বৃহস্পতিবার দলীয় এক অনুষ্ঠানে সংসদের বিরোধী দলীয় উপনেতা কাদের বলেন, “এমনিতেই দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতির কারণে মানুষের জীবন অতিষ্ঠ। তার উপর তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় মানুষের জীবন আরও কঠিন হয়ে পড়বে।”
তেলের দাম বৃদ্ধির প্রভাবে পরিবহন ভাড়া বেড়ে পণ্যমূল্য বেড়ে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
কাদের বলেন, “সরকার ব্যবসায়িক দৃষ্টি দিয়ে দেশ পরিচালনা করলে মানুষের কষ্ট আরও বেড়ে যাবে।”
ঢাকার বনানীতে দলীয় চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে সাবেক অতিরিক্ত সচিব নূরুন্নবী মৃধার জাতীয় পার্টিতে যোগদান উপলক্ষে এই সভা আয়োজন করা হয়।
বিরোধীদলীয় উপনেতা কাদের বলেন, “আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বেড়েছে এই অজুহাতে তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু, করোনাকালে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম অনেক কম ছিলো, তখন তো তেলের দাম কমানো হয়নি। তখন যে পরিমাণ টাকা লাভ হয়েছে সেই টাকা কোথায় গেল?”
তিনি বলেন, “জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ রাষ্ট্র ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়ার পর থেকে দুটি দল দেশের মানুষের সঙ্গে বৈষম্য শুরু করেছে। যত যোগ্যতা সম্পন্নই হোক না কেন, ঘুষ আর দলীয় আনুগত্য না থাকলে চাকরি হয় না। দলীয় পরিচয় না থাকলে ব্যবসা করতে পারে না দেশের মানুষ। দেশের মানুষের সাথে বৈষম্য করা হচ্ছে স্বাধীনতার পরিপন্থি।
“অনেকেই আঁতেল সাজতে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে স্বৈরাচার বলেন। কিন্তু, কেন স্বৈরাচার বলেন, তার জবাব দিতে পারেন না তারা। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বাইরে জাতীয় পার্টি হচ্ছে সম্ভাবনাময় রাজনৈতিক শক্তি। তাই বিএনপি ও আওয়ামী লীগ বারবার জাতীয় পার্টিকে ধ্বংস করতে অপচেষ্টা করেও সফল হয়নি। বিএনপির আপসহীন নেত্রী মুচলেকা দিয়ে চিকিৎসার জন্য জেলখানার বাইরে আছেন। চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে বারবার সরকারের কাছে আবেদন করছেন।
“কিন্তু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ জেলখানায় থাকা অবস্থায় ভয়াবহ জন্ডিসে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তখন চিকিৎসকরা জেলখানার বাইরে পল্লীবন্ধুর চিকিৎসার ব্যাপারে পরামর্শ দিয়েছিলেন। বর্তমান প্রধানমন্ত্রীও তখন তার চিকিৎসার জন্য দলীয়ভাবে স্টেটমেন্ট দিয়েছিলেন। কিন্তু তখন খালেদা জিয়ার সরকার চিকিৎসার জন্য এরশাদকে জেলখানার বাইরে চিকিৎসা নেওয়ার অনুমতি দেয়নি।”
তিনি বলেন, “১৯৯১ সালের পর জাতীয় পার্টি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে অন্যায়ভাবে হামলা-মামলা দিয়ে বিএনপি যে অন্যায় করেছিলো, বর্তমানে তার প্রায়শ্চিত্ত করছে বিএনপি। বিএনপির আমলে জাতীয় পার্টির ওপর যে অত্যাচার করা হয়েছিলো, বিএনপি তার কিছুটা স্বাদ পাচ্ছে এখন।”
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সাহিদুর রহমান টেপা, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, জাপা চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা এমএ তালহা।