দায়িত্বশীল সরকার প্রতারণা করতে পারে না: ফখরুল

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে সরকার জাতিকে মিথ্যা তথ্য দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 August 2021, 08:39 AM
Updated : 2 August 2021, 08:39 AM

সোমবার সকালে এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “এখন পর্যন্ত সরকারের যে হিসাব তা এতটুকুও সঠিক নয়। তাদের হিসাবে দেখা যাচ্ছে যে, ১২ লাখ ৬৪ হাজার ৩২৮ জন গতকাল পর্যন্ত শনাক্ত হয়েছেন, এটা একদম ডাহা মিথ্যা কথা। মানুষজন টেস্টই তো করতে পারছেন না। তারা উপজেলা পর্যায়ে টেস্ট দেন না। জেলা পর্যায়ে টেস্ট দেয়, সেখানে গিয়েও মানুষ টেস্ট করতে পারে না। ঢাকায় যে পরীক্ষার কেন্দ্রগুলো আছে সেখানেও দুই ঘণ্টা টেস্ট করা হয় বাকী আর হয় না। এখানেই কিন্তু স্ক্রিন আউট করে দিচ্ছে।”

 “তারা বলছে, আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ২০ হাজার ৯১৪ জন মারা গেছে। আমরা চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি, পত্রিকাতেই আছে বাড়িতে মৃত্যুর সংখ্যা হচ্ছে ৬৫ ভাগ। এই ২০ হাজার ৯১৪ জনের সঙ্গে ৬৫ ভাগ যোগ করেন। তাহলে এই সংখ্যা এক লাখের নিচে কখনই না।”

ফখরুল বলেন, “আজকে দুর্ভাগ্যজনকভাবে সরকার জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে, জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করছে। এটা কোনো দায়িত্বশীল সরকার করতে পারে না।”

বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আজকে যদি রাজনৈতিক দলগুলো সম্পৃক্ত হতো, এনজিওগুলো সম্পৃক্ত হতো, স্বেচ্ছাসেবক সংগঠনগুলো সম্পৃক্ত হতে পারত, তাহলে দেখা যেত, পরিস্থিতি এত মারাত্মক আকার ধারণ করত না।”

“এই সরকার তাদের বিত্তের জন্য, টিকে থাকার জন্য শুধুমাত্র আমলাদের ওপর নির্ভর করছে এবং দেখা যাচ্ছে যে, সেই আমলাদের দিয়েই তারা করোনা মোকাবেলার চেষ্টা করছে।”

তিনি বলেন, “করোনা চিকিৎসার জন্য নির্ধারিত কয়েকটি হাসপাতালে আইসিইউ বেড না থাকলেও তারা (স্বাস্থ্য অধিদপ্তর) তথ্য দিচ্ছে যে আইসিইউ শয্যা আছে। যেমন ভোলা, কুষ্টিয়া, বাগেরহাট, পটুয়াখালী, জামালপুর- স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে এই পাঁচ জেলায় করোনা রোগীদের জন্য ২০টি আইসিইউ রয়েছে। কিন্তু আসলে এগুলোতে কোনো আইসিইউ নাই। মিথ্যা তথ্য দিচ্ছে।”

ফখরুল বলেন, “কঠোর লকডাউনে কয়দিন পরে গণপরিবহন ছেড়ে দিল, ঈদ আসলে ছেড়ে দিল। তারপরে শ্রমিকদের ছুটি দিল, তারা ঈদের আগে ছুটিতে চলে গেল। এভাবে তারা সংক্রমণ গ্রামের দিকে আরও বেশি করে পাঠিয়ে দিল।

“আপনারা দেখেছেন, ঢাকা থেকে গাদাগাদি করে হাজার হাজার মানুষ বাড়ি গেল। এখন হঠাৎ করেই এক তারিখ থেকে কলকারখানা সরকার খুলে দিল। যানবাহন খুললো না। ফলে মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছে। পায়ে হেঁটে, রিকশায়, যে যেভাবে পারে কাজে যোগ দিতে ঢাকায় এসেছে। এরপরে তাদের বোধদয় হয়েছে যে, রাত্রিতে বলল, গতকাল দুপুর ১২টা পর্যন্ত গণপরিবহন খোলা থাকবে।”

তিনি বলেন, “এটা তাদের সিদ্ধান্তহীনতা নয়, এটা পরিকল্পিত। তারা তো বলেই যে, বাংলাদেশে ৫ লক্ষ লোক ১০ লক্ষ লোক মরে গেলে কি হবে। এতো দেশের মানুষ। এই হচ্ছে এই সরকার।“

নেতা-কর্মীদের জনগণের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল।

লালমনিরহাট বিএনপির উদ্যোগে জেলার কোভিড-১৯ হেল্প সেন্টারের উদ্বোধন এবং করোনাভাইরাস সংক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত দিতে এই ভার্চুয়াল অনুষ্ঠান হয়।

জেলা সভাপতি ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান বাবলার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম ও সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল খালেক বক্তব্য রাখেন।