বৃহস্পতিবার সকালে অনুদানের চেক গ্রহণ অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে অংশ নিয়ে একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
যারা অনুদান দিয়েছেন, তাদেরকে ধন্যবাদ জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, “অন্তত এইটুকু বলতে পারি, আওয়ামী লীগ যতদিন সরকারে আছে ততদিন অন্তত ব্যবসা-বাণিজ্যে কারো কোনো সমস্যা হয় না। সবাই খুব সুন্দরভাবে ব্যবসা-বাণিজ্য করে দেশকে আরো এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন।”
সংবিধানে জাতির পিতা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক নীতিমালায় সংবিধানের ১৩ অনুচ্ছেদে সরকারি খাতের সাথে সাথে বেসরকারি খাত এবং কো-অপারেটিভ এই তিনটাকেই সমান মর্যাদা দিয়ে গেছেন মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, “অর্থনীতিকে গতিশীল করতে হলে আমি মনে করি এটিই হচ্ছে সব থেকে উপযুক্ত একটা নীতিমালা, যা আমাদের দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। বাংলাদেশ ইনশাল্লাহ উন্নত, সমৃদ্ধ সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে উঠবে।”
তিনি বলেন, উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে মর্যাদা নিয়ে টিকে থাকতে হবে। দারিদ্র্যমুক্ত দেশ গড়তে তৃণমূলের মানুষকে আর্থিকভাবে স্বচ্ছল করে তুলতে হবে।
“যদি বাংলাদেশকে দারিদ্র্যমুক্ত দেশ হিসেবে গড়তে হয়, তাহলে তৃণমূলে আগে যেতে হবে। একেবারে তৃণমূলের সাধারণ মানুষ তাদের আর্থিক স্বচ্ছলতা আনতে হবে।”
“তাহলে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সব কিছুই আরও সম্প্রসারিত হবে। তো সেই লক্ষ্য নিয়ে আমরা দারিদ্র্য বিমোচন থেকে শুরু করে উন্নত জাতি হিসেবে আমরা দেশকে গড়তে চাই।”
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, তার দলের অর্থনৈতিক নীতিমালার মূল ভিত্তিটাই হচ্ছে তৃণমূল মানুষ, তাদের আর্থিক স্বচ্ছলতা আগে নিয়ে আসা, তাদেরকে দারিদ্র্যের হাত থেকে মুক্ত করা, তাদের ক্রয়ক্ষমতা বাড়ানো, তাদের স্বচ্ছলতা নিয়ে আসা।
“জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পর পর গুচ্ছগ্রাম প্রতিষ্ঠা করে ভূমিহীন মানুষের মাঝে খাসজমি বিতরণ করেন ও গৃহহীন, ভূমিহীন মানুষদেরকে ঘর করে দেওয়া শুরু করেন। পরবর্তীকালে আওয়ামী লীগ সরকারে এসে জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে গুচ্ছগ্রামের পাশাপাশি আশ্রয়ন প্রকল্প নামে আরেকটি প্রকল্প হাতে নেয়। সেখানে ব্যারাক হাউস নির্মাণ করে ভূমিহীনদের ঘর করে দিতে শুরু করে এবং আশ্রয়ণের আরেকটি প্রকল্পের আওতায় সবাইকে আধাপাকা ঘর তৈরি করে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।”
বাংলাদেশে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, “আজকে স্বাধীনতার ৫০ বছর। জাতির পিতা তার সারাটা জীবনসংগ্রাম করে এই দেশ স্বাধীন করে দিয়ে গেছেন। কাজেই সেই বাংলাদেশে কোনো মানুষ ঠিকানাবিহীন থাকবে, গৃহহারা থাকবে এটা হতে পারে না। সেজন্যই আমাদের এই উদ্যোগ।”
দেশের মানুষের কল্যাণে সরকারের নেওয়া নানা উদ্যোগের কথা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “তবে করোনা মহামারী আমাদের উপর যেই আঘাতটা হেনেছে এই ছোবলের হাত থেকেও দেশকে বাঁচাতে হবে। দেশের মানুষকে বাঁচাতে হবে। সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।”
বিভিন্ন সরকারি/বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি ‘হাউজ কনস্ট্রাকশন ফান্ড বাই প্রাইভেট ফাইনান্স’ ও করোনা সহায়তা তহবিলে অনুদান দেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, গৃহহীন ও ভূমিহীন মানুষকে ঘর করে দিতে সরকার যেমন প্রকল্প হাতে নিয়েছে। তার পাশাপাশি করোনাভাইরাস মহামারী থেকে সেরে ওঠেও অসুস্থ হয়ে পড়া বা নানা জটিলতায় ভুগতে থাকা মানুষদের জন্য এবং দরিদ্রদের জন্য করোনাভাইরাসের টিকা কেনার জন্য করোনা সহায়তা তহবিল গঠন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্ট থেকে ৫ কোটি টাকা দিয়ে এই করোনা সহায়তা তহবিলটা তৈরি করা হয়েছে অন্যদিকে কোনো মানুষ যেন গৃহহীন না থাকে সেই পদক্ষেপটা নেওয়ার জন্য গৃহনির্মাণ তহবিল করা হয়েছে সেখানেও একই ট্রাস্ট থেকে ৫ কোটি টাকা দিয়ে যাত্রা শুরু করা হয়েছে।