সোমবার কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির দেওয়া অর্থ ও ত্রাণসামগ্রী হস্তান্তর অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
সেতুমন্ত্রী বলেন, “রোহিঙ্গাদের মধ্যেও কিছু কিছু অপরাধী থাকতে পারে। শরণার্থী স্রোতের সঙ্গে অস্ত্র, ইয়াবাও আসতে পারে। এমনকি কিছু সন্ত্রাসীও আসতে পারে।
“এদের সঙ্গে বাংলাদেশের অপরাধী গোষ্ঠীগুলো মিলিত হতে পারে, তাই আইনশৃংখলা বাহিনী অত্যন্ত সতর্কতার সাথে কাজ করছে।”
গত ২৪ অগাস্ট রাতে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (এআরএসএ) রাখাইনে ৩০টি পুলিশ পোস্ট ও একটি সেনা ঘাঁটিতে হামলা চালালে পুলিশসহ বেশ কয়েকজন নিহত হওয়ার পর থেকে রোহিঙ্গা গ্রামগুলোতে অভিযান শুরু করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী।
দমন-পীড়নের মুখে পাঁচ লাখের বেশি রোহিঙ্গা সীমান্তবর্তী জেলা কক্সবাজারে আশ্রয় নিয়েছে। আগে থেকেই প্রায় পাঁচ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ।
এরপর রোহিঙ্গাদের খাদ্য, বাসস্থানসহ বিভিন্নভাবে সহায়তা করে আসছে সরকার ও বেসরকারি সংস্থা ও ব্যক্তি।
শরণার্থীদের পাশে দাঁড়ানো বিষয়টি বিশ্বব্যাপী প্রশংসা লাভ করেছে বলেও জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
তিনি বলেন, “দুনিয়ায় শরণার্থী বিষয়ক যে সংকট; এ সংকটে সবাই একযোগে স্বীকার করেছেন শেখ হাসিনা শরণার্থী ব্যবস্থাপনা এবং মানবিক সহায়তায় এগিয়ে রয়েছেন।
“অন্যদিকে শান্তিতে নোবেল পেয়েও মিয়ানমারের নেত্রী অং সা ন সূ চি এক্ষেত্রে পিছিয়ে রয়েছেন। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ‘নিউজ উইকে’ রোববার এ ব্যাপারে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।”
এ সময় রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা, পুনর্বাসন ও ফেরত পাঠানোর কাজ চলছে উল্লেখ করেন ওবায়দুল কাদের।
“বিশ্বে এ যাবত যত শরণার্থী সংকট হয়েছে এবং রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকটে বাংলাদেশ যত দ্রুত সাড়া দিয়েছে। মানবিক সহায়তার পাশাপাশি আশ্রয় দিয়ে রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়িয়েছে।তা ইতিহাসে বিরল।
“দেখুন, এখানে অন্য কোনো ম্যাজিক নেই। ম্যাজিক হলো শেখ হাসিনার নেতৃত্ব। শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত এবং সেই সিদ্ধান্ত দ্রুত বাস্তবায়ন।”
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পগুলোতে সৌরবিদ্যুৎ সরবরাহের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় শরণার্থী ক্যাম্পের রাস্তার জন্য ৫০০ টি সৌরবিদ্যুৎ প্যানেলের খুঁটি এবং দুই হাজার পরিবারের মধ্যে সৌরবিদ্যুৎ প্যানেল সরবরাহ করবে।
এর আগে রোহিঙ্গাদের জন্য দেওয়া চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ২০ লাখ টাকার চেক, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুল মতিন খসরু নগদ ১০ লাখ টাকা ও ৪৭৬ প্যাকেট খাদ্য সামগ্রীর অনুদান গ্রহণ করে জেলা প্রশাসন ও সেনা বাহিনীকে হস্তান্তর করেন মন্ত্রী।
এ সময় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম, স্থানীয় সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটন ও বর্তমান সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।