“ওই চারজনের বিরুদ্ধে ডাউকি থানার একটা মামলা ছিল। কোনো ধর্ষণের অভিযোগ নেই এদের বিরুদ্ধে,” বলছেন মেঘালয় পুলিশ প্রধান।
Published : 10 Dec 2024, 08:23 PM
কলকাতায় আওয়ামী লীগের যে চার নেতা দুদিন আগে গ্রেপ্তার হয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে মুখ খুলেছেন মেঘালয় পুলিশের মহাপরিচালক ইদাশিশা নংরাং।
তিনি বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, “ডাউকি থানায় এদের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার চারটি ধারা এবং বিদেশি আইনের ১৪ নম্বর ধারায় অভিযোগ ছিল। সেই মামলাতেই কলকাতা থেকে এদের গ্রেপ্তার করে আনা হয়েছে।"
যেসব ধারায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, তার মধ্যে আছে- অস্ত্র দিয়ে হামলা (আগ্নেয়াস্ত্র নয়), হামলার জন্য জমায়েত হওয়া, এক লাখ টাকার কম পরিমাণ আর্থিক ক্ষতিসাধনের মতে অভিযোগ। এছাড়া অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের অভিযোগও আনা হয়েছে।
আনন্দবাজার লিখেছে, রোববার কলকাতার নিউ টাউন এলাকার একটি ফ্ল্যাট থেকে কলকাতা পুলিশের সহায়তায় আওয়ামী লীগের চার নেতাকে গ্রেপ্তার করে শিলং পুলিশ।
ওই চারজন হলেন– সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের অপসারিত চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান, সিলেট মহানগর যুবলীগের সভাপতি আলম খান মুক্তি, সিলেট মহানগর যুবলীগের সহসভাপতি আব্দুল লতিফ রিপন এবং মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য ইলিয়াস আহমদ জুয়েল।
তাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে বলে যে তথ্য কিছু সংবাদমাধ্যমে এসেছে, তা সঠিক নয় বলে জানিয়েছেন মেঘালয় পুলিশের ডিজি ইদাশিশা নংরাং।
তিনি বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, “ওই চারজনের বিরুদ্ধে ডাউকি থানার একটা মামলা ছিল। কোনো ধর্ষণের অভিযোগ নেই এদের বিরুদ্ধে।”
এই চারজন যে মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন, তাতে আরও দুই আওয়ামী লীগ নেতার নাম আছে। ওই দুই আসামি হলেন- সিলেট জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আফসার আজিজ ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক দেবাংশু দাশ মিঠু।
পুলিশের বরাতে বিবিসি বাংলা লিখেছে, ৫ অগাস্টের পরে তারা বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে ভারতের মেঘালয়ে বসবাস করছিলেন বলে মেঘালয় পুলিশের কাছ থেকে বিধাননগর পুলিশ জানতে পারে। ডাউকি সীমান্তে ট্রাক চালকদের সঙ্গে অক্টোবর মাসে হাতাহাতির মামলায় তারা গ্রেপ্তার হয়েছেন।
বারাসত আদালতের আইনজীবী আসলামউজ্জামান আনন্দবাজারকে বলেন, “অনুপ্রবেশ, ছিনতাই, জাতীয় সড়কে ডাকাতি, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট, ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত ও মারধরের অভিযোগে ধৃতদের রবিবার বারাসত আদালতে আনা হয়।
“ট্রানজিট রিমান্ডের জন্য আনা হলেও আদালত ছুটি থাকায় বিচারকের সামনে হাজির করানো হয়নি। ধৃতদের শিলং নিয়ে যাওয়া হয়েছে।"
মেঘালয়ের পত্রিকা দ্য শিলং টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পশ্চিম জৈন্তা পাহাড়ি জেলার ডাউকিতে স্থানীয় ট্রাক চালকদের সঙ্গে মারামারির অভিযোগে গত মাসে একটি মামলা হয়। সেই মামলায় রোববার কলকাতায় আওয়ামী লীগের চার নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
কলকাতায় অবস্থানরত আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেলও তার দলের চারজনের গ্রেপ্তার হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছেন।
তিনি সোমবার রাতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “চারজনকে শিলংয়ের ডাউকি থানার একটি মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে।”
সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, “তাদের বিরুদ্ধে অবৈধ অনুপ্রবেশ, ছিনতাই ও ডাকাতির অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল। স্থানীয় আদালতে সেখানকার আইনজীবীদের মাধ্যমে তাদেরকে আইনি সহযোগিতা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আশা করি, তারা সুবিচার পাবেন।”