‘উৎখাত-ষড়যন্ত্রের প্রধান আসামি হবেন খালেদা’

সরকারি কর্মকর্তাদের নিয়ে বিএনপির ‘ষড়যন্ত্র’ নতুন কিছু নয় মন্তব্য করে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেছেন, ‘সরকার উচ্ছেদের ষড়যন্ত্রে উসকানি’ দেওয়ার মামলায় খালেদা জিয়াই হবেন প্রধান আসামি।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Dec 2014, 10:08 AM
Updated : 5 Dec 2014, 12:43 PM

শুক্রবার এক আলোচনা অনুষ্ঠানে সুরঞ্জিত বলেন, খালেদা জিয়া ‘দলের প্রতি’ হতাশ হয়ে সিভিল বুরোক্রেসির ‘কিছু হতাশ’ লোকের সঙ্গে বৈঠক করেছেন- এটা নতুন কিছু নয়। উত্তরায় মাহমুদুর রহমানের নেতৃত্বে ২০০৬ সালেও ‘এমন বৈঠক’ হয়েছে। গণমাধ্যমকর্মীরা খবর পাওয়ার পর তারা ‘মুখ লুকিয়ে’ দৌড়ে পালিয়েছেন।

প্রশাসনের কাছে জনগণ নিরপেক্ষ আচরণ আশা করে উল্লেখ করে এই আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, “তাদেরকে তাদের কাজই করতে হবে। গভীর রাতে বৈধ সরকারকে উৎখাতে ষড়যন্ত্র করা তাদের কাজ নয়। এটি অপরাধ।

“এই অপরাধ কেবল তারাই করেননি। সরকার উচ্ছেদের ষড়যন্ত্রে উসকানি দেওয়ার অভিযোগে এই মামলায় প্রধান আসামি হবেন খালেদা জিয়াই।”

ফাইল ছবি

সুরঞ্জিত বলেন, খালেদা জিয়া ও তার ছেলে তারেক রহমানের দুর্নীতি মামলার তারিখ এগিয়ে আসায় ‘আন্দোলনের মাঠ’ ছেড়ে বিএনপি ‘ষড়যন্ত্রের মাঠে’ যাচ্ছে।

“এদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। আজ শুক্রবার, কাল শনিবার। রোববারই আমি দেখতে চাই, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে একটি শক্তিশালী তদন্ত কমিটি করে তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে চাকরিবিধি অনুসারে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”

বৃহস্পতিবার রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে একটি বৈঠক চলার খবর কয়েকটি টেলিভিশন ও অনলাইন সংবাদপত্রে প্রচারিত ও প্রকাশিত হয়, যাতে প্রশাসনের কয়েকজন কর্মকর্তাও রয়েছেন বলে জানানো হয়।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পরে ওই খবরকে ‘ভিত্তিহীন ও বানোয়াট’  বললেও সরকারের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে বিষয়টি তদন্ত করে দেখার কথা বলা হয়েছে। 

সুরঞ্জিত বলেন, “কেউ প্রশ্ন করতে পারে, অফিসের কর্মঘণ্টার বাইরে সরকারি কর্মকর্তারা রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন না, এমন কোনো আইন আছে নাকি।”

নিজের প্রশ্নে সুরঞ্জিত নিজেই উত্তর দেন, “গোপন বৈঠক করার বিষয়টি একেবারেই ভিন্ন, যেখানে মিডিয়া প্রবেশ করতে পারে না। এদের বিরুদ্ধে প্রজাতন্ত্রের সার্ভিস রুল অনুসারে ব্যবস্থা নিতে হবে। গোয়েন্দা বাহিনী কি করছে?

দেশের নাগরিক হিসাবে রাজনীতি করতে চাইলে সেই অধিকার সবার আছে। কিন্তু সরকারি পদে থেকে তা করলে চাকরিবিধির লঙ্ঘন হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থানের ‘জনতার মঞ্চের’ কথাও স্মরণ করেন সুরঞ্জিত।

তিনি বলেন, “যখন সরকার অবৈধ হয়ে যায়, তখনকার সচিবরা জনতার মঞ্চে এসে সভা করেছিলেন, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের তৎকালীন রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করেছিলেন। অভ্যুত্থান করা আর ষড়যন্ত্র করা এক জিনিস নয়।

“যদি ষড়যন্ত্র অভ্যুত্থানে পরিণত হয়ে যায়, যদি স্বার্থকতা পায়, তাইলে সেটা অভ্যুত্থান। আর নাইলে ষড়যন্ত্র।”

বঙ্গবন্ধু একাডেমী সমকালীন রাজনীতি বিষয়ে রাজধানীর মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে এই আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।