‘মিথ্যা খবরের’ দায় প্রথম আলোর: হানিফ

“এর আগেও প্রথম আলো বহুবার আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে,” বলেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 March 2023, 01:50 PM
Updated : 30 March 2023, 01:50 PM

স্বাধীনতা দিবসে প্রকাশিত প্রথম আলোর প্রতিবেদনটিকে ‘মিথ্যা’ দাবি করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেছেন, পরিকল্পিতভাবে ‘মিথ্যা’ সংবাদ প্রচার করে এই দৈনিক পত্রিকাটি এর আগেও তার দলের বিরুদ্ধে ‘ষড়যন্ত্র’ করেছে।

বৃহস্পতিবার এক আলোচনাসভায় হানিফ বলেন, “নিউজটা যে মিথ্যা খবর ছিল, সেটা তারা বুঝতে পেরে সরিয়ে ফেলেছেন। নিউজটি সরিয়ে তারাই প্রমাণ করেছে নিউজটা ষড়যন্ত্রমূলক ছিল। তার কোনো সত্যতা ছিল না।

“নিউজ সরালেও সারাদেশ প্রচার হয়ে গেছে। বিএনপি থেকে অনেকে এই নিউজকে কোট করতেছেন। এই মিথ্যা খবরের দায়ভার প্রথম আলোকেই গ্রহণ করতে হবে।”

প্রথম আলো “এর আগেও বহুবার আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে” বলে অভিযোগ করেন হানিফ।

গত ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে প্রথম আলোর একটি প্রতিবেদন নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। এর জেরে বুধবার ভোররাতে সংবাদের প্রতিবেদক শামসুজ্জামান শামসকে সাভারের বাসা থেকে সিআইডি পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।

এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার মধ্যেই বৃহস্পতিবার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের এক মামলায় তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। সেই মামলায় প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানকেও আসামি করা হয়েছে।

হানিফ বলেন, “আজকে আইন নিয়ম অনুযায়ী চলুক, সেটাই আমরা চাই। এই নিউজকে কেন্দ্র করে প্রশাসন যখন ব্যবস্থা নিচ্ছেন, তখন মির্জা ফখরুল সাহেব বক্তব্য দিচ্ছেন। তিনি বলছেন, ‘এতে অসুবিধা কী? আমার তো বোধগম্য হয় না।’ মির্জা ফখরুলের বোধগম্যতার মধ্যে বাংলাদেশের স্বাধীনতা নেই।”

স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোট ১৪ দলীয় জোট ঢাকায় ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।

এতে সভাপতির বক্তব্যে জোটের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু বলেন, “আমরা ১৪ দল বিগত সময়ে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষে এবং বঙ্গবন্ধুর কর্তৃক রচিত সংবিধান পক্ষে কাজ করে আসছি। আজকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অবিচলভাবে জাতীয় চার মূলনীতির ভিত্তিতে আমরা এগিয়ে যাবে।“

যারা এই সংবিধান নিয়ে কথা বলে, তাদের ‘জাতীয় শত্রু’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, যারা দেশের অস্তিত্ব নিয়ে কথা বলে ‘সেই’ আইনে কেন তাদের গ্রেপ্তার করা হয় না? কেন তাদের সেই আইনে শাস্তি দেওয়া হয় না? এটাই আজকে আমাদের জিজ্ঞাসা। সেই আইন যথাযথ প্রয়োগ করে জনগণের সামনে স্বাধীনতার বিরোধীদের শাস্তি দেওয়া হোক।”

ইতিহাস টেনে আওয়ামী লীগের এই প্রবীণ নেতা বলেন, “বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর কে ক্ষমতা এল… খন্দকার মোস্তাক- আওয়ামী লীগ নেতা। অর্থাৎ একটা ধারণা দেওয়া হল আওয়ামী লীগপন্থিরাই ক্ষমতায় আছে।

“আড়াই মাস পর ক্ষমতা এল জিয়াউর রহমান। পরিচয় কী? মুক্তিযোদ্ধা। কর্মকাণ্ড কী? কর্মকাণ্ড হচ্ছে অমুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মূল্যবোধকে হত্যা করে এই দেশে পাকিস্তানি রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করা। সেই লক্ষ্যে সেদিন ১৫ অগাস্ট সংঘটিত করে এদেরকে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।”

বিএনপি কেন নির্বাচনে বিরুদ্ধে, তা স্মরণ করিয়ে দিয়ে এই আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, “সরকার ছিল কে? ফখরুদ্দীনের পরিচয় কী ছিল? জিয়াউর রহমান কর্তৃক নিয়োজিত বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিল কে? জেনারেল মতিন। পরিচয় কী? খালেদা জিয়া সরকারের দুর্নীতি কমিশনের চেয়ারম্যান। মঈন উদ্দিন কে? ছয়জনকে বাদ দিয়ে খালেদা জিয়া যাকে সেনাবাহিনীর প্রধান করেছিল। সেদিন যে লোকগুলোকে নিয়ে সরকার গঠন করা হয়েছে, সেগুলো ছিল বিএনপিপন্থি সরকার।”

সভায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সভাপতি হাসানুল হক ইনু, গণতান্ত্রিক পার্টির নেতা শাহাদাৎ হোসেন, গণআজাদী লীগের সভাপতি এসকে সিকদার, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল- বাসদের নেতা মো. রেজাউল রশিদ খান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির বক্তব্য দেন।