শাবিতে র‌্যাগিংয়ের দায়ে বহিষ্কৃতদের পক্ষে আন্দোলন

সিলেটে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে র‌্যাগিংয়ের দায়ে বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীদের রক্ষায় আন্দোলনে নেমেছেন তাদের বন্ধুরা।

শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 March 2018, 02:55 PM
Updated : 1 March 2018, 02:55 PM

এই আন্দোলন অযৌক্তিক বলে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। কে বা কারা এই আন্দোলন সংগঠিত করছে সেই প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ফয়জুর রহমান বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার করে তাদের শিক্ষাজীবন হুমকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে।”

নবাগত ছয় শিক্ষার্থীকে নগ্ন করে ছবি তুলে ফেইসবুকে পোস্ট দিতে বাধ্য করেছিলেন বহিষ্কৃতরা। এ অপরাধে সম্প্রতি পাঁচজনকে বহিষ্কারসহ মোট ২১ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে জরিমানা ও সতর্ক করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

আন্দোলনকারীরা এই শাস্তিকে অবিচার দাবি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে তালা দিয়ে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত অবস্থান নেন। পরে তারা উপাচার্য ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ দেখান।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের হাতে একজন জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক লাঞ্ছিত হয়েছেন বলে শিক্ষক সমিতির এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।

শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জহীর উদ্দিন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, একজন জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনায় শিক্ষক সিমিতি ক্ষুব্ধ ও মর্মাহত।

“আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় সুষ্ঠু বিচারের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আবেদন জানাচ্ছি।”

এদিকে মূল ফটক আটকে দেওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন সেবাসহ বিভিন্ন বিভাগের ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েন শিক্ষক-কর্মচারীসহ সবাই।

অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শাহিন আহমেদ চৌধুরী বলেন, “আমরা অফিসের কাজে যোগ দিতে সকালেই মূল ফটকের সামনে গেলে আন্দোলনকারীদের তোপের মুখে পড়ি। আমাদের হেঁটেও ক্যাম্পাসে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।”

প্রক্টর জহীর উদ্দিন আহমেদ আন্দোলনকারীদের সামনে গিয়ে সরে দাঁড়ানোর অনুরোধ জানালেও তারা প্রত্যাখ্যান করেন। তারা বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানান।

প্রক্টর বলেন, “র‌্যাগিংয়ের ঘটনায় জড়িত থাকার প্রমাণ তদন্তে বের হয়ে এসেছে। তদন্ত কমিটি, শৃঙ্খলা কমিটি, অতঃপর সিন্ডিকেট থেকে তাদের বহিষ্কার আদেশ এসেছে। এখানে আর কিছু করার নেই।”

গত ১৫ ফেব্রুয়ারি সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স বিভাগে সদ্য ভর্তি হওয়া ছয় শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশের একটি মেসে নিয়ে র‌্যাগিং ও মারধর করেন একই বিভাগের জ্যেষ্ঠ কয়েকজন শিক্ষার্থী।

প্রক্টর জহীর বলেন, “র‌্যাগিংয়ের শিকার শিক্ষার্থীদের নগ্ন করে ছবি তুলে ফেইসবুকে পোস্ট করতে বাধ্য করেন সিনিয়ররা।”

ঘটনা তদন্তে প্রক্টর জহীর, সহকারী প্রক্টর সাইফুল ইসলাম আমীন ও শাহপরান হলের প্রভোস্ট শাহেদুল হোসাইনকে নিয়ে ২০ ফেব্রুয়ারি তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

প্রক্টর বলেন, “অপরাধীদের বিচার হয়েছে—এটা পজিটিভ। অথচ শিক্ষার্থীরা সেটা না দেখে রাস্তা আটকে আন্দোলন করছে। আমরা তো অপরধীদের লালন করতে পারি না।”