বিএনপিকে চাঙা করতে ‘সহযোগী সংগঠন গোছানোর তাগাদা’

জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে রাজপথের আন্দোলনে নামতে বিএনপিকে চাঙা করার জন্য দলের সহযোগী সংগঠনগুলোকে ‘গোছানোর’ তাগাদা এসেছে সদ্য সমাপ্ত দলটির তিন দিনের ধারাবাহিক বৈঠকে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Sept 2021, 01:48 PM
Updated : 17 Sept 2021, 01:48 PM

রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে রুদ্ধদ্বার কক্ষে অবস্থানরত নেতাদের সঙ্গে মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বৈঠকে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

বৈঠকে অংশ নেওয়া বিভিন্ন স্তরের একাধিক নেতার সঙ্গে আলাপ করে জানা  যায়, তিন দিনের বৈঠকে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্র দলের মতো লড়াইয়ের সামনের সারিতে থাকা সহযোগী সংগঠনগুলোর ‘পূর্ণাঙ্গ কমিটি দ্রুত গঠনের’ বৈঠকে তাগাদা আসে।

বিএনপির সহযোগী সংগঠন ১১টি। এর মধ্যে যুব দল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দল, মুক্তিযোদ্ধা দল, উলামা দল, তাঁতী দল, মৎস্যজীবী দলের কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে।

উলামা দল, তাঁতী দল ও মৎস্যজীবী দল ভেঙে আহ্বায়ক কমিটি করে যে সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল তারও মেয়াদ চলে গেছে।

শ্রমিক দলের কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ। ছাত্র দলের কমিটির মেয়াদ শেষ হচ্ছে ১৮ সেপ্টেম্বর। তারা তাদের নির্ধারিত মেয়াদেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি দিতে পারেনি।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দলের কর্মকৌশল, সংগঠনের অবস্থা পর্যালোচনা করতে এ বৈঠক ডাকে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তিন দিনের ধারাবাহিক বৈঠকে দেশের সামগ্রিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি, কী করণীয় এবং আমাদের সংগঠনের অবস্থা কেমন ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আমরা কথা বলেছি। আমাদের নেতা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাহেব এসব বৈঠকে সভাপতিত্ব করেছেন এবং নেতাদের মতামত শুনেছেন।

“আমরা আরও কিছু সভা করব। বিশেষ করে দলের নির্বাহী কমিটি সদস্যবৃন্দ ও জেলা নেতাদের নিয়েও সভা করব, তাদের মতামত শুনব। শনিবার আমাদের স্থায়ী কমিটির বৈঠক রয়েছে। সেখানেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।”

তিনদিনের বৈঠক থেকে কী পাওয়া গেল- জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “এখনই বলার সময়ে আসেনি।”

তবে বৈঠকে অংশ নেওয়া একাধিক নেতার সাথে আলাপ করে জানা গেছে, দলের সাংগঠনিক অবস্থা তুলে ধরা হয়েছে বৈঠকে। বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের কমিটি দীর্ঘদিন ধরে পূর্ণাঙ্গ হচ্ছে না, কমিটিতে স্থান পেতে নানা তদ্বির-লবিং করতে হয়, মফস্বল থেকে ঢাকায় এসে কমিটির জন্য তদ্বির করতে হয়- ইত্যাদি বিষয়গুলোও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নজরে এনেছেন নেতারা।

মধ্যম সারির কয়েকজন নেতা বলেন, দল ও সহযোগী সংগঠনের কঠোর শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করা না গেলে রাস্তায় নেমে কোনো লাভ হবে না। আগে নিজেদের আন্দোলনের জন্য সাংগঠনিকভাবে প্রস্তুত হতে হবে।

প্রথম দিন মঙ্গলবার বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য, দ্বিতীয় দিন বুধবার যুগ্ম মহাসচিব, সাংগঠনিক সম্পাদকসহ সম্পাদক মণ্ডলী এবং তৃতীয় দিন সহযোগী সংগঠনের নেতারা ছিলেন।

তিন দিনের ধারাবাহিক বৈঠকে মোট ২৮৬ জন নেতা উপস্থিত ছিলেন, যাদের মধ্যে ১১৮ জন বক্তব্য রেখেছেন বলে জানান দলের কেন্দ্রীয় দপ্তরের দায়িত্বে থাকার সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স।

২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাবন্দি হওয়ার পরে তারেক রহমান দলের হাল ধরার পর একটি দলের বড় ধরনের সভা।

২০১৬ সালের ১৯ মার্চ ষষ্ঠ কাউন্সিলের পর খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে গঠিত নির্বাহী কমিটির বর্তমান সংখ্যা ৫০২ সদস্যের।

মির্জা ফখরুল বলেন, “দলের নেতাদের সাথে বৈঠকের পর আমরা পেশাজীবী সংগঠনগুলোর সাথে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে সংলাপ করব।”

২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাবন্দি হওয়ার পরে কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে এটি তারেক রহমানের প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠক।