্রগতির পথে এগিয়ে যাচ্ছে। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর মতো বৃহৎ প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে।

একাত্তরের ১৯ মার্চ গাজীপুরবাসী যে বীরত্ব ও সাহস দেখিয়েছিলেন সে ইতিহাস স্মরণীয় হয়ে থাকবে বলে জানান তিনি।

গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ইকবাল হোসেন সবুজের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, সংসদ সদস্য মো. জাহিদ আহসান রাসেল, গাজীপুর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আখতারুজ্জামান, গাজীপুর জেলা প্রশাসক দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর, গাজীপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লাহ খান, সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।

এর আগে রাষ্ট্রপতি অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছলে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী তাকে উত্তরীয় ও ক্রেস্ট প্রদান করেন। রাষ্ট্রপতিও তাকে উত্তরীয় পরিয়ে দেন।

রাষ্ট্রপতির ভাষণের আগে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক এক প্রামান্য চিত্র প্রদর্শন এবং শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়।