হারুনকে সংসদে ‘বাধা দেবেন’ রাঙ্গাঁ

বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদের বক্তব্যে ‘বাধা সৃষ্টির’ হুমকি দিয়েছেন বিরোধী দলীয় প্রধান হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গাঁ।

সংসদ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 June 2022, 04:30 PM
Updated : 29 June 2022, 04:30 PM

বুধবার সংসদের বৈঠকে অর্থ বিলের ওপর আলোচনার সময় স্পিকারের উদ্দেশে রাঙ্গাঁ বলেন, হারুন যখন কথা বলবেন, তাকে তিনি বলতে দেবেন না।

এর আগে গত জানুয়ারিতে সংসদের আরেক বৈঠকেও বিএনপির হারুনের বক্তব্যে নাখোশ হয়ে রাঙ্গাঁ হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, ‘সংসদের লবিতে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে’ সেজন্য হারুনই দায়ী থাকবেন না।

বিএনপির হারুন বুধবার স্পিকারের উদ্দেশে বলেন, “সরকারি দলের সদস্যদের অনির্ধারিত বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ দিয়েছেন। কিন্তু আমাদেরকে সময় বাড়িয়ে দিতে আপনি ডিফেন্সিভ থাকেন। বাজেটের ওপর মাসব্যাপী এই আলোচনায় বাজেট নিয়ে খুবই কম কথা হয়েছে। পুরো কথা হয়েছে পদ্মা সেতু নিয়ে।”

স্পিকারের বিরুদ্ধে ‘সময় কম দেওয়ার’ অভিযোগ তুলে হারুন বলেন, “বিশেষ অধিকারের নোটিসে সময় বেঁধে দিয়েছেন দুই মিনিট। এটা অতীতে হয়নি।”

বিএনপির এই এমপি বলেন, “আমরা মাত্র কয়েকজন সদস্য। আমরা কথা বলতে গেলে এত যদি আপত্তি ও বাধা থাকে, তাহলে বলেন- আমরা সংসদ ছেড়ে চলে যাই। সংসদে কথা বলার পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে আপনাকে (স্পিকার)।”

ফাইল ছবি

তার এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে স্পিকার বলেন, “এক মিনিট কেন, আপনাকে চার মিনিট সময় দেওয়া হয়েছে। কথা বলার সময় তো খেয়াল থাকে না। আপনাদের প্রাপ্য সময়ের তুলনায় বেশি সুযোগ দেওয়ার চেষ্টা করি। আপনি যে কথাগুলো বলেছেন- সেটা ভেবে বলা প্রয়োজন।”

পরে রাঙ্গাঁ তার বক্তব্যে স্পিকারকে ‘সুন্দরভাবে’ সংসদ পরিচালনার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “একজন বিরোধী দলীয় সদস্য আপনাকে কটাক্ষ করে বক্তব্য দিয়েছেন। অন্য কোনো স্পিকার হলে তার মাইক বন্ধ করে দিতেন। আমি এটা ২০০১ সালে দেখেছি। পদ্মা সেতু নিয়ে কেন তাদের এত গাত্রদাহ।”

জাতীয় পার্টির এই সংসদ সদস্য কিছুটা হাস্যচ্ছলে বলেন, “আমরা বিরোধী দল থেকে চাইব, সরকারকে উৎখাত করতে। কিন্তু আল্লাহ না চাইলে কীভাবে উৎখাত করব? প্রধানমন্ত্রী এখন দেশের সবচাইতে জনপ্রিয় ব্যক্তি। পদ্মা সেতুতে এমন জনপ্রিয়তা বেড়েছে, যাতে বিএনপির মত জাতীয় পার্টিরও থালা নিয়ে রাস্তায় নামতে হবে।”

তখন মাইক ছাড়াই হারুন টিপ্পনি কেটে বলেন, “এখন সময় বাড়িয়ে দেন।”

এর জবাবে রাঙ্গাঁ বলেন, “আপনাকে কি চিফ হুইপের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে?”

তিনি স্পিকারের উদ্দেশে বলেন, “আমি দুঃখ প্রকাশ করে বলছি- উনি যখন কথা বলবেন আমি কিন্তু কথা বলব, ওনাকে কথা বলতে দেব না।”

পরে বিলের সংশোধনী নিয়ে আলোচনায় অংশ নিয়ে বিএনপির হারুন বলেন, “এখানে অনেক বিষয় এসেছে। কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এমন দলকে বিরোধী দলে এনে বসেছেন, আমি জীবনেও এ ধরনের আলোচনা শুনি নাই। যে ধরনের হুমকি-ধামকি দেওয়া হচ্ছে। আমি সত্যি আতঙ্কিত।

“এই সংসদে সাড়ে তিনশর মধ্যে আমরা মাত্র কয়েকজন। এত যদি হুমকি-ধামকি দেন, আমরা তো চ্যাপ্টা নয়, ভর্তা হয়ে যাবে। এই পরিস্থিতি থেকে আমাদের সুরক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। বাইরের পারসেপশন, এটা এককেন্দ্রিক সংসদ হয়ে গেছে। এভাবে পার্লামেন্ট হয় না।”