অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের ‘ভয় দেখানো হল: ফখরুল

সরকারি ‘নথি চুরির চেষ্টার’ অভিযোগে সাংবাদিক গ্রেপ্তারের সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘দুর্নীতি আড়াল করতেই’ সরকার এমন ভূমিকা নিয়েছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 May 2021, 08:25 AM
Updated : 18 May 2021, 08:25 AM

প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামকে সচিবালয়ে দীর্ঘ সময় আটক রাখা এবং পরে গ্রেপ্তার দেখানোর নিন্দা জানিয়ে মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন।

ফখরুল বলেন, “এই ন্যক্কারজনক ঘটনায় প্রমাণ হয় যে, দেশে এখন আর স্বাধীন সাংবাদিকতা এবং সঠিক তথ্য পাওয়ার কোনো সুযোগ অবশিষ্ট নেই। এই ঘটনা তুচ্ছ বা বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। কর্তৃত্ববাদী শাসনে সাংবাদিক দল, ভিন্ন মত (দমন) এবং সত্য প্রকাশ ও সরকারের সীমাহীন দুর্নীতির প্রচারে সরকারের প্রতিবন্ধকতার একটি উদাহরণ মাত্র।”

সরকার আতঙ্ক ছড়িয়ে দুর্নীতি ও দুঃশাসনকে ‘আড়াল করতে চাইছে’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, “সাহসী ও অনুসন্ধানী সাংবাদিকরা যাতে আর সরকারের দুর্নীতি, লুটপাট, অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতার সংবাদ প্রকাশ করতে না পারে- এই ঘটনার মাধ্যমে তাদের ভয় দেখানো হলো।”

সাংবাদিকদের ‘দলন-নিপীড়ন’ বন্ধ করে স্বাধীন সাংবাদিকতা ও সঠিক তথ্য পাওয়ার অধিকারে ‘সরকারি হস্তক্ষেপ’ বন্ধের দাবি জানান তিনি।

সরকারি নথি ‘চুরির চেষ্টার’ অভিযোগে সোমবার সচিবালয়ে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের এক কর্মকর্তার কক্ষে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে প্রায় সাড়ে ৫ ঘণ্টা আটকে রাখা হয়।

পরে রাতে তাকে শাহবাগ থানায় সোপর্দ করা হয়, অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট ও দণ্ডিবিধির কয়েকটি ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলা করেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের একজন কর্মকর্তা।

রোজিনা ইসলাম ওই অফিস থেকে কোনো নথি সরানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। আর তার সহকর্মীরা বলেছেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে প্রতিবেদন করায় তিনি ‘আক্রোশের শিকার’ হয়ে থাকতে পারেন।

একজন সাংবাদিকের সঙ্গে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করে বিএনপি মহাসচিব বিবৃতিতে বলেন, “তাকে একা পেয়ে মন্ত্রণালয়ের কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারী অন্যায়ভাবে দীর্ঘ ৬ ঘণ্টা আটক রেখে তার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালায়। একজন নারী সাংবাদিকের ওপর তাদের এহেন আচরণ লজ্জাজনক ও ক্ষমার অযোগ্য। এর দায় সরকার এড়াতে পারে না।”

 স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও মন্ত্রণালয়ের সচিব এ ঘটনা জানার পরও ঠেকানোর পদক্ষেপ না নিয়ে উল্টো সাংবাদিক রোজিনাকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ায় তাদের পদত্যাগ দাবি করেন ফখরুল।

রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারসহ তাকে ‘নির্যাতন’ করার ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবি জানানো হয় বিএনপির বিবৃতিতে।