একাত্তরের ওইদিন যে ভাষণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালির স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন, সেই ভাষণ ‘বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য’ হিসেবে ইউনেস্কোর ‘মেমোরি অফ দা ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্টারে’ যুক্ত হয়েছে।
রাজধানী ঢাকার মতো শনিবার জেলায় জেলায় এ উদযাপনে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পণ, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র প্রদর্শন, শোভাযাত্রা এবং রচনা ও সাধারণ জ্ঞান প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম জেলা প্রতিনিধিদের পাঠানো সংবাদ:
রাজশাহী
রাজশাহী জেলা প্রশাসন আয়োজিত আনন্দ শোভাযাত্রায় যেন মানুষের ঢল নেমেছে। হাজারো মানুষের পদচারণায় তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না নগরীর প্রাণকেন্দ্র সাহেববাজার এলাকায়।
সকাল ১০টায় নগরীর আলুপট্টি মোড় থেকে জেলা প্রশাসক হেলাল মাহমুদ শরীফের নেতৃত্বে আনন্দ শোভাযাত্রা শুরু হয়ে সাহেববাজার হয়ে রাজশাহী কলেজ মাঠে গিয়ে শেষ হয়।
এরপর আলুপট্টি মোড় থেকে একের পর এক শোভাযাত্রা গিয়ে মিলিত হয় কলেজ মাঠে।
শোভাযাত্রায় সবার হাতে হাতে শোভা পায় বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড। মাইকে প্রচার করা হয় বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ এবং দেশাত্মবোধক গান। ঢাক-ঢোল বাজিয়ে, নেচে-গেয়ে আনন্দ উল্লাস প্রকাশ করেন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। পরম শ্রদ্ধার সঙ্গে তারা স্মরণ করেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে।
শোভাযাত্রায় অংশ নেন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার নূর-উর-রহমান, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার আমিনুল ইসলাম, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী সরকার, মহানগর পুলিশ কমিশনার মাহাবুবর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ, মহানগর সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার, সমাজসেবী শাহীন আক্তার রেনী, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী মর্জিনা পারভিন, রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ হবিবুর রহমান প্রমুখ।
সিলেট
সকাল সাড়ে ১০টায় সিলেট জেলা প্রশাসনের আয়োজনে নগরীর রেজিস্ট্রারী মাঠে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানিয়ে শুরু হয় আনন্দ শোভাযাত্রা।
পরে শোভাযাত্রাটি নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে অনুষ্ঠিত হয় সংক্ষিপ্ত আলোচনাসভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
আনন্দশোভাযাত্রায় মুক্তিযোদ্ধা, জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তা, আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ অংশ নেন।
সংক্ষিপ্ত আলোচনায় অংশ নেন সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি বদর উদ্দিন আহমদ কামরান, সিলেট জেলা প্রশাসক রাহাত আনোয়ার প্রমুখ।
চাঁদপুর
সকালে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে চাঁদপুর স্টেডিয়াম থেকে আনন্দ শোভাযাত্রা বের হয়।
শোভাযাত্রাটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এসে শেষ হয়।
শোভাযাত্রায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দীপু মনি, জেলা প্রশাসক মো. আব্দুস সবুর মন্ডল, পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দীসহ জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, পেশাজীবী, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ নানা পেশা-শ্রেণির লোকজন অংশগ্রহণ করেন।
বাগেরহাট
সকালে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে বাগেরহাট শেখ হেলাল উদ্দিন ষ্টেডিয়াম থেকে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় স্টেডিয়ামে গিয়ে শেষ হয়।
এর আগে আওয়ামী লীগ ও সকল অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী এবং বিভিন্ন সরকারি দপ্তর, সামাজিক সংগঠনের সদস্যরা স্টেডিয়ামে জড়ো হন।
ময়মনসিংহ
সকালে সার্কিট হাউজ মাঠে জেলা প্রশাসন আয়োজিত আনন্দ শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন ধর্মমন্ত্রী মতিউর রহমান।
শোভাযাত্রায় বিভিন্ন স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থী, সামাজিক-সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান সদস্য, মুক্তিযোদ্ধা এবং প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অংশ নেন।
নোয়াখালী
সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থেকে মাইজদী শহরে বর্ণিল আনন্দ শোভাযাত্রা বের করা হয়। এতে সরকারি বেসরকারি কর্মকর্তাদের পাশাপাশি মুক্তিযোদ্ধা, সংস্কৃতিকর্মী, শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ সর্বস্তরের লোকজন অংশগ্রহণ করেন।
শোভাযাত্রা শেষে শিল্পকলা একাডেমি মাঠে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন নোয়াখালী আবৃত্তি একাডেমির সভাপতি এমদাদ হোসেন কৈশোর।
আলোচনা সভা শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও বড় পর্দায় মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক চলচ্চিত্র ওরা ১১ জন প্রদর্শন করা হয়।
পিরোজপুর
সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসনের আয়োজনে শহরের বঙ্গবন্ধু চত্বর থেকে একটি আনন্দ শোভাযাত্রা বের হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে স্বাধীনতা মঞ্চে এসে শেষ হয়।
পরে স্বাধীনতা মঞ্চে রচনা ও সাধারণ জ্ঞান প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা হয়।
সিরাজগঞ্জ
সকালে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ শেষ একটি বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বাজার স্টেশন মুক্তির সোপান চত্বরে এসে শেষ হয়।
এর আগে সংসদ সদস্য হাবিবে মিল্লাত মুন্না, জেলা প্রশাসক কামরুন নাহার সিদ্দিকা ও পুলিশ সুপার মিরাজ উদ্দিন আহম্মেদ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুস্পমাল্য অর্পণ করেন।
জেলা শহর ছাড়াও বিভিন্ন উপজেলায়ও বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
নেত্রকোণা
সকাল ১০টার দিকে জেলা শহরের মোক্তারপাড়ার মুক্তমঞ্চে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে শোভাযাত্রা শুরু হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
একই সঙ্গে জেলার ১০টি উপজেলা সদরেও শোভাযাত্রা হয়।
মিছিলে যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়, জেলা প্রশাসক মুশফিকুর রহমান, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান প্রশান্ত রায়, পুলিশ সুপার জয়দেব চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফ আলী খান খসরুসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা, কর্মচারী, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরাসহ সর্বস্তরের জনগণ অংশ নেন।
পরে মুক্তমঞ্চে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা হয়।
এর আগে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান প্রশান্ত কুমার রায়ের নেতৃত্বে জেলা পরিষদ থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়।
গোপালগঞ্জ
সকাল ১০টায় গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসনের আয়োজনে জেলা শিল্পকলা একাডেমির সামনে থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়।
শোভাযাত্রাটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পৌর পার্কে গিয়ে শেষ হয়।
পরে পৌর পার্কে গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো মোখলেসুর রহমান সরকার, জেলা পরিষদ প্রশাসক চৌধূরী এমদাদুল হক, পুলিশ সুপার মুহাম্মদ সাইদুর রহমান খান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলী খান, পৌর মেয়র কাজী লিয়াক আলী লেকু, সাবেক জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বদরুদোজা বদরসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
এ এউপলক্ষে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্বাবিদ্যাল, টুঙ্গিপাড়া, কোটালীপাড়া, মুকসুদপুর, কাশিয়ানীতে শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
কুমিল্লা
সকালে কুমিল্লা টাউন হল থেকে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের নেতৃত্বে একটি আনন্দ শোভাযাত্রা শুরু হয়ে নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
এ সময় জেলা প্রশাসক মো. জাহাংগীর আলম, পুলিশ সুপার মো. শাহ আবিদ হোসেন, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ মহানগর আওয়ামী লীগ ও সকল অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী ও জনসাধারণ উপস্থিত ছিলেন।
পাবনা
সকালে পাবনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে শুরু হওয়া শোভাযাত্রায় জেলার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি অফিস, স্কুল কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের সদস্যরা অংশ নেন।
আনন্দ শোভাযাত্রাটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম বকুল পৌর মিলনায়তনে এক সমাবেশে মিলিত হয়।
জয়পুরহাট
সকাল ১০ টায় জয়পুরহাট জেলা স্টেডিয়াম থেকে শোভাযাত্রা বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে শহীদ ডা. আবুল কাশেম ময়দানে এসে শেষ হয়।
পরে সেখানে এক সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় বক্তৃতা করেন জেলা প্রশাসক মোকাম্মেল হক, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান রকেট, পুলিশ সুপার রশীদুল হাসান, পৌর মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক, জেলা সিভিল সার্জন হাসিবুর রহমান তালুকদার রেজা প্রমুখ।
মাগুরা
সকালে জেলা প্রশাসকের নের্তৃত্বে আনন্দ শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এ শোভাযাত্রা উপলক্ষে শহরের নোমানী ময়দানে সরকারি সকল প্রতিষ্ঠানসহ স্কুল-কলেজ ও বিভিন্ন সেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করে।
নরসিংদী
সকাল ১০টায় শহরের মোসলেহ উদ্দীন ভুইয়া স্টেডিয়াম থেকে বের হওয়া আনন্দ শোভাযাত্রায় মুক্তিযোদ্ধা, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, সরকারি চাকরিজীবীসহ জেলার সকল শ্রেণিপেশার মানুষ অংশ নেন।
নরসিংদীর পলাশ, শিবপুর, মনোহরদী, বেলাব ও রায়পুরা উপজেলায়ও শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এছাড়া শেরপুর, মৌলভীবাজার, শরীয়তপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুড়িগ্রাম, জামালপুর, নীলফামারী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, টাঙ্গাইল ও লালমনিরহাট জেলায় নানা কর্মসূচি পালিত হয়েছে।