শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় একুশ স্মরণ

ভাষার জন্য আত্মদানকারীদের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় স্মরণ করেছে দেশের মানুষ। দিনটি পালনে জেলায় জেলায় নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

ডেস্ক নিউজবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Feb 2018, 01:42 PM
Updated : 21 Feb 2018, 03:28 PM

১৯৫২ সালে রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে এদেশের ছাত্র-জনতার আন্দোলন উত্তাল হয়ে উঠলে পূর্ব পাকিস্তান সরকার ১৪৪ ধারা জারি করে মিছিল মিটিং নিষিদ্ধ করে। ছাত্র-জনতা নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গ করলে গুলি চালানো হয়, যেখানে সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারসহ অনেক প্রাণ হারান। 

তাদের স্মরণে নির্মিত শহীদ মিনার ২১শে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে ফুলে ফুলে ছেয়ে যায়। দিনব্যাপী চলে নানা অনুষ্ঠান। 

একুশের অনুষ্ঠান নিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে প্রতিনিধিদের পাঠানো সংবাদ:

রাজশাহী

একুশের প্রথম প্রহরে রাজশাহী নগরীর শহীদ মিনারগুলোতে নামে জনতার ঢল।

রাজশাহী

রাত ১২টা ১ মিনিটে রাজশাহী কলেজ ও ভুবন মোহন পার্ক শহীদ মিনারে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন আওয়ামী লীগ, বিএনপি, ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় পার্টির নেতৃবৃন্দসহ মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক এবং বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্শীরা। নেতৃবৃন্দ এক মিনিট নীরব থেকে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

ভুবন মোহন পার্ক শহীদ মিনারেও আওয়ামী লীগ, বিএনপি, মুক্তিযোদ্ধা, বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এ শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।

কুমিল্লা

একুশের প্রথম প্রহরে কুমিল্লা টাউন হল মাঠে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, কুমিল্লা প্রেসক্লাব, বিএমএ, জেলা আইনজীবী সমিতি ও প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনও শহীদ মিনারে ফুলদিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে।

ফেনী

ফেনীর দাগনভুঁইয়ায় বুধবার সকালে ভাষা শহীদ আবদুস সালাম স্মৃতি জাদুঘর ও গ্রন্থাগারের সামনে স্থাপিত শহীদ মিনারে জেলা প্রশাসন, শহীদ সালামের পরিবারের সদস্যসহ রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের মানুষ পুস্পস্তবক অর্পণ করেছে।  

পরে ভাষা শহীদ আবদুস সালাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে একুশের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

ফেনী শহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীসহ নানা শ্রেণি পেশার মানুষ।

ময়মনসিংহ

ময়মনসিংহ

ময়মনসিংহ

একুশের প্রথম প্রহরে ময়মনসিংহের টাউনহল শহীদ বেদিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পুস্পার্ঘ্য অর্পণ করেছে।

ময়মনসিংহে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

নেত্রকোণা

প্রথম প্রহরে নেত্রকোণা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুলেল শ্রদ্ধা জানান নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ।

নানা স্থানে আয়োজিত কর্মসূচির মধ্যে শহীদ বেদিতে পুস্পস্তবক অর্পণ, প্রভাতফেরী, জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা, শিশুদের চিত্রাংকন, হস্তলেখা প্রতিযোগিতা, আবৃত্তি, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনা ছিল উল্লেখযোগ্য।

নরসিংদী

নরসিংদী

নরসিংদী

শহরের মোসলেহ্ উদ্দীন ভূইয়া স্টেডিয়াম নরসিংদী সংলগ্ন শহীদ মিনারে একুশের প্রথম প্রহরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।     

মঙ্গলবার সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে মোসলেহ্ উদ্দিন ভূইয়া স্টেডিয়াম পর্যন্ত প্রভাতফেরী অনুষ্ঠিত হয়েছে। এছাড়া আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

নারায়ণগঞ্জ

নারায়ণগঞ্জ

নারায়ণগঞ্জ

একুশের প্রথম প্রহরে চাষাড়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ।

নোয়াখালী

নোয়াখালী কেন্দ্রিয় শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, পৌর মেয়রসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ।

এছাড়া নোয়াখালী প্রেসক্লাব, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাসদ, গণসংহতি আন্দোলনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে।

ভোর সাড়ে ৬টা থেকে প্রভাত ফেরিতে অংশ নেয় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীরা।

শেরপুর

একুশের প্রথম প্রহরে সর্বস্তরের মানুষ শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমবেত হয়ে শহীদদের শ্রদ্ধা জানান।

সকাল ৭টা থেকে শিক্ষার্থীসহ সর্বস্তরের মানুষ প্রভাতফেরী করে শহীদ মিনারে আসেন। এই সময় থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টা প্রধান সড়ক অচল হয়ে পড়ে।

শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়

সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শহীদ দিবসের আয়োজনে ছিল পতাকা অর্ধনমন, শহীদ মিনারে পুস্পস্তবক অর্পণ, আলোচনা সভা, শিশুদের নিয়ে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। 

সকাল সাড়ে ৭টায় প্রশাসন ভবনের সামনে বিশ্ববিদ্যালয় ও জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করে আয়োজনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। পরে কন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।

পর্যায়ক্রমে শিক্ষক সমিতি, প্রেসক্লাব, অফিসার্স এসোসিয়েশন, শাখা ছাত্রলীগ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিভিন্ন সংগঠন পুষ্পস্তবক অর্পণ করে।

সকাল ৯টা থেকে প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সন্তান এবং ইউনিভার্সিটি স্কুলের শিক্ষার্থীদের নিয়ে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।

বেলা ১১টায় মিনি অডিটোরিয়ামে ‘ভাষা আন্দোলন বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়। এরপর আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।    

মাগুরা

একুশে ফেব্রুয়ারি ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ১০২১ ব্যাগ রক্ত সংগ্রহের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে মাগুরা জেলা প্রশাসন। বুধবার সকালে স্বেচ্ছায় এ রক্তদান কর্মসূচিতে মানুষের ব্যাপক সাড়া লক্ষ্য করা যায়। রক্ত গ্রহণের স্থানগুলোতে স্বতস্ফূর্তভাবে সাধারণ মানুষদের লাইনে দাঁড়িয়ে রক্ত দিতে দেখা গেছে।

নড়াইল

বুধবার সন্ধ্যায় নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের কুরিডোপ মাঠে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

শহীদ মিনার, জাতীয় স্মৃতি সৌধ, বাংলা বর্ণমালা, আল্পনাসহ গ্রাম বাংলার নানা ঐতিহ্য তুলে ধরা হয় মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্বালন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে।

ভাষা দিবসের ৬৭তম বার্ষিকী উপলক্ষে ওড়ানো হয় ৬৭টি ফানুস।

বিকালে গণসংগীত, দেশাত্মবোধক গান আর কবিতা পরিবেশন করেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের শিল্পীরা।