বাবুনগরীর বক্তব্য ‘নিম্নমানের চতুরতা’: জাসদ

কর্মীদের গ্রেপ্তার বন্ধ করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে হেফাজতে ইসলামের আমির জুনাইদ বাবুনগরীর বক্তব্যকে ‘নিম্নমানের চতুরতা’ বলেছে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 April 2021, 12:48 PM
Updated : 23 April 2021, 12:48 PM

শুক্রবার জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, “হেফাজতের আমির বাবুনগরীর ‘লকডাউন তুলে নেয়ার বিনিময়ে সবাইকে সাথে নিয়ে জেলে যাব’ বক্তব্য অত্যন্ত নিম্মমানের চতুরতা, ধূর্ততা, ধড়িবাজি, চটকদারিতা, অসততা, মিথ্যাচার, ভণ্ডামি আর দ্বৈততার বহিঃপ্রকাশ।”

গত কয়েকদিনে হেফাজতের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বাবুনগরী।

তিনি বলেছেন, সরকার তালিকা দিলে তারা নিজেরাই কারাবরণ করবেন।

গত মাসের শেষ দিকে নরেন্দ্র মোদীর সফরে বিরোধিতায় ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চট্টগ্রামে হেফাজতের সহিংসতায় কয়েকজন নিহত হয়। ওই ঘটনার পর পুরনো বিভিন্ন মামলায় হেফাজতের বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতাকে সম্প্রতি গ্রেপ্তার করা হয়।

জাসদের বিবৃতিতে বলা হয়, বাবুনগরী লকডাউনকে এমনভাবে চিহ্নিত করেছেন যে, লকডাউন বাংলাদেশ সরকারের আবিষ্কার; সরকার লকডাউন দিয়েছে, দেশের সাধারণ মানুষকে কষ্ট দিতে, হেফাজতি নেতাদের গ্রেপ্তার করতে আর মুসলমানদের ইবাদত বন্ধ করতে।

এত বলা হয়, “লকডাউন নিয়ে বাবুনগরীর বক্তব্য জাজ্বল্যমান মিথ্যাচার ছাড়া আর কিছুই নয়। লকডাউন বাংলাদেশ সরকারের আবিষ্কার না। শুধু বাংলাদেশেই লকডাউন দেয়া হয়নি। ভয়াবহ বৈশ্বিক মহামারি করোনার সংক্রমণ বিস্তার রোধ করে মানুষের জীবন বাঁচাতে সৌদি আরব, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার সকল মুসলিম দেশ, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, পাকিস্তানসহ সারা দুনিয়ার দেশে দেশে দফায় দফায় লকডাউন হয়েছে।”

“লকডাউনে মসজিদুল হারামসহ মুসলিম দেশগুলিতে কখনও মসজিদ সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। কখনও পরিস্থিতি একটু নিয়ন্ত্রণে থাকলে বৈজ্ঞানিক স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে খোলা রাখা হয়েছে। লকডাউনে মুসলমানগণ ইবাদত-বন্দেগি, নামাজপড়া, রোজা রাখা, কোরান শরীফপড়া বন্ধ করেননি। লকডাউন ও স্বাস্থ্যবিধি মেনেই ঘরেই নিরবচ্ছিন্নভাবে ইবাদত করছেন।”

জাসদের বিবৃতিতে বলা হয়, “সুনির্দিষ্ট ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত আসামিকে গ্রেপ্তার করার সাথে লকডাউনকে মিলিয়ে দেয়াও বাবুনাগরির নিকৃষ্ট চতুরতা, চালাকিপনা, ধূর্ততা, ধড়িবাজি মার্কা কথা। লকডাউনে কি ফৌজদারি মামলায় সুনির্দিষ্টভাবে অভিযুক্ত আসামি গ্রেপ্তারে রাষ্ট্রীয় আইনে এমনকি ইসলামে কোনো বাধা আছে? বাবুনগরীর দেশের সাধারণ মানুষের দুঃখ-কষ্ট নিয়ে কথা বলা মায়াকান্না ও ভণ্ডামি ছাড়া কিছুই নয়।

“একই মুখে লকডাউন তুলে নেয়ার বিনিময়ে নিজ থেকে জেলে যাবার কথা বলে সেইমুখেই সুনির্দিষ্ট ফৌজিদারি মামলায় অভিযুক্ত হয়ে গ্রেফতারকৃত আসামিদের মামলা প্রত্যাহার ও মুক্তির দাবি করে বাবুনগরী নিজেই প্রমাণ দিয়েছে তার নিকৃষ্টতা, দ্বৈততা ও ভণ্ডামির।”