করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে বিএনপির ৫ দাবি

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে চিকিৎসা ব্যবস্থা জোরদার করার পাশাপাশি ‘জাতীয় আপৎকালীন পরামর্শক কমিটি’ গঠনসহ পাঁচটি পদক্ষেপ বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছে বিএনপি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 July 2021, 12:14 PM
Updated : 8 July 2021, 12:14 PM

বৃহস্পতিবার দুপুরে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই দাবিগুলো তুলে ধরেন।

দরিদ্র মানুষকে ঘরে রাখার জন্য তাদের প্রত্যেককে নগদ ১৫ হাজার টাকা এবং তাদের খাদ্য পৌঁছে দেওয়ার কথা রয়েছে এসব দাবির মধ্যে। এছাড়া মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি মানাতে এবং মাস্ক ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করার দাবি জানানো হয়েছে।

অন্তত ৮০ শতাংশ মানুষকে দ্রুত টিকা দেওয়ার দাবি জানিয়ে সেখানে বলা হয়েছে, একটি সমন্বিত ও সুনির্দিষ্ট রোড-ম্যাপ জাতির সামনে উপস্থাপন করে তা বাস্তবায়ন করতে হবে। অবিলম্বে দেশে টিকা উৎপাদনের কার্য্কর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

বিএনপি বলছে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হবে। এজন্য হাসপাতালে অক্সিজেন সরবরাহ, আইসিইউ ও কোভিড রোগীর বেড বাড়ানোসহ চিকিৎসা সামগ্রী ও পর্যাপ্ত চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ দিতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ‘এখনি’ দেশে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, সকল রাজনৈতিক দল, এনজিও এবং সামাজিক সংগঠনের সমন্বয়ে একটি জাতীয় আপৎকালীন পরামর্শক কমিটি গঠন করতে হবে।

এসব দাবি জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, “এই পাঁচটি বিষয় করোনা নিয়ন্ত্রণে প্রধান টার্গেট হিসেবে নির্ধারণ করতে হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে, করোনা মহামারীর বিরুদ্ধে যে লড়াই সেটা বস্তুত একটি দীর্ঘস্থায়ী লড়াই।”

দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে মানবিক সহায়তা দিতে জিডিপির ৬ থেকে ৭ শতাংশ বরাদ্দ দেওয়া ‘সম্ভব’ মন্তব্য করের এ বিষয়ে সরকারের সদিচ্ছা ও আন্তরিকতা দাবি করেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, “এই  মুহূর্তে ১০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করুন, যাতে করে এই শ্রেণির মানুষের কাছে খাদ্য ও টাকা পৌঁছানো যায়। এটাই একমাত্র পথ এই লকডাউন কার্য্কর করার।”

বিএনপির পক্ষ থেকে প্রথম থেকেই জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে বৈশ্বিক মহামারী মোকাবেলার আহ্বান জানিয়ে বিকল্প প্রণোদনা ও বাজেট বরাদ্দের দাবি জানানো হলেও সরকার তাতে ‘কান দেয়নি’ বলে অভিযোগ করেন দলের মহাসচিব।

তিনি বলেন, “সম্প্রতি সংসদে দাঁড়িয়ে দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও উদ্দেশ্যমূলক মিথ্যাচার যুদ্ধকালীন সময়ে একজন অদক্ষ সেনাপতির আচরণের সমতুল্য।”

মোবাইল ফোনে জনপ্রতি আড়াই হাজার টাকা সহায়তা দেওয়ার ক্ষেত্রে ‘দুর্নীতি’ আর হতদরিদ্রের জন্য বরাদ্দ করা ত্রাণ সামগ্রী ‘চুরি হয়েছে’ দাবি করে ফখরুল বলেন, “করোনা সরকার দলীয় লোকজনের জন্য আর্শীবাদ হয়ে এসেছে।”

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, “টিকা প্রদানকে গুরুত্ব দিতে হবে। সারা পৃথিবীতে প্রমাণিত হয়েছে, যেসব দেশ ৭০/৮০ শতাংশ মানুষকে টিকা দিতে পেরেছে তারাই করোনা নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছে।”

বিএনপির ‘জাতীয় করোনা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ কমিটির’ আহ্বায়ক এবং দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুক বলেন, “প্রতিটি জেলায় আমাদের দলের অফিসে হেলথ সেন্টার করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেখানে অক্সিজেন, প্রয়োজনীয় ওষুধ, স্বাস্থ্য সামগ্রী থাকবে।

“অলরেডি এই কাজ বেশ কয়েকটি জেলায় শুরু হয়ে গেছে। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রতিটি জেলার অফিসে এই হেলথ সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা হবে।”

ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ইসমাইল জবিহউল্লাহ বক্তব্য দেন।