সকালে শ্রমিকরা কারখানায় এসে দেয়ালে ছবিসহ শ্রমিকদের ছাঁটাইয়ের ও বন্ধের নোটিশ টানানো হয়েছে দেখতে পান।
Published : 06 Oct 2024, 04:13 PM
ঢাকার সাভারের আশুলিয়ায় ৬৩ জন শ্রমিককে বরখাস্ত করার পাশাপাশি একটি সোয়েটার তৈরির কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।
রোববার সকালে আশুলিয়ার জামগড়া এলাকার হামীদুল্যাহ ম্যানশনের ‘ফ্যাশনইট কোম্পানি লিমিটেড’ কারখানায় এই ঘটনা ঘটেছে।
সকালে শ্রমিকরা কারখানায় এসে দেয়ালে ছবিসহ শ্রমিকদের ছাঁটাইয়ের নোটিশ টানানো হয়েছে দেখতে পান। পাশে আরেকটি নোটিশে কারখানাটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
শ্রমিকরা জানান, কারখানাটিতে প্রায় ১২শ’ শ্রমিক রয়েছে। শনিবার রাতেও তারা কাজ করেছেন। তখনও কেউ বরখাস্তের বিষয়ে জানতো না। সকালে কারখানায় এসে তারা বরখাস্ত ও বন্ধের নোটিশ দেখতে পান।
ফ্যাশনইট কোম্পানির প্রশাসন ও মানবসম্পদ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মো. আব্দুল খালেক স্বাক্ষরিত নোটিশে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এ ২৬ ধারায় কিছু সংখ্যক শ্রকিকের চাকরী অবসান করা হয়েছে। উক্ত আইনে বর্ণিত হারে ক্ষতিপূরণ ও ভাতাদি সোমবার দুপুর আড়াইটা থেকে পরিশোধ করা শুরু হবে। তখন তাদের কোম্পানির আইডি কার্ড জমা দিতে হবে।
আরেকটি নোটিশে কারখানার সব শ্রমিক-কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বলা হয়েছে, আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে চলমান সহিংসতা, বেআইনি ধর্মঘট ও বর্তমান পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে নিরাপত্তার স্বার্থে রোববার থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কারখানা অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ থাকবে।
শ্রমিকদের বেতন-ভাতাদি রকেট অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে সোমবার পরিশোধ করা হবে বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।
এসব বিষয়ে কারখানার প্রশাসন ও মানবসম্পদ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মো. আব্দুল খালেকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তার মোবাইলে কল করা হলেও তিনি ধরেননি।
বরখাস্ত হওয়া শ্রমিকদের একজন হৃদয় মিয়া বলেন, “আমরা কখনও কোনো শ্রমিক আন্দোলনে যাইনি, তারপরও কর্তৃপক্ষ কেন আমাদের বরখাস্ত করেছে বুঝতে পারছি না।”
বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও সোয়েটার্স শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের আইন বিষয়ক সম্পাদক খাইরুল মামুন মিন্টু বলেন, “৬৩ জন শ্রমিককে ছাঁটাই করার তালিকা প্রকাশ করেছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। কিন্তু কী কারণে ছাঁটাই করা হয়েছে তা নোটিশে বলা হয়নি।”
তিনি আরও বলেন, “শনিবার রাত ৯টা পর্যন্ত কারখানাটিতে কাজ চলেছে। তখনও কোনো শ্রমিক জানতো না কারখানা বন্ধ ও শ্রমিক বরখাস্তের বিষয়টি। সকালে কারখানার সামনে এসে নোটিশ দেখে তারা অবাক হয়ে যায়।”
এ বিষয়ে আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১-এর পুলিশ সুপার মো. সারোয়ার আলমের মোবাইলে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
অন্যদিকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে রোববার আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলের কারখানাগুলোতে শান্তিপূর্ণভাবে উৎপাদন কার্যক্রম চলছে।
শ্রমিকরা সকালে স্বতঃস্ফুর্তভাবে কারখানায় প্রবেশ করে কাজে যোগদান করেছে। দুপুর পর্যন্ত কোথাও কোনো অপ্রীতকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।